বাবা যদি আমার ছেলে হতো!

বাবা যখন বাবু

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

‘বাবা, পড়ে যাবা, পড়ে যাবা’—বাবার মুখ থেকে সবচেয়ে বেশি শোনা কথা। আমার অতি সাবধানী, আম্মুর ভাষায় ‘নিটিরপিটির বাবা’ যদি আমার ছেলে হতো, আমি যদি বাবার সত্যিকারের আম্মু হতাম, তাহলে কেমন হতো? অনেক বকা দিতাম? নাকি শুধু আদরই করতাম? অনেক ভাবনাচিন্তা করে দেখলাম, আমার বাবা যদি ছোট্ট হতো, তাহলে খুব লক্ষ্মীই হতো। মোটেই অন্য সব দুষ্টু বাচ্চার মতো হতো না!
যে নিজেই এত ধীরস্থির, তাকে সামলানোর জন্য তো আমার কোনো কষ্টই করা লাগত না! তবে ছোট বাবাকে খাওয়ানোর সময় লাগত সবচেয়ে বড় গন্ডগোল! এখনই তো কিছুই খেতে চায় না, হাজারটা বাহানা। তখন হয়তো আমি মেরেই বসতাম! আর রাস্তা পার হওয়ার সময় শক্ত করে হাত ধরে রাখতাম, যাতে একদম ভয় না পায়। সবাই বলে, আমি নাকি বাবার মতো ঢিলা। তখন সবাই বলত, বাবা আমার মতো ঢিলা। আর আমি সব্বাইকে বকে দিতাম। আর বাবাকে তো এখন বকতে পারি না। তখন ঠিক বকে বকে সোজা করে দিতাম! যাতে বড় হয়ে আর নিজের বউয়ের কাছে বকা খেতে না হয়!
বাবা ছোট হলে কতই না ভালো হতো! বাবার ভাগের আর নিজের ভাগের সব চকলেট আমার হতো। ছোট বাবার কলম আর চিরুনির ভান্ডারে হামলা চলত যখন-তখন! আর সব পরিষ্কার রাখার বিচ্ছিরি অসুখ একদম সারিয়ে দিতাম সকাল-বিকেল ট্রেইনিং দিয়ে।
সব মিলিয়ে আমার ছোট্ট বাবা হতো খুব লক্ষ্মী, শান্ত, মিনি ভদ্রলোক! যেমনটা সব মা-বাবা চায়। যেমন করে এখন বাবা আমাকে অনেক আদর করে, আমিও তেমন অনেক আদর করে, অল্প বকা দিয়ে দেখে-শুনে রাখতাম আমার বাবা অথবা ছেলেকে। আর অনেক অনেক ভালোবাসতাম, এখন যেমন বাসি। অবশ্য, এখনো আমার বাবাকে আমারই দেখে রাখতে হয়। কারণ, এখনো আমার বাবার সঙ্গে একটা সাত বছরের বাচ্চার কোনো পার্থক্য নেই!

ষষ্ঠ শ্রেণি, উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়