Thank you for trying Sticky AMP!!

সুরা কাফিরুনে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের কথা বলেছেন

সুরা কাফিরুন (অর্থাৎ ‘অবিশ্বাসীরা’) পবিত্র কোরআনের ১০৯তম সুরা। অবতীর্ণ হয়েছে মক্কায়। এর ১ রুকু, ৬ আয়াত। একবার কাফিররা মোহাম্মদ (সা.)-এর কাছে প্রস্তাব করে যে তারা তাঁর ধর্ম গ্রহণ করতে প্রস্তুত, যদি তিনিও তাদের ধর্ম আংশিকভাবে গ্রহণ করেন। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আল্লাহ তখন প্রত্যাদেশ দেন, ‘বলো, হে অবিশ্বাসীরা! আমি তার উপাসনা করি না, যার উপাসনা তোমরা করো। আর তোমরাও তাঁর উপাসনাকারী নও, যাঁর উপাসনা আমি করি। আর আমি উপাসনাকারী হব না তার, যার উপাসনা তোমরা করে আসছ, আর তোমরাও উপাসনাকারী হবে না তাঁর, যাঁর উপাসনা আমি করি। তোমাদের ধর্ম তোমাদের, আমার ধর্ম আমার।’

Also Read: সুরা নাসে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হয়

সুরা নাজিলের পটভূমি

মক্কার অবিশ্বাসীরা যখন দেখল মুহাম্মদ (সা.)–কে কোনোভাবেই বিরত করা যাচ্ছে না, তখন তারা একটা মীমাংসা প্রস্তাব নিয়ে এল। তারা কিছুটা মুহাম্মদ (সা.)–কে অনুসরণ করবে, বিনিময়ে মুহাম্মদ (সা.)–কেও কিছুটা তাদের অনুসরণ করতে হবে। তারা এক বছর মুহাম্মদ (সা.) এর দীন পালন করবে, বিনিময়ে মুহাম্মদ (সা.) এক বছর তাদের দীন পালন করবেন। এ কথা শুনে নবী মুহাম্মদ (সা.) নিশ্চুপ ছিলেন। এই ঘটনার পটভূমিতে সুরাটি নাজিল হয়।

সুরা কাফিরুনে আল্লাহ তাঁর নবীর পক্ষ থেকে তাদের কথার জবাব দেন। তাদের আল্লাহ সরাসরি ‘অবিশ্বাসীরা’ বলে সম্বোধন করেন।

Also Read: সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের বিশেষ ফজিলত

কী বলা হয়েছে

সুরাটির প্রথম আয়াত শুরু হয়েছে এভাবে, ‘বলো, হে অবিশ্বাসীরা!’ এই সম্বোধন ছিল কিছু নেতৃস্থানীয়দের জন্য, ইসলাম গ্রহণের সব রকম সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও যারা ইসলাম গ্রহণ করেনি। অর্থাৎ আশপাশের, সাধারণ অমুসলিম প্রতিবেশী বা ইহুদি, খ্রিষ্টানদের জন্য ঢালাওভাবে নয়। ঢালাওভাবে সবাইকে ‘কাফির’ বলা যাবে না।

ইবাদত দুটি কাজের সংমিশ্রণ—উপাসনা ও আনুগত্য। এর একটি অনুপস্থিত থাকলে ইবাদত পূর্ণ হয় না। দুই নামাজের মাঝখানের সময়ে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলাই আনুগত্য।

দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে ‘আমি তার উপাসনা করি না যার উপাসনা তোমরা করো।’ তখনকার কাফিররা মূলত মূর্তিপূজা করত, যা ইসলামের মূল প্রত্যয়ের বিরোধী।

Also Read: সুরা ইয়াসিনের সার কথা

সুরার তৃতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরাও তাঁর উপাসনাকারী নও যার উপাসনা আমি করি।’ হজরত মুহাম্মদ (সা.) এক আল্লাহর ইবাদত করলেও তখনকার কাফিররা তা করত না, বরং তারা তখন মূর্তিপূজা ও শিরক করত।

সুরার চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর আমি উপাসনাকারী হব না তার, যার উপাসনা তোমরা করে আসছ।’ অর্থাৎ আল্লাহর নবী জীবনে কখনই মূর্তি পূজা করেননি, কিন্তু কুরাইশ কাফিররা অনেক আগে থেকেই এটা করে আসছিল।

এর পঞ্চম আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরাও উপাসনাকারী হবে না তাঁর যাঁর উপাসনা আমি করি।’ গুরুত্ব বোঝাতে একই আয়াত দুই বার ব্যবহার করা হয়েছে।

ষষ্ঠ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের ধর্ম তোমাদের, আমার ধর্ম আমার।’ ইসলামে কখনোই ধর্মের সঙ্গে আপোষ করা যায় না। তখনকার কাফিরদের ধর্ম ছিল মূলত মূর্তিপূজা। মুহাম্মদ (সা.) ও মুমিনদের ধর্ম ছিল তওহিদ বা একত্ববাদ। শিরক ও তওহিদ এই দুইয়ের মূলনীতি গভীরভাবে পৃথক। এই সুরায় আল্লাহ অবিশ্বাসীদের কথা উল্লেখ করেছেন। ইসলামে বিশ্বাসে আপোস নেই। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা চাইলে নিজের ধর্ম পালন করুক।

Also Read: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে এল

সুরা কাফিরুনের আমল

ফজরের দুই রাকাত সুন্নতে, মাগরিবের সুন্নতে. তাওয়াফের দুই রাকাত নামাজে সুরা ফাতিহার সঙ্গে সুরা কাফিরুন পড়া উত্তম। ঘুমানোর সময় সুরা কাফিরুন পড়লে শিরক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বিশ্বাসের ওপরে ভিত্তি করে মানুষের প্রকারে কোরআনে তিনটি সুরা রয়েছে—সুরা মুমিনুন, সুরা মুনাফিকুন, সুরা কাফিরুন। এই সুরা তার একটি। 

Also Read: ভারত–পাকিস্তানের চেয়ে হজের খরচ বেশি হওয়ার যে ব্যাখ্যা সরকারের