Thank you for trying Sticky AMP!!

রেকর্ড থেকে বাঁচতে পারবেন খালেদ?

হতাশা আর লুকাতে পারলেন না খালেদ। ছবি: বিসিবি

শেষ রক্ষা হয়নি আবু জায়েদের। ১৬৩ ওভারের শেষ বলে বিরতির হাতছানি ছিল ওদিকে দ্বিশতকের অপেক্ষায় থাকা কেন উইলিয়ামসনের দরকার ৪ রান। আবু জায়েদের শেষ বলটা বাউন্ডারিতে পাঠালেন কিউই অধিনায়ক। নিজের ডাবল সেঞ্চুরিটা তো হলোই, সে সঙ্গে আবু জায়েদকেও দিলেন নতুন এক হতাশার স্বাদ। স্পেলের শেষ বলে এসে সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন এই পেসার।

বোলিংয়ের সঙ্গে সেঞ্চুরি শব্দটা উচ্চারিত হওয়ার পরই বুঝে ফেলার কথা, কোন ধরনের সেঞ্চুরির কথা হচ্ছে। চতুর্থ টেস্ট খেলতে এসে এই প্রথম এক শ রানের বেশি খরচ করেছেন এই ডান হাতি পেসার। তাঁর দুঃখটা একটু বেশি, কারণ ৩০ ওভার খেটে ১০৩ রান দিয়েও কোনো উইকেটের দেখা পাননি! যে সান্ত্বনা মেহেদি হাসান মিরাজ অন্তত নিজেকে দিতে পারছেন। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে খরচে বোলিং করার পরও (২৪৯) নামের পাশে অন্তত ২টি উইকেট দেখাতে পারছেন।

টেস্টের এক ইনিংসে তিন অঙ্কের বেশি রান দিয়েও উইকেট শূন্য আবু জায়েদ। বাংলাদেশি বোলারদের জন্য এমন কিছু অবশ্য নতুন নয়। নির্মম বাস্তবতা হলো, টেস্টের এক ইনিংসে এক শ বা এর বেশি রান দিয়েও উইকেটশূন্য থাকার ঘটনা এর আগেও ৩৫বার দেখেছে বাংলাদেশ। আবু জায়েদের ঘটনাটি শুধুমাত্র সংখ্যাটা এক বাড়িয়েছে। বোলার হিসেবে জায়েদের সঙ্গীর সংখ্যা অবশ্য একটু কম। এ যন্ত্রণায় বাংলাদেশের মোট ২৩জন পুড়েছেন।

একটুর জন্য যন্ত্রণাটা পেয়েছেন বলেই জায়েদের প্রসঙ্গ টানা। না হলে হ্যামিল্টন টেস্টেই ২২তম বোলারের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে জায়েদের মতোই ৩০ ওভার বল করে খালেদ আহমেদ দিয়েছেন ১৪৯ রান। ১০৭ রান দিলেও অভিষেকে অন্তত উইকেটের দেখা পেয়ে গেছেন ইবাদত হোসেন। টেস্ট ক্রিকেটে এ নিয়ে তিন ইনিংসে বল হাতে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন খালেদ। এখনো উইকেটের দেখা মেলেনি। তবে আগের দুই ইনিংসে সান্ত্বনা ছিল। ফিল্ডারদের অসহযোগিতায় উইকেট না মিললেও অন্তত রান খরচে তিন অঙ্ক পার করেননি। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম বিদেশ সফরেই সে সান্ত্বনাটা বিদায় নিয়েছে তাঁর। একে তো পুরো ইনিংসে খুব একটা ভালো বল করেননি, রান আটকানোর কাজটাও করতে পারেননি।

ওতেই একটি লজ্জার রেকর্ডে স্থায়ীভাবে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। বাংলাদেশি পেসার হিসেবে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দিয়েও উইকেটশূন্য থাকার রেকর্ডটি এখন খালেদের। সব মিলিয়েও দুইয়ে আছেন খালেদ। একে আছেন যেকোনো হিসেব মিলিয়েই যিনি সর্বোচ্চ রান দিয়েছেন সেই মিরাজ। গত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পচেফস্ট্রুমে ১৭৮ রান খরচ করেও কোনো উইকেট পাননি এই অফ স্পিনার।

মিরাজকে আপাতত এখানে শীর্ষে পেয়েও ঠিক স্বস্তি মিলছে না খালেদের। অন্য একটা তালিকার শীর্ষে যে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে! বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে কোনো উইকেট না পেয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন আনোয়ার হোসেন মনির। দুর্বল ব্যাটিং ও বোলিং লাইনআপের অংশ হয়ে মাত্র তিন টেস্টই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাতে বোলিং করার সুযোগও হয়েছে মাত্র তিনবার। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্টে ৯৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন। সেবার পার পেয়ে গেলেও ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে আর রক্ষা হয়নি। লর্ডসে ১১০ রান দিয়েও ভাগ্যে কোনো উইকেট জোটেনি। পরের টেস্টে তো দুঃস্বপ্ন দেখেছেন। ১৫ ওভারেই দিয়েছিলেন ১০২ রান! এবারও যে কোনো উইকেট পাননি সেটা এতক্ষণে বুঝে ফেলার কথা। ৩০৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পেয়ে ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে তাঁর।

হ্যামিল্টনে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে খালেদের। এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৪২ রান দিয়ে ফেলেছেন। আজ হ্যামিল্টনে টপকে গেছেন আলমগির কবিরকে। সম্ভাবনাময় এক বোলার হয়েও টেস্ট ক্রিকেট থেকে শুধু হতাশা নিয়ে যাঁকে যেতে হয়েছিল। দেশের মাটিতে আশার ঝলক দেখানো খালেদ নিশ্চয় চাইবেন এ দুজনের পথে না হাঁটতে!