Thank you for trying Sticky AMP!!

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। চট্টগ্রাম, ২ জানুয়ারি

শ্রমিক-কর্মচারীদের মামলায় ড. ইউনূসের শাস্তি হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আদালত দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এরপর আপিল করার শর্তে তাঁকে আবার জামিন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি, মামলা করেছেন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনে ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে লাভের ৫ শতাংশ তার কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে, এযাবৎ কখনো তা দেওয়া হয়নি। এটি না দেওয়ায় মামলা করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।

মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষ থেকে দুজন শ্রমিকনেতাকে ‘ম্যানেজ করার’ চেষ্টা করা হয়েছিল এবং দুজন শ্রমিকনেতাকে তিন কোটি করে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকেরা টাকা না পাওয়ায় তাঁরা মামলা করেছেন। সুতরাং এখানে স্পষ্টত একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এই অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কারণেই মামলা হয়েছে, শাস্তিও হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এক দশকের বেশি সময় ধরে নিয়ম ভঙ্গ, কর ফাঁকি, তার কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনুমোদিত সংস্থা থেকে তিন হাজার কোটি টাকা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে। ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। ১৯৯০ সালের সংশোধনী অনুসারে এমডি নিয়োগের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসে স্থানান্তরিত হয়। এই পরিচালক বোর্ডের চেয়ারম্যান ১৪ আগস্ট ১৯৯০ সালে ড. ইউনূসকে এমডি হিসেবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত সাপেক্ষে ড. ইউনূসের নিয়োগে অনাপত্তি দেয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের বয়স যখন ৫৯ বছর, ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালক বোর্ডের ৫২তম সভায় আইন ভঙ্গ করে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে এমডি হিসেবে নিশ্চিত করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই নিয়োগের অসৎ উদ্দেশ্য পরে প্রমাণিত হয়েছে।

পৃথিবীতে বহু নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে, অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের অনেক ঘটনা আছে, যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত টাকা পাবেন, এ নিয়েও নোবেলজয়ীরা পরস্পরের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বাধীনভাবেই কাজ করেছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, যদিওবা নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে বহু প্রশ্ন আছে। গাজায় “কবরে শান্তি স্থাপন” করার জন্য কখন যে নেতানিয়াহুকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে দেয়, সেটিও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরপর বারাক ওবামাকে যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার দিল, তিনি অবাক হয়ে গেলেন, বললেন, আমাকে কেন দেওয়া হলো। মালালাকে ১৪ বছর বয়সে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। কোন সময় যে ১০ বছরের কাউকে দিয়ে দেয়, সেটি নিয়েও অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যা–ই হোক, তিনি একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক, আমি তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।’