টেডি বিয়ার কীভাবে আদুরে খেলনা হলো, জানেন

টেডি বিয়ার
ছবি: সংগৃহীত

শৈশব-কৈশোরের সে নিবিড়তম বন্ধু। আনন্দ-বেদনার নির্বাক সহচর। প্রথম স্কুল, প্রথম ভালো লাগা, প্রথম প্রেম, প্রথম প্রত্যাখ্যানের হাহাকার—সবকিছুর খবর সে জানে। তুলতুলে নরম শরীরজুড়ে বন্ধুত্বের উষ্ণতা। কালো গভীর চোখে তার সহানুভূতির দৃষ্টি। সত্যিই, একটা দীর্ঘ সময়জুড়ে আমাদের জীবনে খেলনা ভালুক তথা টেডি বিয়ারের নিঃশর্ত সঙ্গদানের অবদান অস্বীকার করার জো নেই। সে প্রাণহীন, জড়; কিন্তু তার আছে যেন প্রাণের চেয়েও অধিকতর কিছু। প্রেমিকার মান ভাঙাতে কিংবা মন রাঙাতে টেডি বিয়ার দারুণ কার্যকর এক উপহার।

ভালুকের মতো ভয়াল প্রাণী কী করে আদুরে খেলনা হলো, অর্থাৎ বিয়ার কীভাবে টেডি বিয়ার হলো? এর পেছনে আছে এক মানবিক গল্প। যে গল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্টের (১৮৫৮-১৯১৯) নাম।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট
ছবি: লাইব্রেরি অব কংগ্রেস

১৯০২ সালের নভেম্বর মাসের একদিন থিওডর রুজভেল্ট ভালুক শিকারে গিয়েছিলেন। সারা দিনে যখন একটি ভালুকও শিকার করতে পারলেন না, তখন তাঁর সঙ্গীরা একটি বাচ্চা ভালুক ধরে আনল। সেটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রেসিডেন্টকে গুলি করতে বলল। কিন্তু বন্দী ও আহত ভালুক-শাবককে গুলি করতে তাঁর মন সায় দিল না। ব্যাপারটা তাঁর কাছে অমানবিক ও কাপুরুষোচিত মনে হলো। তিনি গুলি করলেন না। রুজভেল্টের মানবিকতায় তাঁর সঙ্গীরা মুগ্ধ হয়ে গেল। প্রেসিডেন্টের এই মহৎ হৃদয়ের গল্প উঠে এল গণমাধ্যমে। এই ঘটনা অবলম্বনে বিখ্যাত কার্টুনিস্ট ক্লিফোর্ড বেরিম্যানের (১৮৬৯-১৯৪৯) আঁকা কার্টুন ‘ড্রয়িং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ প্রকাশিত হলো ওয়াশিংটন পোস্টে। আর এই কার্টুনের অনুপ্রেরণায় একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানি তৈরি করে ফেলে খেলনা ভালুক। রুজভেল্টের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এর নাম দিল তাঁরা ‘টেডি বিয়ার’। রুজভেল্টের ডাকনাম ছিল ‘টেডি’।

আজ ৯ সেপ্টেম্বর, টেডি বিয়ার দিবস। দিনটি যুক্তরাষ্ট্রে পালিত হয়। আজকের দিনে প্রিয় মানুষকে টেডি বিয়ার উপহার দিতে পারেন। সংগ্রহের শখ থাকলে আজ কিনতে পারেন নতুন কিছু টেডি বিয়ার।

সূত্র: ডেজ অব দ্য ইয়ার