
প্রথম ইনিংসে কেন উইয়ান মুল্ডার আর একটি উইকেট পেলেন না!
দক্ষিণ আফ্রিকান পেস বোলিং অলরাউন্ডারের এ নিয়ে কোনো আফসোস আছে কি না, কে জানে। তবে ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদদের আফসোস না থেকে পারে না। মুল্ডার জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে আর একটি উইকেট পেলেই তো অভূতপূর্ব এক ঘটনার সাক্ষী হতো বুলাওয়ে। প্রথমবার একই ম্যাচে দুই খেলোয়াড়কে সেঞ্চুরির পাশাপাশি ইনিংসে ৫ উইকেট নিতে দেখত টেস্ট ক্রিকেট।
যা হয়নি, তা নিয়ে আফসোস করে আর লাভ কী। তবে উইয়ান মুল্ডার ও করবিন বশ মিলে যা করেছেন, সেটিও-বা কয়বার দেখেছে ক্রিকেট! জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া মুল্ডার ব্যাট হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন সেঞ্চুরি। তাঁর সতীর্থ বশ প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পর জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেট একই ম্যাচে এক দলের দুজনকে ইনিংসে কমপক্ষে ৪ উইকেট ও সেঞ্চুরি পেতে দেখল মাত্র দ্বিতীয়বার।
প্রথম ঘটনাটি ৫২ বছর আগের। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের হায়দরাবাদে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট করে নিয়েছিলেন পাকিস্তানের দুই অলরাউন্ডার ইন্তিখাব আলম ও মুশতাক মোহাম্মদ। এরপর পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে এই মানিক-জোড় পেয়ে যান সেঞ্চুরিও। চারে নেমে মুশতাক করেছিলেন ১৫৭, সাতে নামা ইন্তিখাবের ব্যাট থেকে আসে ১৩৮ রান।
সব মিলিয়ে টেস্টে ইনিংসে ৪ উইকেট ও সেঞ্চুরির ‘ডাবল’ পাওয়ার ঘটনা আছে ৭৬টি। ইনিংসে ৫ উইকেট ও সেঞ্চুরির ‘ডাবল’ স্বাভাবিকভাবেই কম—৪০টি। বুলাওয়েতে আজ ২৮তম খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি ছুঁলেন বশ। বশের আগে সর্বশেষ এই ‘ডাবল’ পেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেটিও মাত্র মাস দুয়েক আগে, চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই ইনিংসে ৫ উইকেট ও সেঞ্চুরি পাওয়ার কীর্তিতে চতুর্থ দক্ষিণ আফ্রিকান বশ। ১৮৯৯ সালে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকারই নয়, বিশ্বের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবেই এই ‘ডাবল’ পেয়েছিলেন জিমি সিনক্লেয়ার। কেপটাউনে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে পেস বোলিংয়ে ৬ উইকেট নেওয়া সিনক্লেয়ার দলের ১৭৭ রানের প্রথম ইনিংসে একাই করেন ১০৬ রান।
১১ বছর পর ১৯১০ সালে টেস্ট ক্রিকেট দ্বিতীয়বারও ইনিংসে ৫ উইকেট ও সেঞ্চুরি করার ডাবল দেখে এক দক্ষিণ আফ্রিকানের সৌজন্যে। জোহানেসবার্গের ওল্ড ওয়ান্ডারার্সে লেগ স্পিনে ৫ উইকেট নেওয়া অবরে ফকনার দলের প্রথম ইনিংসে করেন ১২৩ রান।
ফকনারের কীর্তির ৮৯ বছর পর জ্যাক ক্যালিসের সৌজন্যে আবার এমন কিছুর দেখা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৯ সালে কেপটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডাবল পাওয়া ক্যালিস তিন বছর পর পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশের বিপক্ষেও একই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করেন।
একাধিকবার এমন ‘ডাবল’ পাওয়ার কীর্তিতে ক্যালিসই প্রথম ছিলেন না, শেষও নয়। তাঁর আগেই একাধিকবার এই কীর্তি গড়েছেন গ্যারি সোবার্স, মুশতাক মোহাম্মদ, ইয়ান বোথাম। ক্যালিসের পরে যোগ হয়েছেন সাকিব আল হাসান, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। এঁদের মধ্যে ইয়ান বোথাম ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে আলাদা রাখতে হবে। ইংলিশ কিংবদন্তি বোথাম সবচেয়ে বেশি পাঁচবার পেয়েছেন এই ‘ডাবল’। ভারতের অশ্বিনের এই কীর্তি আছে চারবার।