দেশি পাঁচমিশালি গাছ
মুরাদনগর, দেবীদ্বার, চান্দিনা এলাকাসহ দেশের প্রায় সব রাস্তার ধারে শিশু, মেহগনি, রেইনট্রি প্রভৃতি গাছ লাগানো হয়েছে ও হচ্ছে। দেশের অনেক এলাকার সড়কে শিশুগাছের খবর সচিত্র প্রতিবেদন আকারে প্রায়ই পত্রিকার পাতায় দেখা যায়।
রেইনট্রি আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর। মেহগনি যদিও চিরসবুজ, কিন্তু এটি বাড়ে ধীরগতিতে। রাস্তার ধারে লাগানো এসব কাঠের গাছ থেকে একসময় কাঠ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, তস্করবৃত্তির কারণে বাস্তবে তা আদৌ সম্ভব কি না, ভবিতব্যই জানে। অথচ রাস্তার ধারে দেশীয় পাঁচমিশালি ফলদ গাছ, যা থেকে প্রতিবছর ফল ও পরিণত বয়সে কাঠ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আম, জাম, কাঁঠাল, জলপাই, চালতা, তেঁতুল, তাল, খেজুর, গাব, বেল, কুল, লটকন, কাউ প্রভৃতি ফলের গাছের পাশাপাশি অর্জুন, নিম, আমলকী, হরীতকী, বহেড়া প্রভৃতি ঔষধি গাছ দৃষ্টিনন্দনও। কৃষ্ণচূড়া কদম, কাঠবাদাম প্রভৃতি গাছ লাগালে জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ সেগুলো খাদ্য ও পুষ্টির জোগান দিত।
এমনিতে কাঠের দাম বাড়ায় দেশজুড়ে সাধারণ মানুষ দ্রুত বর্ধনশীলতার নামে বিদেশি জাতের ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি, রেইনট্রি প্রভৃতি কাঠের গাছ লাগিয়ে গ্রামাঞ্চল বিপদাপন্ন করে ফেলছে, তাতে একদিন ক্ষতি আর আফসোসের শেষ থাকবে না।
তাই সময় থাকতে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির বিষয়টিকে মাথায় রেখে খাদ্য ও পুষ্টির জোগানদার হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশীয় ফলদ গাছ রোপণ করতে হবে। কাঠের কথা চিন্তায় থাকবে, পাশাপাশি কাঠ ও ফল উভয়ের কথা চিন্তা করতে হবে। বিদেশি ফল ও কাঠনির্ভর হওয়া মানে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাওয়া।
তাই গাছ লাগাতে শতকরা ৫০ ভাগ দেশীয় ফলের গাছ, ১০ ভাগ ঔষধি গাছ, ১০ ভাগ অন্যান্য গাছ এবং ৩০ ভাগ কাঠের গাছ লাগানো উচিত। আবহমান বাংলার বিচিত্র ফলফলারি আর জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশীয় ফলের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ দিতে আমরা কি একটু হিসাব করে গাছ লাগাতে পারি না?
সফিক উদ্দিন আহম্মদ
কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চবিদ্যালয়
কোম্পানীগঞ্জ, কুমিল্লা।
আরও পড়ুন
-
কিডনি ব্যবসায়ীরা পার পাচ্ছেন দায়সারা তদন্তে
-
মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
-
বিদ্যালয়ের শৌচাগারে ৬ ঘণ্টা আটকে ছিল এক শিশু, পরে তালা ভেঙে উদ্ধার
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার