অলংকরণ: অশোক কর্মকার
অলংকরণ: অশোক কর্মকার

গুচ্ছকবিতা

প্রকাণ্ড কিংবা ক্ষুদ্র অহংকারের বিরুদ্ধে

বনুড়িয়া

আমি এখন থেকে দুষ্টুমি করব না
বনুড়িয়া হাওয়া
ফুঁ দিয়ে শূন্যে উড়িয়ে নাও, আকাশ দেখব

মাঠ: বনুড়িয়া অসমাপ্ত জিজ্ঞাসার পরিধি

তাঁর আমন্ত্রণ পেয়ে
আমরা সমগ্র একটা দুপুর অপরাহ্ণ কাটালাম
কিছুক্ষণ কালো গাছ ঝিঁঝিঁর কথা শুনলাম
তাদের কথা ভাবতে ভাবতে সূর্যাস্ত হলো

বনুড়িয়া বিলে হাঁটছি...

মৃত্যুর বিভীষিকার বিরুদ্ধে
অন্ধকারের বিরুদ্ধে
প্রকাণ্ড কিংবা ক্ষুদ্র অহংকারের বিরুদ্ধে

স্তম্ভিত প্রকৃতি দাঁড়িয়ে আছে
বনুড়িয়া মাঠের আজ কোনো অস্তিত্ব নেই

ঘুম ঘুম চোখ

কাকের ডাক ফুলের ঈষৎ অভিমান
গোল গোল কান্না
ঠিকরে উঠল চোখ...

ঘুমোতে পারিনি।

বেসুরা খনখনে গলায় ডাকলাম: ওঠো
প্রাণের ভয়ে শিশুরা ছোট ছোট দিগন্তের ওপারে
ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়োচ্ছে।

উচ্ছ্বসিত,
একটি সবুজ বালক সার্কাসে দড়িতে
পার হতে চাইছে ইহকাল–ক্রোধ–ক্ষুধা–বিষণ্নতা

ভয়ে চক্ষু আবেগে অস্থির বিশ্বাস হারিয়ে
ঘুমের ওষুধ খুঁজে বেড়াচ্ছি।

ঘুমোতে পারিনি

ভয়াবহ একটা দক্ষযজ্ঞ খাঁচা দোলে অন্ধকারে।

বিশুদ্ধ ভাইব্রেশন

পাহাড়ের ধারে হ্রদের সবুজ জলে
ঘ্রাঁও ঘ্রাঁও করে হাঙর মাছ গজরাচ্ছে
অরণ্যে গাছেরা হাত তুলে ধেই ধেই নাচছে
বলছে সর্বশান্তি সাম্যমৈত্রী সমন্বয়

এত শোভার আঁধার
আমি হাসতে ভুলে গেছি, চোখের নিচে অশ্রুমোছা হাসি
জ্যোৎস্নায় মিশে যায় ঝিঁঝিঁর শব্দে

দূরে নির্বাক ভূমিকায় উদ্ভ্রান্ত অবিরল ক্রোধ
অত অনুরাগ! অত শূন্যতা!
আমি কী করে সই!

স্থবিরতা ও অস্পষ্ট যাপন
ক্ষুধার্তে অপূর্ব গান ছুঁয়ে যায় যে অন্ধকার-ভাষা

ক্যাকোফোনি

বনুড়িয়া বিলে সূর্য নিল বিদায়
ফেউ ধরা ধুলোর আভাস
অন্ধকারে গোল গোল কান্নার কুয়াশা পড়ছে

ফেউ ভয় শিরায় ও লোমকূপে
আধো অন্ধকার, কে যাবে, কীভাবে যাবে

লবণাক্ত জল হাঙর মাছের সন্ত্রাসে
পেটের গভীরে

এই মর্মে রহস্যের গল্প শুনছি ছুটন্ত লরির বাঁশিতে

অমিমাংসিত কী এক ক্যাকোফোনি বোধচিহ্ন
হয়তো নয় সংজ্ঞায় ফিরে দেখি
শুদ্ধ ও নিরাশা স্মৃতিই ভাঙতে পারে

কটি মুখ ভাসে

সুদিনের প্রতীক্ষায়...
নিস্তব্ধ রাত, নিঝুম সন্ধ্যে, নীল অন্ধকার

গাজার শিশুরা জয়তুন শিশিরে
বাঁচার জন্য অশ্রুজল বুকে

খাবার মেলেনি মুখের, খাদ্য মানে সবুজ ঘাস কটি

সীমান্তে দাঁড়িয়ে—
মানবতা ছুঁয়ে যায় রেফাত আলিরের চোখ
মানবতা রয়ে যায় একটি ফুলে!

এ পৃথিবীর বুকে দুর্বল মানে প্রবল অশ্রুপাত

সারা রাত যুদ্ধর পর, সে যায় নির্জন সমুদ্রতীরে
সেখানেও তার জন্য অপেক্ষা
জ্বলন্ত বুলেট, আর শোকার্ত ঢেউ দু–চারটে।