উথলে ওঠে তোমার বুকের অদৃশ্য সেই জলের রাশি—
উপচে পড়া দিঘির জলে নামতে গিয়ে কাষ্ঠহাসি হাসছি যখন,
যায় দেখা হায়, চোখের কোণে জলের সাথে
ঝলকে ওঠে কোমল সুখের সিক্ত হাসি!
তোমার গোপন নরম ভাষা
ভাসায় আমার দুঃখ যত—
দিঘির জলে ডিঙি যেমন
যায় ভেসে হায় ধীরগতিতে!
তীব্রগতির ছুরির ফলা বিদ্ধ করে ফলের শরীর!
রক্ত মেশে নির্বিকারে ফুলের নরম গর্ভাশয়ে—
তুমি এমন গোপন প্রেমে
আর কতবার ছুড়বে বলো,
তীব্র সুখের তিরের ফলা
পাখির শরীর লক্ষ্য করে?
যাও, চলে যাও হাওয়ার ঘরে—
আমার জীবন মুষ্টিভরে
তোমার কাছেই দিচ্ছি জমা
হৃদ্জগতের রঙিন ঝোলায়।
তোমায় পেলাম—
কেমন যেন গোপন আলোয়, নতুন কোনো চিত্রভাষায়,
নরম ভোরের ভালোবাসায়
হাজার জনম শুদ্ধ করে!
লিখে রাখো তুমি সেই নগরের কথকতা,
কত কথা নাগরের সাথে—
সাগরে যাবার আগে
সেরে নিয়েছিল গাংচিল!
শিমুলের ডালে হয়নি বসা তার,
গেয়েছিল ক্ষীণ স্বরে গান কেবলই;
ভুলে যাওয়া নৃত্যভঙ্গি কবেকার—
তা-ও হয়নি রপ্ত আর!
মনের অতল তলে মন কী চেয়েছে,
থেকে গেছে অজানাই!
অচিন পাপড়িদলে বিরহ লিখে গেছে
কেবল লাল পিঁপড়ের সারি।
তুমি বরং লিখে যাও এক তীব্র সুখের কথা—
যার দেখা কখনোই না পায় গাংচিল!
হায়, সে তো সাগরের—
কী বুঝবে সে নগরের উড়ালভঙ্গি কতটা ক্রূর!
সে কেবলই বোজে চোখ,
সুখস্বপ্নের খোঁজে
খোঁজে প্রেম—নাগরের!
হায়! না পায় নাগাল, তবুও তুমুল, বেসামাল,
মাতালের মতো যেতে থাকে উড়ে, দূরে দূরে—
সাগরের প্রতি প্রেমভরে!
শেষ এবং একমাত্র গন্তব্য তার—
তুমি তার কথা লিখে রাখো আজ,
যে কোকিল হতে চেয়ে
হয়ে গেছে দূরের বিরহী গাংচিল!