
বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের পক্ষে কাজ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে শহীদ জিয়া এবং বিএনপি দেশকে নতুন কিছু দেয়। নতুন ও যুগান্তকারী দীর্ঘ উন্নয়নের জন্য কাজ করে। সে জন্য আগামী দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে যাঁদেরকে মনোনীত করা হবে, তাঁদের বিজয়ী করার জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে।’
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ‘শহীদ জিয়া শ্রমিক জাগরণ, উৎপাদন ও উন্নয়ন শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। আজ বুধবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এ সভা হয়।
আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘৩১ দফা যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, সেখানে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের কথা বলা আছে। শ্রমিকদের কথা, বিশেষ করে বলা আছে। আমরা যদি এই পরিবর্তনে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমাদের আকাঙ্ক্ষা অনেক কিছুই পূরণ হবে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের জন্য যুগান্তকারী উন্নয়নের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। সেই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশে সবাইকে সংগঠিতভাবে কাজ করতে হবে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, শিশুদের উন্নয়ন, কৃষি, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সর্বস্তরের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সবার জন্য উন্নয়ন—কিছু মানুষের জন্য নয়। কিন্তু আজ দেশে অসম উন্নয়ন চলছে। কেউ কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, আবার কেউ দিন দিন দরিদ্র হচ্ছেন—এটাই শহীদ জিয়ার চাওয়া বাংলাদেশ নয়।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত না হলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, শ্রমের মর্যাদা, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। যদি একজন শ্রমিক ঠিকমতো ঘুমাতে না পারে, ভালো খাবার না পায়, চিকিৎসা–সুবিধা না পায়, তাহলে সে কীভাবে উৎপাদনশীলভাবে কাজ করবে? একজন শ্রমিকের পেট খালি থাকলে তাঁর কাছ থেকে ভালো কাজ আশা করা অন্যায়।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিএনপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ষড়যন্ত্র ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় যাঁরা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছেন, তাঁরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। জনগণ আর প্রহসনের নির্বাচন মেনে নেবে না।
৭ নভেম্বরের চেতনা ঐক্যের চেতনা ছিল বলে উল্লেখ করে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজও আমাদের সেই ঐক্য দরকার—সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, যাঁরা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না, গণতন্ত্রকে ভয় পান, তাঁরা সব সময় ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন। আমরা বিশ্বাস করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সেই ঐক্য গড়ে তুলতে পারব।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপিরসহ শ্রমিক–বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান মোল্লা প্রমুখ।