
উঁচু ক্যাচ উঠল অনেক। তার মধ্যে কিছু তো বেশ কঠিন। উল্টো দৌড়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে নিতে হচ্ছিল ক্যাচগুলো। অনুশীলনের এই ক্যাচিং মহড়ায় কাল বেশ কিছু ক্যাচই ম্যাচের মতো হাত থেকে ফসকে গেল।
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরের নেট থেকে বোলিং-ব্যাটিং শেষে কাল ক্যাচ অনুশীলনে যোগ দেওয়াটা বাধ্যতামূলক ছিল বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারের জন্য। মূল মাঠের একদিকে ফিল্ডিং কোচ কোরি রিচার্ডস ও অন্যদিকে আপৎকালীন সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ব্যাট হাতে সমানে উঁচু ক্যাচ তুলে চলেছেন। খেলোয়াড়েরা দৌড়ে দৌড়ে ধরার চেষ্টা করছেন সেগুলো।
‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’-এর সাক্ষাৎ প্রমাণ পাওয়া গেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে। এ নিয়ে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ বাংলাদেশ দল। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অন্তত এই জায়গায় আর ভুল করতে চায় না বাংলাদেশ দল। সে জন্যই কাল অনুশীলনে ক্যাচ প্র্যাকটিসে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হলো। সঙ্গে ‘থিওরি ক্লাসে’ কোরি রিচার্ডস এটাও বললেন যে ফিল্ডিংয়ে মনোসংযোগই পারে ক্যাচ মিসের অভিশাপ থেকে বাঁচাতে।
এটুকু পড়লে মনে হতে পারে, আগের ম্যাচের ভুল বলতে কেবল ক্যাচ মিসই। কিন্তু প্রতিপক্ষের ১৮০ রান তাড়া করে জিততে না পারার ব্যর্থতাও কি কম বড়! বাংলাদেশ দল অবশ্য আরেকটা নতুন ম্যাচে নামার আগে এত বেশি পুরোনো জঞ্জাল ঘাঁটতে চাচ্ছে না। সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা শামসুর রহমান বলে দিলেন, ‘আমরা নিজেরা কথা বলেছি, আলোচনা হয়েছে যে আমাদের হাত থেকে ম্যাচ ছুটে গেছে। কিন্তু সেটা নিয়ে পড়ে থেকে লাভ নেই। ওই হার থেকে অনেক শেখার আছে। পরের দুই ম্যাচে ভুলগুলো শোধরানোর চেষ্টা করব।’ ক্যাচ মিসের মতো ভুল তো আছেই, চাপ নিতে পারার সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। দলের মধ্যেও কথা হচ্ছে এ নিয়ে। এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য এই শ্রীলঙ্কা সিরিজই পারত আত্মবিশ্বাসের রসদ জোগাতে। চট্টগ্রাম টেস্টে সেটি কিছুটা মিললেও টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডেতে শুধু জয়ের সুবাস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। সেই দুঃখ ভুলে যাওয়ার সুযোগ তিন দিনের মধ্যে শেষ দুটি ম্যাচ। সংবাদ সম্মেলনে শামসুরও বলছিলেন, ‘কোচ অনেকবারই বলেছেন; অধিনায়ক-সিনিয়ররাও বলেছেন কীভাবে খেলতে হবে। চাপের সময় কীভাবে খেলতে হবে, এসব নিয়ে কথা হচ্ছে। সামনে এশিয়া কাপ, ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি আসছে, এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ইতিবাচক ফল করব আশা করি।’
শেষ দুই ম্যাচের মধ্যে আজকেরটাই হয়ে যেতে পারে সিরিজ নির্ধারণী। শ্রীলঙ্কা এ ম্যাচ জিতলে যে সিরিজের মীমাংসা হয়ে যাবে! আর বাংলাদেশ জিতলে সিরিজে সমতা এসে শেষ ম্যাচটা হয়ে যাবে ‘ফাইনাল’। টি-টোয়েন্টি সিরিজসহ গত তিন ম্যাচেই জিতি-জিতি করে জিতছে না বাংলাদেশ দল। আজই সিরিজ জিততে চান কি না, এমন এক প্রশ্নে সে কারণেই হয়তো ঝুঁকি নিলেন না সংবাদ সম্মেলনে আসা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার সাচিত্রা সেনানায়েকে। অস্ফুট স্বরে শুধু বললেন, ‘হয়তো...’।
দিবারাত্রির ম্যাচ বলে একাদশ নির্বাচনের জন্য খেলার দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করার সুযোগ পাচ্ছে দলগুলো। বাংলাদেশ দলের জন্য এই সুযোগটা দরকারও ছিল। কারণ দলে চোটাঘাত যেমন আছে, আছে বাজে ফর্মের কারণে দোদুল্যমান খেলোয়াড়ও। তবে একাদশ নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে তামিম ইকবালের ঘাড়ের চোটের কারণে। কাল মাঠে এলেও অনুশীলন করেননি তামিম। তার পরও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, আজ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তামিমের খেলার ব্যাপারে।