হারারে টেস্টের আগে বাংলাদেশ দলের ‘ব্যাটসম্যান-ভারী’ একাদশ সাজানো নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। হারারের কন্ডিশনে তিন পেসারের জায়গায় বাংলাদেশ খেলিয়েছে দুই পেসার। সেটা নিয়েও টিম ম্যানেজমেন্টকে শুনতে হয়েছে সমালোচনা। আবার টসে জিতে বাংলাদেশের আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েও হয়েছে বিতর্ক। হারারে টেস্ট জয়ের পর এসব সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করেছেন টেস্ট অধিনায়ক। তবে এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ম্যাচের আগে সিদ্ধান্ত যাই হোক, দিন শেষে দল জিতলে সব সিদ্ধান্তই ঠিক।
হারারে টেস্ট দিয়ে দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সাকিবের বোলিং অধিনায়ককে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান যোগ করতে সাহায্য করেছে। চাইলে একজন বোলারও বাড়িয়ে দল সাজাতে পারতেন মুমিনুল। কিন্তু হারারের উইকেটের প্রথম দিনের চরিত্র দেখে ব্যাটিং নিরাপত্তা বাড়ায় বাংলাদেশ। একাদশে যোগ করা হয় অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে।
মুমিনুলের ব্যাখ্যা, ‘এই কন্ডিশনে আমার মনে হয়েছিল আটজন ব্যাটসম্যান…এখন তো সাকিব ভাই আছেন। সাকিব ভাই না থাকলে হয়তো দলের সমন্বয় একটু ভিন্ন হতো। উইকেট দেখে মনে হয়েছে হয়তো প্রথম দিন একটু সমস্যা হবে। দু-তিনজনের সমস্যা হবে হয়তো। কিন্তু আমাদের যেহেতু লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ, আমরা হয়তো সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। আলহামদুলিল্লাহ আমরা সেখান থেকে বের হতে পেরেছি।’
বাংলাদেশ হারারে টেস্টের প্রথম দিন ১৩২ রান তুলতেই হারায় ৬ উইকেট। সেখান থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে সেই বাড়তি ব্যাটসম্যানের বদৌলতে। এমন উইকেটে বাংলাদেশ চাইলে টসে জিতে বোলিং করতে পারত। কিন্তু চতুর্থ ইনিংসের উইকেটে রান তাড়া করতে চাননি মুমিনুল। উল্টো ব্যবহৃত উইকেটে জিম্বাবুয়েকে স্পিন দিয়ে বাঁধতে চেয়েছিলেন মুমিনুল, ‘টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল, যেহেতু উইকেট শক্ত ছিল। সূর্য ভালো তাপ দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চতুর্থ, পঞ্চম দিনে হয়তো স্পিনাররা একটু সাহায্য পাবে। স্পিনারদের প্রতি আমাদের সবার আস্থা আছে, একটু স্পিন পেলে হয়তো সেটা আমরা কাজে লাগাতে পারব।’
প্রশ্ন উঠেছে টেস্ট দলের মূল পেসার আবু জায়েদকে বসিয়ে ইবাদত হোসেনকে একাদশে রাখা নিয়ে। এই সিদ্ধান্তের পেছনেও উইকেটের চরিত্রকে কারণ হিসেবে দেখান মুমিনুল। ফ্ল্যাট উইকেটে জায়েদের সুইং ও সিম বোলিংয়ের চেয়ে ইবাদতের গতি বেশি কার্যকর হবে বলে ধারণা ছিল মুমিনুলের, ‘উইকেট অনেক ফ্ল্যাট ছিল। স্লো ছিল। এমন উইকেটে রাহির চেয়ে একজন জোরে বল করা পেসার দরকার ছিল। এমন না যে রাহিকে আমরা একেবারে ফেলে দিচ্ছি। এই উইকেটে একটু জোরে বল করা পেসার দরকার ছিল, তাই ইবাদতকে নেওয়া।’
হারারে টেস্টের আগে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি নিয়েও হয়েছে অনেক আলোচনা। টানা এক মাস ঢাকা প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ খেলে হুট করেই টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। এমন অপ্রতুল প্রস্তুতি নিয়েও ভালো করার ব্যাখ্যাটা মুমিনুল দিয়েছেন এভাবে, ‘হয়তো এখানে আসার আগে কেউ লাল বলে খেলেনি। তবে সবাই টি-টোয়েন্টিতে কম বেশি রান করেছে। কিছুটা আত্মবিশ্বাস তো সেখান থেকে পাওয়াই যায়। আমরা এখানে যেই প্রস্তুতি ম্যাচটা খেলেছিলাম, সেখানে আমরা সবাই অনেক বেশি সিরিয়াস ছিলাম। কারণ, আমরা জানতাম যে এটা ছাড়া আমাদের প্রস্তুতির আর কোনো সুযোগ ছিল না। যার কারণে আমাদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। দিন শেষে ম্যাচ জিতলে সবই ওকে।’