অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ঢাকা, ০৪ আগস্ট
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ঢাকা, ০৪ আগস্ট

পুরোনো বন্দোবস্ত জায়গা করে নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে: জোনায়েদ সাকি

পুরোনো বন্দোবস্ত জায়গা করে নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, ‘কথা ছিল, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। কিন্তু শহীদ পরিবারগুলো হাহাকার করে বিচারপ্রক্রিয়া কত দূর ভেবে।’

একটা রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্র হয়ে উঠছে কি না, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারছে কি না, তা নির্ভর করে রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার দেওয়ার সক্ষমতা ওপর বলে উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিটি হত্যার ন্যায়বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘চব্বিশের কোনো শহীদের মামলা ও তার বিচারকে রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যে ফেলতে আমরা দেব না। আমরা প্রতিটি হত্যার বিচার ও ন্যায়বিচার চাই। এই ন্যায়বিচার হবে আমাদের এই রাষ্ট্রের নতুন যাত্রার প্রথম লক্ষণ।’ অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনাল ও কর্মকর্তা বাড়িয়ে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ সোমবার রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর আইডিয়াল গার্লস স্কুলের পাশে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশ, মোমবাতি প্রজ্বালন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। ঢাকা, ০৪ আগস্ট

জোনায়েদ সাকি বলেন, মিরপুর ১০ যখন দখল হয়ে গিয়েছিল, তখন অন্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে শহীদ শাকিলরা জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই প্রতিরোধ সমরে খালি হাতে লড়াই সংগঠিত করেছিলেন তাঁরা। আওয়ামী পুলিশ ও গুন্ডা বাহিনী সেখানে একসঙ্গে জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শহীদ এবং যাঁরা আহত, তাঁরা এই জাতিকে গৌরবান্বিত করেছেন। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, আমাদের দেশের মানুষ মৃত নয়, তাঁরা অন্যায়ের বিরোধিতা করে ও শেষ পর্যন্ত লড়াই করে খুনিদের ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে আমাদের গৌরবান্বিত করে গেছেন।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন। ঢাকা, ০৪ আগস্ট

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সবার আগে কর্তব্য ছিল শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের পর সবচেয়ে বড় মাহেন্দ্রক্ষণ ৫ আগস্ট আবার আসছে। আমরা এখনো জানি না শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাব কি না, তাঁদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত দেখব কি না, তাঁদের পরিবারের জীবনের দায়িত্ব নেওয়া নিশ্চিত হবে কি না, সমস্ত আহতের চিকিৎসা ও জীবনের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে, সেটা দেখব কি না—এটা এই সরকারের ব্যর্থতা।’

ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের নেতা ইয়াসিন খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের সংগঠক সাইফুল্লাহ সিদ্দিক, পল্লবী থানার সদস্যসচিব প্রদীপ রায়, মিরপুরের সংগঠক রতন তালুকদার, শহীদ শাকিলের স্কুল ‘আমাদের পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আবু রায়হান খান প্রমুখ।