Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশকে পাকিস্তানি সমর্থকদের ধন্যবাদ!

সমর্থকেরা অধিনায়ক সরফরাজের পদত্যাগ চাইছেন। ছবি: এএফপি
>বাংলাদেশের কাছে এ নিয়ে টানা চার ওয়ানডে হারল পাকিস্তান। সে যন্ত্রণা ভুলে পাকিস্তানি সমর্থকেরা আশার দিক খুঁজে নিচ্ছে, ভারতের কাছে তো টানা তিন ম্যাচ হারতে হচ্ছে না! সমর্থকেরা অধিনায়ক সরফরাজের পদত্যাগ চাইছেন। তাঁকে দেওয়া হয়েছে ট্যাক্সি চালানোর প্রস্তাবও

বাগ্‌যুদ্ধ চলছিল আসলে ভারত ও পাকিস্তান সমর্থকদের মধ্যে। ভাষাগত নৈকট্যের কারণে দুই দেশের সমর্থকদের কথাবার্তার আদান-প্রদান সহজ। আর রেষারেষির সম্পর্কটাও তো অনেক পুরোনো। ভারতের কাছে টানা দুই ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণের পর পাকিস্তানি সমর্থকেরা এই বলে গলাবাজি করেছিল, ফাইনালে কিন্তু হারাতে পারবে না! সাক্ষী হিসেবে তারা হাজির করছিল পরিসংখ্যান। গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল তো টাটকা উদাহরণই।

পাকিস্তান আসলে টুর্নামেন্টের ফাইনালে বরাবরই ভারতের বিপক্ষে ফেবারিট। এই দুই দলের মুখোমুখি সর্বশেষ চারটি ফাইনালে জয়ী দলের নাম পাকিস্তান। ওয়ানডে টুর্নামেন্টে এই দুই দল ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে, পাকিস্তান জিতেছে ৮ বার। গত ২০ বছরে ভারতের কাছে কোনো টুর্নামেন্ট ফাইনাল হারেনি পাকিস্তান।

এত সব তত্ত্ব-তালাশ এনে হাজির করলে যে কেউ একটু ভড়কে যাবে। ভারতের সমর্থকেরা তা কিছু গিয়েও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এবার ভারতকে সুযোগ করে দিল পাকিস্তানের কাটা ঘায়ে আয়োডিনযুক্ত লবণ ছিটানোর। টুইটারে একটি ট্রল বেশ ভাইরাল হয়েছে। তাতে এক ভারতীয় সমর্থক বলছে, ‘পাকিস্তানি সমর্থকেরা ঠিকই বলেছে। আমরা ওদের এশিয়া কাপের ফাইনালে কিছুতেই হারাতে পারব না। পারবে কী করে, ফাইনালের আগেই তো বিদায় নিল পাকিস্তান!’

এশিয়া কাপ পাকিস্তানের কাছে বরাবরই এক হিসেব না-মেলা এক টুর্নামেন্ট হয়ে আছে। ৬ বার ট্রফি জিতেছে ভারত, ৫ বার শ্রীলঙ্কা। সেখানে পাকিস্তান জিতেছে মাত্র দুবার। ২০১২ সালের ট্রফি জয়টাও এসেছে বাংলাদেশকে মাত্র ২ রানে হারিয়ে। এবারের আসরে পাকিস্তানকে বলা হচ্ছিল টপ ফেবারিট। আরব আমিরাত একঅর্থে পাকিস্তানের হোম ভেন্যু। সেই তারাই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল হংকং আর আফগানিস্তানকে হারিয়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতেছেও হারতে হারতে।

মাত্র এক বছর আগে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতার পর যে দলটাকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছেছিল, সেই দলটাকে নিয়েই চরম হতাশ পাকিস্তানি সমর্থকেরা। ভারতীয়দের ট্রলের সূত্র ধরে তারাও নিজেরাই নিজেদের পরিহাস করছে যেন। যেমন এক পাকিস্তানি সমর্থক বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। ধন্যবাদ জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের সৌজন্যেই ভারতের কাছে হারের হ্যাটট্রিকের অপমান থেকে তো বেঁচে গেল দল!’ ভারতের কাছে টানা তিন ম্যাচ হারের অভিজ্ঞতা খুব বেশিবার হয়নি পাকিস্তানের। কিন্তু সেদিকে তাকিয়ে আশা খুঁজতে গিয়ে যে বাংলাদেশের কাছে টানা চার ম্যাচ হারতে হলো, সে খেয়াল আছে?

পাকিস্তানি সমর্থকদের হতাশার কেন্দ্রে দলের অধিনায়ক সরফরাজ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতার পর আবেগে যে সরফরাজকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচছিল সবাই, এখন পারলে যেন তাঁকে ছুড়ে ফেলা হয়। সরফরাজকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে ফেলার গণদাবি উঠে গেছে। একজন পরিসংখ্যান দিয়ে মন্তব্য করেছেন, ৯৫ ম্যাচে মাত্র দুটি সেঞ্চুরি আর আটটি ফিফটি, এমন একজন খেলোয়াড়ের অধিনায়ক তো দূরের কথা, দলেই তো জায়গা পাওয়ার কথা নয়। গত ম্যাচেও সরফরাজের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ১২ রানে বাংলাদেশের ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর চতুর্থ উইকেটে যে ১৪৪ রানের জুটি হলো, এর পেছনে মুশফিক-মিঠুনের কৃতিত্বের চেয়ে সরফরাজের দুর্বল নেতৃত্ব বড় করে দেখছে পাকিস্তানের সমর্থকেরা।

সরফরাজকে সবচেয়ে তীব্র খোঁচাটা দিয়েছে দুবাইভিত্তিক পাকিস্তানি ট্যাক্সি-সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কারিম পাকিস্তান। তাদের অফিশিয়াল টুইটার পেজে কারিম পাকিস্তান পরোক্ষে সরফরাজকে ক্রিকেট ছেড়ে ট্যাক্সি চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে। লিখেছে: এখন আমাদের ক্যাপটেন হিসেবে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কী ভাবছেন সরফরাজ?