
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কেউ যাতে ঐক্যে কোনোভাবে ফাটল ধরাতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ভীষণ জাতীয় সংকটের মধ্যে আছি। দেশের অর্থনীতি খারাপ অবস্থার মধ্যে আছে।’
রাজনৈতিক দল হিসেবে এক দশক পূর্তি উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন শাহবাগ থেকে কাটাবন, হাতিরপুল, বাংলামোটর, মগবাজার, ওয়্যারলেস গেট ও হাতিরঝিল হয়ে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত শোভাযাত্রা করে। এতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড বহনের পাশাপাশি দলীয় প্রতীক ‘মাথাল’ পরে অংশ নেন অনেক নেতা–কর্মী।
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজনে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কেউ যাতে ঐক্যে কোনোভাবে ফাটল ধরাতে না পারে, সে জন্য আপনাদের সদা প্রস্তুত, সদা সতর্ক থাকতে হবে এবং সদা চেষ্টা করে যেতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা এখনো বিপর্যয় কাটিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। আমাদের মৌলিক সংস্কার দরকার। সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দরকার। আর এই সবকিছু থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে আমাদের নির্বাচন দরকার। আমাদের দরকার গণভোট; একই সঙ্গে দরকার সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে হতে হবে।’
‘সুসম্পর্ক চাই, কিন্তু মাথা নত করে নয়’
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার আমলে ভারত বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে; কিন্তু জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম মর্যাদায় দাঁড়াবে। আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই, কিন্তু মাথা নত করে নয়। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে প্রয়োজনে আবারও রক্ত দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ফ্যাসিস্টরা ঘৃণা, বিভাজন, নানা রকম ট্যাগিং করে তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছে। একদল ওই ঘৃণা, বিভাজন এবং ট্যাগিংয়ের পলিটিকস (রাজনীতি) করে আরেকটা জবরদস্তিমূলক শাসন কায়েম করতে চায়। অভ্যুত্থান পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে, এক ফ্যাসিবাদের বদলে অন্য কোনো জবরদস্তি বাংলাদেশের মানুষ সহ্য করবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, এই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় ঐক্যমতের প্রয়োজনীয়তা এখনো শেষ হয়নি। এই ঐকমত্য ধরে রাখার জন্য সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, ‘বিচার, সংস্কার, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যদি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ না হয়, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, শ্রমিকেরা কাজ পাবেন না। আমাদের নির্বাচনকে সফল করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’