সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট দিনের কথা বলেননি: জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা দিনের কথা বলেননি।

আজ রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের ১৯তম দিনের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রফিকুল ইসলাম খান এ কথা বলেন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যতটুকু খবর আছে, প্রধান উপদেষ্টা এটি বলেননি।’

এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ১৪টি রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।

আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘গতকালের এ বৈঠকের আগে আরও দুটি বৈঠক হয়েছিল। এর প্রথম বৈঠকে আমি নিজেই ছিলাম। নির্বাচনী সংলাপের জন্য এই বৈঠক হয়নি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং মাইলস্টোন স্কুলের ঘটনায় যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তার পেছনে যে নানা ষড়যন্ত্র কার্যকর ছিল, এটাকে সামনে রেখে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে মিটিং ডেকেছিলেন। প্রতিটি মিটিংয়ের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, ওখানে কোনো নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়নি।’

নারী আসনের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘১০০ নারী প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে আমরা একমত। তবে এটি হবে ৩০০ আসনের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির বিষয়ে আমরা ঐকমত্য পোষণ করেছি।’

সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বলেছি পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপনের বিষয়টি প্রতিস্থাপন করতে হবে। অন্যদিকে ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি উল্লেখিত হবে। এখানে কয়টি দল আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাসের বিষয়টির বিরোধিতা করেছে। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাসের বিষয়টি সংবিধানের মূলনীতিতে সংযোজন করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছে।’

পুলিশ কমিশনের বিষয়ে জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘পুলিশ কমিশনের বিষয়ে আমরা একমত পোষণ করেছি। এ কমিশন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশ যাতে আইনানুগভাবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়, তা নিশ্চিত করা।’

আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া।