
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, তাঁর দলের সভাপতি নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় পুরো সেনাবাহিনীর দায় নেই। বাহিনীর কতিপয় সদস্য অতি উৎসাহী হয়ে এ হামলা চালান। এতে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এই হামলার বিচার দাবি করে রাশেদ খান বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশের যেসব সদস্য হামলা চালিয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর ফলে এই দুই বাহিনীর ওপর দায় আসবে না। আমরা চাই না, এই দুই বাহিনীকে মানুষ ভুল বুঝুক। কারণ, তাদের নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে।’
আজ রোববার রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন রাশেদ খান। বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ তাদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বিপ্লবীরা কতটা নিরাপদ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
রাশেদ খান বলেন, ‘সেনাবাহিনীর অনেক অবদান বাংলাদেশে। শেখ হাসিনার রেজিমে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার এমন কোনো হীন চেষ্টা নেই, যা করা হয়নি। সর্বশেষ আমাদের ওপর হামলা, কার্যালয় ভেঙে হামলা, বাথরুম ভেঙেও হামলা। এই ঘটনা দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।’ বক্তব্যে রাশেদ খান দাবি করেন, প্রকাশ্যে না হলেও সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য তাঁদের সমর্থন করেন।
রাশেদ খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মানুষের যে আশার আলো ছিল, তা মোমবাতির আলোর ন্যায় নিভে গেছে। তবুও আমরা আবার আলো জ্বালাতে চাই। আমরা নতুন করে আবারও লড়াই শুরু করতে চাই। সেই লড়াই হবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা ও গণ অধিকার পরিষদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, সরকার আমাদের জন্য কী করে।’
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে, সম্প্রতি নুরুল হকসহ নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার পর সেই আকাঙ্ক্ষা মলিন হয়ে গেছে। আগামী দিনে এই হামলা পল্টন কিংবা বাংলামোটরেও হতে পারে।
আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ঢাকা উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি রাহুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সবুজ আলম, যুব আন্দোলনের সভাপতি আদনান সামি, জাতীয় যুব পরিষদের সভাপতি শামসুল আলম, বিপ্লবী যুব সংহতির সভাপতি বাবর চৌধুরী, জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ান দুই দলের নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনার পর গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা দলটির নেতা–কর্মীদের লাঠিপেটা করেন। তখন দলের সভাপতি নুরুল হক গুরুতর আহত হন। নুরুল হকের মাথায় আঘাত লেগেছে এবং নাকের হাড় ভেঙে গেছে। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।