
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে ‘চেতনার ব্যবসায়ীরা’ নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন চেতনার ব্যবসাদার হাজির হয়েছে আর জামায়াতে ইসলামী গণ–অভ্যুত্থানের চেতনাকে ব্যবহার করে ধর্ম ব্যবসা শুরু করেছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পরীবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় যুব শক্তির জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন–২০২৫–এ অংশ নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করেছিল। এখন নতুন চেতনার ব্যবসাদার হাজির হয়েছে আমাদের সামনে। আমরা তাদের উদ্দেশ্য বলব, বাংলাদেশে চেতনা দিয়ে পলিটিকস হয় না।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আরেকটা নতুন দলের এখন পাখনা গজাইছে—জামায়াত ইসলামী। গণ–অভ্যুত্থানের এখন নতুন চেতনার কথা বলে তারা নতুন ধর্ম ব্যবসা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
জামায়াতে ইসলামীকে ‘ভণ্ডামি’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘যদি রাজনীতি করতে চান, সোজা পথে আসুন। তাদের মিষ্টি মিষ্টি কথার আড়ালে কী আছে, সেটা তো আল্লাহ জানে।...পাকিস্তানেও এ ধরনের জামায়াতে ইসলামীর একটি পাখা গজায়ছিল। একটি আসনও তারা পায়নি।’
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে এনসিপির এই নেতা বলেন, কয়েক দিন আগে তারা (বিএনপি) বলল যে তারা নাকি বাংলাদেশে দুর্নীতি হলে শেষ করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি জোকারি হয়েছে এটি।
এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এ গণ–অভ্যুত্থানের পর জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের (নির্বাচন) আসনের লোভ দেখিয়ে কিনতে চেয়েছিল। আমরা বলেছিলাম, নব্বইয়ের ছাত্রনেতারা বিক্রি হয়েছে, চব্বিশের কোনো ছাত্রনেতা ইনশা আল্লাহ, বিক্রি হবে না হবে না হবে না হবে না।...আমরা কোনো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করার জন্য পলিটিকসে নামি নাই। আমরা কোনো চেতনা ব্যবসা করতে চাই না।’
রাজনৈতিক দলগুলো যদি এক হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারত, তাহলে নতুন সংবিধান রচনার মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতির বলয় থেকে বের করে আনা সম্ভব হতো বলে মনে করেন নাসীরুদ্দীন। তাঁর অভিযোগ, অতীতে বিএনপি, জামায়াত ও অন্য রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতার কারণেই রাষ্ট্র এক–এগারোর মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল এবং তরুণেরা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিনিধি সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আকতার হোসেন, যুব শক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম, সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ফরহাদ সোহেল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা বুশরা ও জাতীয় যুব শক্তির জ্যেষ্ঠ সংগঠক ইয়াসিন আরাফাত।