আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার দাফনের খবর

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাফনের খবর আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক গণমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ও সংস্থা বাংলাদেশের প্রথম এই নারী প্রধানমন্ত্রীর জানাজা ও দাফনের খবর সরাসরি সম্প্রচার করেছে। প্রায় সব প্রতিবেদনে জানাজায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতির বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বাঁক এবং তাঁর গৃহীত নীতির তাৎপর্য নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন’। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ বুধবার দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানায়। তাঁর (খালেদা জিয়া) গত কয়েক দশকের রাজনৈতিক জীবন বাংলাদেশের রাজনীতির গতিমুখ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এমন এক প্রভাবশালী নেত্রীকে শেষবিদায় জানাতে সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নেমেছিল।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তাদের ফেসবুক পেজে খালেদা জিয়ার জানাজার খবর সরাসরি সম্প্রচার করেছে। সংবাদ সংস্থাটির শিরোনাম করা হয়েছে, ‘প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাল বাংলাদেশ’।

‘সাবেক নেত্রী খালেদা জিয়াকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীতে মানুষের ঢল’ শিরোনামের দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে বুধবার রাজধানী ঢাকায় তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিপুল জনসমাগম হয়েছিল। তাঁর গৃহীত বিভিন্ন নীতি দেশ ও অর্থনীতি গঠনে ভূমিকা রেখেছিল। খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী গাড়িটি যখন সংসদ ভবন এলাকার দিকে এগোচ্ছিল, তখন তাঁর কফিন একনজরে দেখার জন্য রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন।

বিবিসি শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শোক জানালেন বিপুলসংখ্যক মানুষ’। এতে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে বুধবার বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় ছুটে আসেন। খালেদা জিয়ার মরদেহ বহনকারী গাড়ি যখন সংসদ ভবন এলাকার দিকে এগোচ্ছিল, তখন শোকার্ত মানুষদের দুই হাত তুলে প্রার্থনা করতে দেখা যায়। তাঁদের অনেকের হাতে খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত পতাকা দেখা গেছে। রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। রাজধানীজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল হাজার হাজার নিরাপত্তাকর্মী।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা খালেদা জিয়ার জানাজার খবর নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি জানাজায় জনসমাগমের দৃশ্য নিয়ে একটি ছবির গল্পও প্রকাশ করেছে। মূল প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘বাংলাদেশে সাবেক নেত্রীর জানাজায় শেষবিদায় জানাতে মানুষের ঢল’। এতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার জানাজায় বিপুল জনসমাগম হয়। প্রভাবশালী এই নেত্রীকে শেষবিদায় জানাতে দেশের নানা প্রান্ত সেখানে শোকার্ত মানুষেরা জড়ো হন। লাখ লাখ দলীয় নেতা-কর্মী, ভক্ত ও অনুরাগীর পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের অতিথিরাও খালেদা জিয়াকে শেষবিদায় জানান। বিভিন্ন দেশের নেতারা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজায় বিপুল জনসমাগম’।

ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু খালেদা জিয়ার জানাজার খবর সরাসরি সম্প্রচার করেছে। সরাসরি সম্প্রচারের শেষ শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন’। দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরের শিরোনাম ছিল, ‘স্বামীর কবরের পাশে সমাহিত হলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া’।

পাকিস্তানের সুপরিচিত সংবাদমাধ্যম ডন–এর শিরোনাম ছিল ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন’। দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজও একই শিরোনাম করেছে। গণমাধ্যম দুটি সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাতে প্রতিবেদন করেছে।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের শিরোনাম ছিল, ‘নিজেদের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষ বিদায় জানাল বাংলাদেশ’।