Thank you for trying Sticky AMP!!

এভাবে চলে গেলেন 'আবাহনীর শামসু'!

দীর্ঘ অসুস্থতা নিয়ে রাজশাহীতে নীরবেই দিন কাটছিল তাঁর। কিন্তু নীরবতা ভেঙে তিনি খবর হলেন। মর্মান্তিক সেই খবর। মৃত্যু অমোঘ। কিন্তু গতকাল যেভাবে অন্যলোকে পাড়ি দিলেন সত্তর-আশির দশকের ফুটবল ‘নস্টালজিয়ার’ অন্যতম মুখ শামসুল ইসলাম, সেটি আরও বেশি বেদনাহত করে।

বেলা ১১টার দিকে সাগরপাড়ায় বাড়ির পুকুরে গোসল করতে নেমে আর ডাঙায় উঠতে পারলেন না ক্রিকেটার খালেদ মাসুদের (পাইলট) বাবা, ‘আবাহনীর শামসু’। অনেকটা সময় তাঁর খোঁজ না পেয়ে পরে পানি থেকে উদ্ধার করা হয় ৭৬ বছর বয়সীর নিথর দেহ।

শামসুল ইসলাম

রাজশাহীর শামসুল ইসলাম ঢাকায় প্রথম এসেই ঢাকেশ্বরী কটন মিলে খেলেন। ষাটের শুরুতে নাম লেখান মোহামেডানে। পঁচাত্তরের আগা খান গোল্ডকাপে আবাহনী তাঁকে ধারে নেয়, পরের বছরই পাকাপাকিভাবে চলে আসেন আকাশি-নীলে। ছিলেন ১৯৮০ সাল পর্যন্ত। মাঝে পিডব্লুডিতে খেলার স্মৃতি ছাপিয়ে মোহামেডান-আবাহনী অধ্যায়টাই বেশি মনে পড়ত তাঁর।

এমনিতে খুব মজার মানুষ ছিলেন, যে কারণে সবার প্রিয়ও ছিলেন। রাজশাহীর আরেক নামী ফুটবলার মোহাম্মদ মহসীন স্মৃতিচারণ করলেন, ‘শামসু ভাই অনেক আনন্দ করতেন, মজা করতেন, মানুষটা ছিলেন দিলখোলা।’ সত্তরের আরেক নামী খেলোয়াড় নওশেরুজ্জামান আজও মুগ্ধ তাঁর ফুটবলে, ‘তিনি ছিলেন দুর্দান্ত স্ট্রাইকার। ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে মোহামেডানের জার্সি গায়ে শামসু ভাইয়ের করা গোলটি আজীবন মনে রাখব।’

শোকাহত আরেক ফুটবলার অমলেশ সেন প্রিয় বন্ধুর স্মৃতিটা কোনো দিন ভুলতে পারবেন না, ‘স্কুল থেকেই আমাদের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক। আবাহনীতে আমার পাস থেকে সালাউদ্দিন অনেক গোল করেছে। গোল করায় পিছিয়ে ছিল না শামসুও।’

সাত ভাইয়ের চতুর্থজন আমিনুল ইসলাম কচি খেলেছেন ওয়ারী, আজাদে। তৃতীয়জন জালাল উদ্দিন জালু ওয়ান্ডারার্সে। সব ভাইয়েরাই রাজশাহী ফুটবল লিগে খেলেছেন। ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয় শামসুর বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা হয়নি। তবে পাকিস্তান যুবদলের হয়ে রাশিয়া সফর করেছেন।

আমাদের রাজশাহী অফিস জানিয়েছে, ছেলে খালেদ মাসুদ মৃত্যুর খবর পেয়েই ঢাকা থেকে রাজশাহী ছুটে আসেন হেলিকপ্টারে করে। এশার নামাজের পর আলুপট্টি মোড়ে জানাজা শেষে নগরের টিকাপাড়া কবরস্থানে শামসুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছে বাফুফে ও আবাহনী।