
পুলিশের অনুমতি চেয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না পেরে এবার অনুমতি ছাড়াই রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার মতিঝিল ও মিরপুর–১ নম্বর এলাকায় এই বিক্ষোভ হয়।
মিরপুরের বিক্ষোভে জামায়াতের মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিম ও মতিঝিলে দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল নেতৃত্ব দেন।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী রোববার সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত। আজ সকালে সংবাদ সম্মেলন করে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাকা মহানগর জামায়াতের দুই শাখা।
জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জুমার নামাজের পরপরই রাজধানীর দুই অংশ থেকে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। অল্প দূরত্বে মিছিল শেষে দুটি স্থানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
এ সময় রাজধানীতে বৃষ্টি নেমেছিল। বৃষ্টির মধ্যেই মিরপুরের মিছিলটি ১ নম্বর গোলচত্বর এলাকা থেকে শুরু হয়ে বাঙলা কলেজের দিকে কিছু দূর গিয়ে শেষ হয়।
আর মতিঝিলের মিছিলটি পীরজঙ্গি মাজার রোড হয়ে কমলাপুর স্টেশনের কাছে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সড়ক বিভাজকের ওপর দাঁড়িয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। মিরপুরে বক্তব্য দেন মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিম।
মতিঝিলে বিক্ষোভ শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুক্রবার ছুটির দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা দেয়নি। আমরা বাধ্য হয়ে ময়দানে নেমেছি। কারও সহযোগিতার জন্য জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচি বন্ধ থাকবে না।’
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। বিগত ১৫ বছর যাবৎ জামায়াতকে নির্মূল করার জন্য সরকার সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আওয়ামী লীগ প্রতিদিন মিছিল করে মিটিং করে তাদের অনুমতির দরকার হয় না। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচির জন্য বারবার অনুমতি চাওয়া হলেও পুলিশ অনুমতি দেয় না।’
সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘সংসদ ভেঙে দিন, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। দ্রব্যমূল্য কমান, জনদুর্ভোগ কমান, লুটপাট বন্ধ করুন। জনগণকে স্বস্তি দিন, মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গোটা বাংলাদেশে গণ–আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। জনগণ ফুঁসে উঠেছে। জনগণ কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় করেই ছাড়বে।’
নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে নুরুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বাচন থেকে আলাদা করার জন্য পরিকল্পিতভাবে রায় দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাদের জেলে পুরে রেখে নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। জনগণ সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে।
মিরপুরের কর্মসূচিতে মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল করিমও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, হামলা-মামলা করে, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবে না। শেখ হাসিনার বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকব।’
সমাবেশে দলের আমির শফিকুর রহমান সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনের মুক্তি দাবি করেন রেজাউল করিম।