চলতি বছর ওয়ানডেতে ‘টি-টোয়েন্টি’ খেলা ক্লাসেন ছাড়িয়ে গেছেন ডি ভিলিয়ার্স–জয়াসুরিয়াদের
বছরটা ওয়ানডে ক্রিকেটের। সম্প্রতি শেষ হয়েছে এ সংস্করণের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ওয়ানডে বিশ্বকাপও। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে চলতি বছর ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার মতো পরীক্ষিত ক্রিকেটাররা। আবার নিজের নামটা আলাদা করে চিনিয়েছেন শুবমান গিল, পাতুম নিশাঙ্কার মতো অপেক্ষাকৃত তরুণেরাও।
গড় ও স্ট্রাইক রেটে নজর কেড়েছেন তাঁরা। তবে এ বছরে হাইনরিখ ক্লাসেন একদিক থেকে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। না, ক্লাসেন চলতি বছর ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নন। তাঁর গড়ও সবচেয়ে বেশি নয়। তাঁর চেয়ে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় এগিয়ে আছেন আরও ১৪ জন। এরপরও ক্লাসেন নিজেকে আলাদা করেছেন স্ট্রাইক রেটে।
Also Read: বাংলাদেশের ভুল ধরিয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ড কোচ
এ বছরে ওয়ানডেতে ক্লাসেন ব্যাট করেছেন ১৪০.৬৬ স্ট্রাইক রেটে। যেটাকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও ভালো মনে করা হয়। চলতি বছরে ক্লাসেন ২২ ইনিংসে করেছেন ৯২৭ রান। ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন বলে যে গড়টা কম, তা নয়—৪৬.৩৫। সর্বোচ্চ রানের তালিকায় ক্লাসেনের ওপরে থাকা ১৪ জনের কারও স্ট্রাইক রেটই ১১৩–এর বেশি নয়। ক্লাসেনের পর সর্বোচ্চ ১১৩.২৬ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন ক্লাসেনের সতীর্থ এইডেন মার্করাম। ২৪ ইনিংসে ৫১.৬৫ গড়ে তাঁর রান ১০৩৩।
২০২৩ সালে ক্লাসেনের এমন স্ট্রাইক রেটের কারণ বেশ কয়েকটি অবিশ্বাস্য ইনিংস। গত সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নে ১৩টি করে চার ও ছয়ে ৮৩ বলে ১৭৪ রান করেছিলেন ক্লাসেন। ২৫ ওভার বা এর পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের ইনিংস ক্লাসেনের ১৭৪-ই।
এরপর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ৬৭ বলে ১০৯ রান। এর পরের ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪৯ বলে ৯০ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস। যে কারণে মূলত ক্লাসেনের স্ট্রাইক রেট এমন চূড়ায় উঠেছে। স্পিন কিংবা পেস, সবার বিপরীতেই স্বভাবসুলভ ক্রিকেট খেলেছেন ক্লাসেন। স্পিনারদের বিপক্ষে ৩৪২ রান করেছেন ১৪১.৪১ স্ট্রাইকে রেটে। আর পেসারদের বিপক্ষে ৫৮৫ রান করেছেন ১৩৭ স্ট্রাইকে রেটে। এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনো ওয়ানডে না থাকায় পরিসংখ্যান পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
একটা পরিসংখ্যান দিলে ক্লাসেনের এমন স্ট্রাইক রেটের মাহাত্ম্য আরও বোঝা যাবে। এক পঞ্জিকাবর্ষে এর চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটে কেউ রান করেননি (কমপক্ষে ৯০০ রান)। এমনকি ২০১৫ সালে অবিশ্বাস্য বছর কাটানো ডি ভিলিয়ার্সও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেননি। তিনি রান করেছিলেন ১৩৭.৯১ স্ট্রাইক রেটে। তাঁর নামটা আলাদা করে বলার কারণ আছে।
সেই বছরে ওয়ানডেতে ৪৪ বলে ১৪৯ ও ৬৬ বলে ১৬২ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। ১৮ ইনিংসে ৫ শতক ও ৫ অর্ধশতকে সাবেক এই প্রোটিয়া অধিনায়ক করেছিলেন ১১৯৩ রান, গড় ৮০ ছুঁই ছুঁই। ইংল্যান্ড ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ২০১৮ সালে ওয়ানডেতে রান করেছিলেন ১১৮.২২ স্ট্রাইক রেটে। এই তালিকার পঞ্চম স্থানে থাকা সনাৎ জয়াসুরিয়া ১১৩.৫৯ স্ট্রাইক রেটে রান করেছিলেন ১৯৯৭ সালে।
Also Read: ক্লাসেন জানতেন, ইংলিশরা ভেঙে পড়বে
চলতি বছরটা ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মারও বিশেষ কেটেছে। এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে রান করা ব্যাটসম্যানের তালিকায় তিনি আছেন চতুর্থ স্থানে। ২৬ ইনিংসে ৫২.২৯ গড়ে ১২৫৫ রান করা রোহিত রান তুলেছেন ১১৭.০৭ স্ট্রাইক রেটে।
বছরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক গিল ব্যাট করেছেন ১০৫ স্ট্রাইক রেটে।
২৯ ইনিংসে ৬৩.৩৬ গড়ে তাঁর রান ১৫৮৪। কোহলি ব্যাট করেছেন ৯৯ স্ট্রাইক রেটে। ২৪ ইনিংসে ৭২.৪৭ গড়ে রান করেছেন ১৩৭৭। শীর্ষ দশে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন বাবর আজম। ২৪ ইনিংসে ৪৬.৩০ গড়ে ১০৬৫ রান করা বাবরের স্ট্রাইক রেট ৮৪.৬৫।
Also Read: বাবরকে সরিয়ে শীর্ষে গিল