২০২৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক হবে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। এই আসর দিয়েই ১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরবে।
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম পরাশক্তি চীন অবশ্য ক্রিকেটে বেশ পিছিয়ে। দেশটির অলিম্পিক ক্রিকেটে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কিন্তু অলিম্পিকে ক্রিকেট আবারও যুক্ত হওয়ায় চীন নাকি এখন থেকেই লস অ্যাঞ্জেলেসে সোনা জয়ের পরিকল্পনা করছে। এমনকি তারা বিশ্ব ক্রিকেটেও প্রধান পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন স্টিভ ওয়াহ। লন্ডনে একটি বিপণন সংস্থা আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।
৫৯ বছর বয়সী স্টিভ ওয়াহর ভাষ্য, ‘অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে চীন একটি দল গড়ে তুলতে শুরু করেছে। তারা সোনা জয়ের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস।’
১৯৯৯ সালে স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ২০০৪ সালে তিনি যখন পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে বিশ্ব তখনো পরিচিত হয়ে ওঠেনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির আবির্ভাব আরও পরে। সময়ের বিবর্তনে এই সংস্করণ বিশ্ব ক্রিকেটে দাপট দেখাচ্ছে।
১২৮ বছর পর অলিম্পিকেও ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন হচ্ছে টি-টোয়েন্টি দিয়ে। ওয়াহও মনে করেন, টি-টোয়েন্টিই খেলাটিকে বদলে দিয়েছে এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছে, ‘টি-টোয়েন্টি এখন বিশাল। এটা বিলিয়ন ডলারের খেলা এবং এর পরিধি প্রতিদিন বাড়ছে। টেস্ট ক্রিকেট টিকে থাকবে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্ব শাসন করবে। খেলোয়াড়দের শিগগিরই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করা হবে। এমনকি টেস্ট খেলার জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হতে পারে।’
সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ক্রিকেটে ব্যাপক বিনিয়োগ করা প্রসঙ্গে ওয়াহ বলেছেন, ‘এটা রোমাঞ্চকর। খেলাটি বিশ্বের নতুন অংশে পৌঁছে যাচ্ছে এবং অলিম্পিক এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
অলিম্পিকে ক্রিকেট হয়েছিল একবারই। ১৯০০ সালে প্যারিসে ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিল মাত্র দুটি দল—গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স। দুই দিনের সেই ম্যাচে ফ্রান্সকে হারিয়ে সোনা জিতেছিল গ্রেট ব্রিটেন।
২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক দিয়ে ক্রিকেট ফিরবে, তা ২০২৩ সালের অক্টোবরে নিশ্চিত করেছিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। কোন খেলায় কয়টি করে দল খেলবে, মোট ইভেন্টের সংখ্যা কত হবে, কতজন করে খেলোয়াড় থাকবেন—সম্প্রতি এসব বিষয়ও চূড়ান্ত করেছে আইওসি। ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে নারী-পুরুষ উভয় বিভাগে মোট ছয়টি করে দল খেলবে। প্রতিটি দলে ১৫ জন করে খেলোয়াড় থাকবেন।
তবে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ক্রিকেটে কোন কোন দল খেলবে, সেটা আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ওপর ভিত্তি করে নাকি বাছাইপর্বের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে, তা এখনো জানানো হয়নি।
দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া যেমনই হোক, ক্রিকেটে শক্তিমত্তায় যোজন যোজন পিছিয়ে থাকা চীনের সেখানে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই স্টিভ ওয়াহ অলিম্পিক ক্রিকেটে চীনের সোনা জয়ের লক্ষ্যে কথা যতই বলুন না কেন, নিকট ভবিষ্যতে তা খুব কঠিন মনে হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার পোমোনা শহরের ফেয়ারপ্লেক্সে হবে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টি ইভেন্ট। দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে থাকলেও সেই ইভেন্টে খেলার কথা জানিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ।
এমনকি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দেওয়া বিরাট কোহলিও জানিয়েছেন, ভারতের হয়ে অলিম্পিকে সোনার পদক জয়ের আশায় এক ম্যাচের জন্য হলেও অবসর ভেঙে ফিরতেও পারেন।