গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে হামলায় আহত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার। আজ বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায়
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে হামলায় আহত সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার। আজ বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায়

তিন সংগঠনের বিবৃতি: ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে রাজশাহী-চট্টগ্রামে ছাত্রশিবির হামলা করেছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মশালমিছিল ও সমাবেশে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের’ ব্যানারে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তিন সংগঠন।

পৃথক স্থানে হওয়া এসব হামলার ঘটনায় আজ বুধবার উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। বিবৃতিতে সংগঠনগুলোর নেতারা হামলার নিন্দা, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দল-গোষ্ঠীর বিচার দাবি করেছেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশালমিছিলে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে’ ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মিছিলে হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হন। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সেখানেও ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যর’ ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা–কর্মীদের দেখা গেছে।

আজ দেওয়া বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, ছাত্রজোটের মশালমিছিল হামলার ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ে দেশের মানুষ হতাশ ও বিক্ষুব্ধ হয়েছেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা চাইলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা প্রত্যাখ্যান করে। বিবৃতিতে বাম জোট বলে, অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ ও উসকানি দিয়ে আসছে।

ছাত্র জোটের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই হামলাকে শিক্ষাঙ্গনে অগণতান্ত্রিক শক্তির পুনর্বাসন, সহিংস রাজনীতির বিস্তার ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনার প্রকাশ বলে মনে করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

ছাত্রজোটের ওপর হামলাকে মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অবিলম্বে ধর্মান্ধ ও যুদ্ধাপরাধী চেতনার পুনর্বাসন বন্ধ করতে হবে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচির ব্যানার কেড়ে নিয়ে পোড়ানো হয়। আজ বিকেলে

বিবৃতিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিশ্চিতসহ চারটি দাবি জানায়।

ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা গণহত্যাকারীদের প্রতিহত করবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তাদের বিবৃতিতে জানায়, গণ–অভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগ বিতাড়িত হলেও ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের ‘রাজত্ব’ গ্রহণ করেছে।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার যৌথ বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

এই হামলাকে ছাত্রশিবিরের অতীত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক চর্চা ও রাজনৈতিক সহাবস্থানের জন্য ছাত্রশিবির হুমকিস্বরূপ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে।

ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে ছাত্রলীগের মতোই পরিণতি বরণ করতে হবে বলে বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন দাবি জানায়, এসব হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।