Thank you for trying Sticky AMP!!

‘প্রহসনের’ নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা সিপিবির

রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের সামনে আজ শুক্রবার সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা

সরকার ‘একতরফা’ ও ‘প্রহসনের’ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) অংশ নেবে না। আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের সামনে সমাবেশে সিপিবির নেতারা এ ঘোষণা দিয়েছেন।

সমাবেশে সিপিবির নেতারা বলেন, গণদাবি ও জনমত উপেক্ষা করে সরকার আবারও ‘একতরফা’ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। ‘একতরফা’ তকমা ঘোচাতে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়াতে নানা ‘অপকৌশল’ ব্যবহার করছে। এসব কর্মকাণ্ড এক কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হচ্ছে এবং তা গোপন থাকছে না। এ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চলমান রাজনৈতিক সংকট দূর হবে না, বরং দেশ নতুন সংকটে পড়বে। সরকারের স্বৈরাচারী, কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা বাড়বে। অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হবে।

সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সাজেদুল হক রুবেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। সমাবেশে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, পরেশ করসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলটির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

সিপিবির সভাপতি শাহ আলম বলেন, রাষ্ট্র এবং সরকার একাকার হয়ে গেছে। দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ দলীয় সরকারের অধীনে নিজের ভোট নিজে দিতে পারবে বলে মনে করে না। ভোটে জিতবে না জেনে সরকার নানা বাহানা তৈরি করছে, মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। প্রহসনের নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানান তিনি।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, টাকার খেলা, পেশি শক্তি, প্রশাসনিক কারসাজি ও সাম্প্রদায়িকতার প্রভাবমুক্ত ছাড়া নির্বাচনে সমসুযোগ থাকে না। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি, ‘না’ ভোট, প্রতিনিধি প্রত্যাহারসহ নির্বাচনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, আন্দোলন, সভা-সমাবেশ-হরতাল-অবরোধ করা দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে, তবে জ্বালাও-পোড়াওয়ের অধিকার কারও নেই। সভা-সমাবেশ ও আন্দোলন করলে পুলিশ দিয়ে-লাঠিয়াল বাহিনী নামিয়ে আন্দোলন দমনের অধিকারও কারও নেই।

আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিছিল

সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই। কিন্তু নির্বাচনের নামে ভুয়া, অবৈধ, প্রহসনের নির্বাচন চাই না। কমিউনিস্ট পার্টি দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন রুখে দেবে।’ দেশে বর্তমানে যে সংকট চলছে তার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করে তিনি বলেন, ‘তারা বলে, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার। অর্থাৎ তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। বাংলার জনগণ তা মেনে নেবে না।’

নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সিপিবির নেতারা। তাঁদের ভাষ্যমতে, ‘এক শতাংশ ভোট পড়লে নির্বাচন বৈধ’—এ কথার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারকে বৈধতা দেওয়ার কথা আগেভাগে বলেছে।

বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন, হামলা-মামলার পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারের হুমকির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিপিবি নেতারা। তাঁরা বলেন, অতীতে স্বৈরাচারী শাসকেরা এ পথে হেঁটে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এ সরকারও পারবে না। বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, মানুষের আয় কমে গেছে। কাজ নেই, লুটপাট-দুর্নীতিও নিয়ন্ত্রণহীন।