Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন দলে সমর্থন জামায়াত সংস্কারপন্থীদের

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাসহ দলের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে জামায়াতে ইসলামী থেকে বেরিয়ে আসা অংশটি কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নামে রাজনীতিতে আসছে। এ​রই মধ্যে তারা তিনটি নাম বিবেচনায় রেখেছে। এগুলোর মধ্য থেকে একটি চূড়ান্ত করা হবে। নামগুলো হচ্ছে সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ন্যায়তন্ত্র দল ও আমরা বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, নতুন দলের সংগঠকেরা ‘আমরা বাংলাদেশ’ নামটি প্রথম পছন্দে রেখেছেন। আগামী নভেম্বর বা ডিসেম্বর নাগাদ রাজনৈতিক দলের নাম ও নীতিমালা ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যে ২২টি জেলায় নতুন দলের সমন্বয়কারী নিযুক্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত এপ্রিলে জামায়াত থেকে বেরিয়ে আসা নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের যে অংশটি ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ নামের নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ গঠন করেছিল, তাদের উদ্যোগেই নতুন দল হচ্ছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত আছে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতে উপেক্ষিত নেতা-কর্মীদের একটি অংশ। তবে নতুন দলটির মুখ্য নেতৃত্বে কে থাকছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যদিও জামায়াত থেকে পদত্যাগী নেতা আবদুর রাজ্জাকের নাম আলোচনায় আছে।

জামায়াতে ইসলামীর সংস্কার এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চাওয়ার প্রশ্নে গত ফেব্রুয়ারিতে আবদুর রাজ্জাক দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি জামায়াতের জ্যেষ্ঠ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। তখন রাজ্জাক নতুন দল না করা এবং সক্রিয় রাজনীতিতে না থাকার কথা বলেছিলেন। যদিও তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থকদের অনুরোধে তিনি মত পাল্টেছেন বলে জানা গেছে। পদত্যাগের সময় রাজ্জাকের অবস্থানকে সমর্থন করে জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান। পরে তাঁকে সমন্বয়ক করে ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ গঠন করা হয়। সংগঠকেরা বলছেন, নতুন দলের নাম ঘোষণার পর জন–আকাঙ্ক্ষা নামটি থাকবে না।

>

নভেম্বর-ডিসেম্বরে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ
বিবেচনায় তিনটি নাম—সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ন্যায়তন্ত্র দল ও আমরা বাংলাদেশ

গত ফেব্রুয়ারিতে আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগ এবং মুজিবুর রহমানকে বহিষ্কারের প্রেক্ষাপটে জামায়াত ঘোষণা দিয়েছিল নতুন নামে দল করার। এ লক্ষ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়েছে বলে তখন এক সাংগঠনিক নির্দেশনায় নেতা-কর্মীদের জানিয়েছিল জামায়াত। কিন্তু ছয় মাস পার হলেও নতুন দল হয়নি। শফিকুর রহমান লন্ডন সফর করেন, সেখানে দলীয় সংহতি রক্ষায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি আবদুর রাজ্জাক যাতে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, সে জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন।

জন–আকাঙ্ক্ষার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, জামায়াতের সেক্রেটারির সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। আবদুর রাজ্জাক যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ যেসব দেশে জামায়াতের ভালো সংগঠন আছে, সেখানে জন–আকাঙ্ক্ষাকে সংগঠিত করতে সহায়তা করছেন। ইতিমধ্যে নতুন দলের জন্য লন্ডনে জামায়াত ঘরানার তিনজনকে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, জন-আকাঙ্ক্ষার নেতাদের লক্ষ্য জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলদের নতুন দলে যুক্ত করা। ইতিমধ্যে নতুন দলের উদ্যোক্তারা রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকা সফর করেছেন।

জন–আকাঙ্ক্ষার দায়িত্বশীল একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তাঁরা দাবি করেন, জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলদের অনেকে ভেতরে-ভেতরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, যাঁরা জামায়াতে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত। 

কখনো দলের নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন আমি দেশের বাইরে। কখন কী হয়, না হয়, সেটা পরের কথা।’