গলায় ফুলের মালা নিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একাডেমি ভবন থেকে বেরিয়ে এলেন মোহাম্মদ মিঠুন। তাঁর চারপাশে বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা। কেন মিঠুন সবার মধ্যমণি, ততক্ষণে বোঝার বাকি নেই কারোরই।
ক্রিকেটার্স ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। একটু পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমানের দেওয়া ঘোষণাটা হয়ে উঠল শুধু আনুষ্ঠানিকতাই।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রথমবারের মতো কোয়াবের কোনো পদের জন্য ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। সভাপতি পদে মিঠুনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক ক্রিকেটার এবং ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদ।
মোট ২১৫ ভোটারের মধ্যে ১৯০ জন ভোটার অনলাইন ও সশরীর ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে দুটি ভোট বাতিল হয়েছে। বাকি ১৮৮টি ভোটের মধ্যে ১৫৪টি পেয়ে আগামী দুই বছরের জন্য কোয়াবের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন মিঠুন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম শাহেদ পেয়েছেন ৩৪ ভোট।
সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর মিঠুন জানিয়েছেন, কোয়াবের কার্যক্রমকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চান। বিসিবির কাছে ক্রিকেটারদের দাবিদাওয়া জানানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ক্রিকেটাররা বিসিবির, বিসিবি ক্রিকেটারদের—এটা একটা পরিবার। এখানে কোনো দূরত্ব থাকা উচিত নয়। বিসিবি আমাদের অভিভাবক, আমাদের যেকোনো দাবি অভিভাবকের কাছে জানাতে পারি। আমরা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হবো, সেটা জানাতে পারি। যাঁরা বিসিবিতে আছেন, আমি আশা করব, তাঁরা ইতিবাচকভাবে জিনিসগুলো দেখবেন।’
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম কোয়াবের কোনো পদে ভোটাভুটি হলো, সেটিও সভাপতি পদে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আর কোনো পদেই নির্বাচন হয়নি। সিনিয়র সহসভাপতি পদে জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার শাহরিয়ার হোসেন ও সহসভাপতি পদে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের আগে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সাধারণ সম্পাদকের পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে আটটি পদে আটজনই মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। নাজমুল হোসেন, শামসুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুমানা আহমেদ, খালেদ মাসুদ, ইমরুল কায়েস, ইরফান শুক্কুর ও আকবর আলীও তাই নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
প্রায় ১১ বছর ধরে ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান ও দেবব্রত পাল।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁরা যাঁর যাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পরে সেলিম শাহেদকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়ছিল। তাঁদের কাছ থেকেই দায়িত্ব বুঝে নেবে কোয়াবের নতুন কমিটি।