Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি

‘আমার কোনো ম্যাজিক নেই, সবই আল্লাহর রহমত’

তখনো ইনিংসের দুই বল বাকি। কিন্তু সিলেট স্ট্রাইকার্সের ড্রেসিংরুমের সামনে উদ্‌যাপন শুরু হয়ে গেছে। ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফরা একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরছেন। ওদিকে রুবেল হোসেনের আরও একটি বল হয়ে গেল কোনো রান ছাড়া। শেষ বলটা সিলেটের বিপিএল ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার উদ্‌যাপনটা আরও মধুর করে দিল।
রংপুর রাইডার্সের দাসুন শানাকার মিডল স্টাম্প উপড়ে ফেলে ইনিংস শেষ করেন রুবেল। সঙ্গে সঙ্গে পুরো ডাগআউট ফাঁকা—সবাই দৌড় দিলেন মাঝমাঠে। আর ‘সিলেট’, ‘সিলেট’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। এর মধ্যেই চলল ট্রাইকার্সের প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার উল্লাস।

সিলেটের জয় উদযাপন

Also Read: মাশরাফির নেতৃত্বে সিলেট প্রথমবার ফাইনালে

একপর্যায়ে সতীর্থদের কয়েকজন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে কাঁধে তুলে নিলেন। ড্রেসিংরুম পর্যন্ত মাশরাফিকে আর হাঁটতে হলো না। সতীর্থদের কাঁধে চড়েই ড্রেসিংরুম পর্যন্ত এলেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক, বিপিএলেরও সফলতম মাশরাফিই। ১৬ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে পঞ্চমবারের মতো ফাইনাল খেলতে নামবেন তিনি। এটা ‘মাশরাফি-ম্যাজিক’ নয় তো কি!

ম্যাচসেরা তানজিম হাসান

যদিও মাশরাফি এসবে বিশ্বাস করেন না। সংবাদ সম্মেলনে এসে মাশরাফির অধিনায়কত্বের সঙ্গে সাফল্যের যোগসূত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এক গালে হেসে বললেন, ‘আমার কোনো ম্যাজিক নেই। সবই আল্লাহর রহমত। ফাইনালে প্রতিপক্ষ আমাদের চেয়ে অনেক অনেক ভালো দল। এর মানে এই নয় যে আমরা ভালো খেলতে পারব না। আমি আশা করি, দলের সবাই আরও একটা ম্যাচ ভালো খেলবে।’


রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানোর কৃতিত্বটা তরুণ পেসার তানজিম হাসানকে দিয়েছেন মাশরাফি। তরুণ এই পেসার চাপের ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। তাঁর করা ১৮তম ওভারেই দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সিলেটের অধিনায়ক, ‘আমরা জানতাম যে উডের একটা ওভার বাকি আছে। তাকিয়ে ছিলাম সাকিবের দিকে। সে ওই ওভারে যদি ৮ রানও দেয়, তাহলেও আমরা ম্যাচে থাকব। সে ওই সময় আউটস্ট্যান্ডিং বোলিং করেছে। তরুণ ছেলে। প্রথম বিপিএল খেলছে। ওর ওই ওভারের জন্যই আমরা ম্যাচে ফিরতে পেরেছি।’

সিলেটের জয় উদযাপন

সিলেটের সমর্থকদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন মাশরাফি, ‘প্রতিবারই সিলেটের দর্শকেরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করেন। এবার শুরুর দিকে যখন একটা-দুইটা ম্যাচ জিতেছি, তখন থেকেই সিলেটের সাপোর্ট পেয়েছি। এমন ব্লাইন্ডলি সাপোর্ট আমি বিপিএলে আর দেখিনি। আমি বিপিএলে অন্য দলের হয়েও খেলেছি। কিন্তু এমন দেখিনি।’

Also Read: ৩০০ টাকায় দেখা যাবে বিপিএল ফাইনাল

আমি যতক্ষণ উপভোগ করছি, যতক্ষণ শরীর সাপোর্ট দিচ্ছে, আমি খেলছি। আমি বলে খেলা ছাড়ার লোক না। প্রেস কনফারেন্স করে, বলে ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। যদি টুর্নামেন্টের মাঝে মনে হয় খেলব না, তাহলে খেলব না।
মাশরাফি

আরও একটি বিপিএল যখন শেষার্ধে, তখন মাশরাফির স্পাইকজোড়া তুলে রাখার প্রসঙ্গও সামনে এল। ৩৯–এর মাশরাফি এই বিপিএল খেলেই পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমার জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছে নেই। আমি যতক্ষণ উপভোগ করছি, যতক্ষণ শরীর সাপোর্ট দিচ্ছে, আমি খেলছি। আমি বলে খেলা ছাড়ার লোক না। প্রেস কনফারেন্স করে, বলে ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। যদি টুর্নামেন্টের মাঝে মনে হয় খেলব না, তাহলে খেলব না। এমন আলোচনা আপাতত কেয়ার করার দরকার আছে বলে মনে করি না।’

প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলবে সিলেট

সিলেটের উদ্‌যাপনে অবশ্য রংপুরের হতাশা ঢাকা পড়েনি। রান তাড়ার চাপের মুখে আউট হয়ে দলটির অধিনায়ক নুরুল হাসান মেজাজ হারিয়েছেন। কোচ সোহেল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী ইশতিয়াক সাদেকও আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। রংপুরের হতাশার কারণ মুশফিকুর রহিম। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মুশফিক ইনিংসের শুরুতে মাঠে নামেননি। তাঁর বদলে ১৭ ওভার পর্যন্ত উইকেটকিপিং করেছেন আকবর আলী। এরপর মুশফিক মাঠে নামলেও জাকির হাসানকে উইকেটকিপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কিপার বদলাতে গিয়ে প্রায় ৫-৬ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। রংপুরের দাবি, সে সময় দলটির রান তাড়ায় ছন্দপতন হয়।

ওই সময়টায় খেলার মোমেন্টাম আমাদের দিকে ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় জাকির বের হলো (কিপিং প্যাড, গ্লাভস পরতে)। উইকেটকিপার বদল হলো। একটা মোমেন্টাম শিফট ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় মোমেন্টাম আসলে ব্রেকডাউন হয়ে যায়
রংপুরের কোচ সোহেল ইসলাম


এ নিয়ে সোহেল ও ইশতিয়াককে ফোর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ম্যাচ শেষে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে রংপুরের কোচ সোহেল বলেছেন, ‘ওই সময়টায় খেলার মোমেন্টাম আমাদের দিকে ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় জাকির বের হলো (কিপিং প্যাড, গ্লাভস পরতে)। উইকেটকিপার বদল হলো। একটা মোমেন্টাম শিফট ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় মোমেন্টাম আসলে ব্রেকডাউন হয়ে যায়। এটা টি-টোয়েন্টিতে একটা দলের জন্য একটা যখন ফ্লো থাকে, তখন সেটা বাধাগ্রস্ত হলে এ রকম হতে পারে (ধস)। সেটাই হয়েছে।’

Also Read: বিপিএলের ‘নতুন’ পাঁচ