ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে মোট ২ হাজার ৫৮২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। সেই হিসাবে প্রতি আসনে গড়ে ৮টির বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষে আজ সোমবার রাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ তথ্য জানিয়েছে। তবে কোন আসনে কতজন এবং মোট কতটি দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তা এখনো বিস্তারিত জানায়নি ইসি। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল আজ বিকেল ৫টা। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। ইসি আপিল নিষ্পত্তি করবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। এরপর আগামী নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা জানা যাবে।
এর আগে সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৬৯ জন।
ইসি জানিয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে লড়তে মোট ৩ হাজার ৪০৭টি মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এর মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে ২ হাজার ৫৮২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
ইসি সারা দেশকে ১০টি প্রসাশনিক অঞ্চলে ভাগ করে কাজ করে থাকে। ইসি জানায়, রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনে ২৭৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। রাজশাহী অঞ্চলের ৩৯টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২৬০টি। খুলনা অঞ্চলের ৩৬টি আসনে ২৭৬টি, বরিশাল অঞ্চলের ২১টি আসনে ১৬৬টি, ফরিদপুর অঞ্চলের ১৫টি আসনে ১৪২টি, ঢাকা অঞ্চলের ৪১টি সংসদীয় আসনে ৪৪৪টি, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৩৮টি আসনে ৩১১টি, সিলেট অঞ্চলের ১৯টি আসনে ১৪৬টি, কুমিল্লা অঞ্চলের ৩৫টি আসনে ৩৬৫টি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৩টি আসনে ১৯৪টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
কোনো রাজনৈতিক দলকে দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে ৬০টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে। দলটি এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। বাকি দলগুলোর মধ্যে কতটি দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিরোধী শিবিরের বর্জনে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ছিল বিতর্কিত। ‘আমি–ডামির’ নির্বাচন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ওই নির্বাচনে ২৮টি দল অংশ নিয়েছিল। তখন ইসিতে নিবন্ধিত দল ছিল ৪৪টি। তার আগে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের সব কটি অংশ নিয়েছিল। তবে সে নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ভোটের আগের রাতে সারা দেশে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার অভিযোগ ছিল। ওই নির্বাচনটি রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘রাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিতি পায়।