Thank you for trying Sticky AMP!!

৩৯১১ দিন পর এসে করলেন ০ রান

ফাওয়াদের ব্যাটিংয়ে দাঁড়ানোর অদ্ভুত ভঙ্গি। ছবি: রয়টার্স

সব দেখে মনে হতে পারে, বেকার খাটনি আর কাকে বলে!

প্রায় ১১ বছর এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। একেবারে নির্দিষ্ট করে দিনের হিসাবে বললে ৩৯১১ দিন। সেই যে ২০০৯ সালের নভেম্বরে ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলেন ফাওয়াদ আলম, এত বছরে আর পাকিস্তানের সাদা জার্সিটা গায়ে চড়ানো হয়নি। এ সময়ে পাকিস্তান খেলেছে ৮৮টি টেস্ট। অবশ্য পাকিস্তানের জার্সিই তাঁর গায়ে উঠেছে কালেভদ্রে। টি-টোয়েন্টি সর্বশেষ খেলেছেন, সে-ও ১০ বছর আগের কথা। সর্বশেষ ওয়ানডে ২০১৫ সালের এপ্রিলে।

সেই ফাওয়াদ আজ সাউদাম্পটনে টেস্ট দিয়ে ফিরলেন পাকিস্তান দলে, টেস্টে ১১ বছর পর। কিন্তু ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্টটি খেলতে নামা ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ফেরাটা হলো কী বিবর্ণ! টেস্টের সংখ্যার সমান হলো তাঁর ইনিংসের স্থায়িত্ব—৪ বল। টেস্ট ক্যারিয়ারে রানের সংখ্যা তিন টেস্ট শেষে ২৫০ ছিল, এই ইনিংস শেষেও তা-ই। কোনো রান না করেই ফিরেছেন ফাওয়াদ। এই প্রতিবেদন লেখার সময় তৃতীয় দফা বৃষ্টিতে খেলা আবার বন্ধ। ফাওয়াদের পর আর পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যান আউট হননি। ৪৫.৪ ওভারে পাকিস্তানের রান ৫ উইকেটে ১২৬। ক্রিজে ২৫ রানে অপরাজিত বাবর আজম, তাঁর সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত ৪ রানে।

এত দিন পর ফেরায় তাঁর দিকে এমনিতেই নজর ছিল সবার। তবে তা না থাকলেও সম্ভবত হতো। ফাওয়াদ ব্যাটিংয়ে নেমে যে ‘স্টান্স’ নিয়েছেন, সেটিই তাঁর দিকে নজর টেনে নিয়ে যেতে যথেষ্ট। ব্যাটিংয়ের সময় সাধারণত ব্যাটসম্যানদের শরীর পয়েন্টের দিকে মুখ করে থাকে। ফাওয়াদ দাঁড়ালেন অদ্ভুত ভঙ্গিতে, যে ভঙ্গিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ব্যাটসম্যান শিবনারায়ণ চন্দরপল বা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক মারকুটে ওপেনার হার্শেল গিবসকে দাঁড়াতে দেখা যেত—বোলারের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে! যেন বক্সিং রিংয়ে প্রতিপক্ষের দিকে ঘুষি পাকিয়ে দাঁড়ানো কোনো বক্সার।

বোলারকে বিভ্রান্ত করতেই এভাবে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু এই ভঙ্গিতে ব্যাট করতে ক্রিজে নাড়াচাড়া করতে হয়। আর বলে যদি গতি আর সুইংয়ের হেরফের থাকে, তবে এই ‘স্টান্সে’ ব্যাটসম্যানই উল্টো ঝামেলায় পড়তে পারেন। ফাওয়াদও পড়লেন। তাঁকে ওই ভঙ্গিতে দাঁড়াতে দেখে স্টুয়ার্ট ব্রড ‘রাউন্ড দ্য উইকেটে’ বল করতে এলেন। মুখোমুখি প্রথম বলে ব্রডকে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেললেন ফাওয়াদ, দ্বিতীয় বলটা ছেড়ে দিলেন, তৃতীয় বলে পরাস্ত। ব্রডের ওভার সেখানেই শেষ।

পরের ওভারে এলেন ক্রিস ওকস। বাবর আজম প্রথম তিন বল খেলার পর চতুর্থ বলে ৩ রান নেন। পঞ্চম বলেই বিপদ। ওকসের বল লাগল ফাওয়াদের প্যাডে। আবেদনে আম্পায়ার প্রথমে সাড়া দেননি। কিন্তু ইংল্যান্ডের রিভিউতে দেখা গেল, বল স্টাম্পের লাইনেই পড়েছে, মাঝের স্টাম্পের ওপরের দিকের অংশেই লাগত। সিদ্ধান্ত পাল্টাল—আউট! ফাওয়াদের ১১ বছরের অপেক্ষার শেষ ৪ বলে ০ রানে।

এখন দ্বিতীয় ইনিংসে কিছু করে যদি ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেন ফাওয়াদ।