
শরীফ ওসমান হাদির হত্যার ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী গণমাধ্যমে হামলা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড ও গণহত্যার স্মৃতি মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ তৈরি করেছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একদল স্বার্থান্বেষী মহল সেই ক্ষোভকে ব্যবহার করে গণমাধ্যমের ওপর হামলা করছে, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর অফিস পরিদর্শনে এসে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।
প্রথম আলোর পাশাপাশি ডেইলি স্টার ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই হামলাগুলো ন্যক্কারজনক। এগুলো জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের আত্মত্যাগ ও সেই ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড সারা দেশকে শোকাহত ও ক্ষুব্ধ করেছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ওসমান হাদি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের স্বপ্ন দেখতেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে মূলত দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে।
জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের যে দাবি উঠেছে, সেটিই আজকের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। কিন্তু পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ও তাঁদের সহযোগীরা এই প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে চাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দেশে অরাজকতা ও নাশকতার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ওসমান হাদির মতো জুলাই আন্দোলনের আরও অনেক সংগঠক ও নেতৃত্বকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ের মাধ্যমে মানুষকে দমিয়ে রাখার যে চেষ্টা আগে করা হয়েছিল, মানুষ তা ভেঙে দিয়েছে। এখন আবার সেই ভয়ের অস্ত্রই ব্যবহার করা হচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনের সময় গড়ে ওঠা বৃহত্তর ঐক্যের কথা স্মরণ করে সাকি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক মত ও আদর্শের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছিলেন। এখন তাঁদের সামনে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পর্ব—রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করা, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তোলা এবং সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা। তিনি বলেন, মানুষের জানমাল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সেই দায়িত্ব পালনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কেন এই ক্ষেত্রে কার্যকর হলো না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতারসহ সংহতি আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা।