এশিয়া কাপ সুপার ফোরের বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচের ধারাবিবরণীতে পাঠকদের স্বাগত। ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর আবার টি–টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে থাকা প্রথম আলোর প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, মাঠে ওয়ার্ম আপ শুরু করেছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। নেই অধিনায়ক লিটন দাস।
পাশে বসে ফিজিও বায়েজীদুল ইসলামে সঙ্গে তাঁকে কথা বলতে দেখা গেছে। গত পরশু অনুশীলনে পাঁজরে চোট পেয়েছেন তিনি। ম্যাচের আগে উইকেটকিপিং অনুশীলন করতে দেখা গেছে জাকের–নুরুল দুজনকেই।
নিজের ওয়ার্ম আপটা বাকিদের আগেই শেষ করেছেন জাকের আলী। ম্যাচের আগের ফিল্ডিং অনুশীলনেও নেই তিনি। নাহ, তাঁর খেলা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। জাকের আগেভাগে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন ম্যাচ জার্সি গায়ে দিতে।
আজ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবেন জাকের আলী। নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস চোটে ছিটকে গেছেন। তাঁর জায়গায় সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে জাকেরই টস করতে নামবেন।
টসে জিতেছেন বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাকের আলী। নিয়েছেন বোলিং।
জাকের বলেছেন, রান তাড়া করতে চায় বাংলাদেশ। পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো মনে হচ্ছে। এ ছাড়া লিটন দাস চোটের কারণে খেলতে পারছেন না, জানিয়েছেন সেটিও।
বাংলাদেশ দল আগের ম্যাচের দল থেকে ৪টি পরিবর্তন এনেছে। লিটন দাস না থাকায় তাঁর জায়গায় ফিরেছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন। দলে ফিরেছেন তানজিম হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আর রিশাদ হোসেনও।
তাঁদের জায়গা করে দিতে বাদ পড়েছেন শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান।
সাইফ হাসান, তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী (অধিনায়ক), শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ভারত একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা দলটিই আজ আবার মাঠে নামছে।
অভিষেক শর্মা, শুবমান গিল, তিলক বর্মা, সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), সঞ্জু স্যামসন, শিবম দুবে, হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যশপ্রীত বুমরা ও বরুণ চক্রবর্তী।
লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকের আলী বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি দলের ১২তম অধিনায়ক।
২০০৬ সালের নভেম্বর থেকে আজকের আগ পর্যন্ত খেলা ২০১ টি–টোয়েন্টি ম্যাচে ১১ জন অধিনায়ক দেখেছে বাংলাদেশ।
ভারত: ২ ওভারে ১০/০।
বাংলাদেশ বোলিং শুরু করেছে তানজিম হাসানকে দিয়ে। প্রথম বলে অভিষেক শর্মা এক রান নিলেও পরের ৫ বল খেলে শুবমান গিল নিতে পেরেছেন মাত্র ২ রান।
দ্বিতীয় ওভারে নাসুম আহমেদও খুব বেশি রান দেননি। চতুর্থ বলে অভিষেক শর্মা তাঁকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে একটি চার মেরেছেন।
ভারত: ৩ ওভারে ১৭/০।
প্রথম ওভারের মতো দ্বিতীয় ওভারেও ভালো বোলিং করেছেন তানজিম হাসান। এই ওভারে দিয়েছেন ৭ রান। ভাগ্য সহায় থাকলে উইকেটও পেতে পারতেন। তৃতীয় বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা। ঝাঁপিয়ে পড়ে বলের নাগাল পেয়েছিলেন উইকেটকিপার জাকের। কিন্তু মুঠোয় নিতে পারেননি। কঠিন সুযোগ, কিন্তু নেওয়া যায়নি।
ভারত: ৪ ওভারে ৩৮/০।
প্রথম তিন ওভারে মাত্র ১৭ রানের পর চতুর্থ ওভারের ৬ বলেই ২১ রান নিয়েছে ভারত। নাসুম আহমেদের করা ওভারটিতে দুটি ছক্কা আর একটি চার হয়েছে। একটি ছয় মেরেছেন শুবমান গিল, আরেকটি অভিষেক শর্মা।
ভারত: ৬ ওভারে ৭২/০।
পাওয়ার প্লের শেষ তিন ওভারে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিয়েছেন ভারতের দুই ওপেনার, বিশেষ করে অভিষেক শর্মা। বাঁহাতি এ ওপেনার সাইফউদ্দিনের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই মেরেছেন ৪টি চার। অভিষেক ১৯ বলেই করেছেন ৪৬ রান।
ভারত: ৭ ওভারে ৮১/১।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেনকে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তুলেছেন শুবমান গিল। বাউন্ডারি সীমায় ক্যাচ নিয়েছেন তানজিম। ৬.২ ওভারে প্রথম উইকেট হারাল ভারত।
গিল আউট হয়ে ফিরেছেন ১৯ বলে ২৯ রান নিয়ে। নতুন ব্যাটসম্যান শিবম দুবে।
ভারত: ৯ ওভারে ৯১/২।
টানা দ্বিতীয় ওভারে উইকেট নিলেন রিশাদ হোসেন। এবার শিবম দুবে।
ইনিংসের নবম ওভারের প্রথম বলই তুলে মারতে চেয়েছেন দুবে। ডেলিভারি ছিল গুগলি। লং অফে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে সহজ ক্যাচ। ৮৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল ভারত। নতুন ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব।
ও দিকে অভিষেক শর্মার মধ্যে অবশ্য থামাথামির লক্ষণ নেই। রিশাদের চতুর্থ বল উড়িয়ে পাঠালেন মিড উইকেট বাউন্ডারির ওপর দিয়ে।
ভারত: ১০ ওভারে ৯৬/২।
ইনিংসের অর্ধেক ওভার শেষে ভারতের রান প্রায় এক শ। ‘প্রায়’ শব্দটা লেখা দরকার পড়ত না, যদি সাইফ হাসানের দশম ওভার ভালো না হত। ডানহাতি অফ স্পিনের বিপক্ষে অভিষেক তিন বল খেললেও তিনটি সিঙ্গেলই শুধু নিতে পেরেছেন। বাকি তিন বলে সূর্যকুমার নিয়েছেন ২ রান। সাইফ এর আগের ওভারে (ইনিংসের অষ্টম) দিয়েছেন মাত্র ২ রান।
২৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করা অভিষেক এই মুহূর্তে ৩২ বলে ৬০ রানে ব্যাট করছেন, সূর্যকুমার ৬ বলে ৩।
অবশেষে অভিষেকের বিদায়। রানআউট।
রানআউট হলেও উইকেটটা রিশাদের নামে লিখে দেওয়া যায়। মোস্তাফিজের বল গিল খেলেছিলেন থার্ড ম্যানের অঞ্চলের দিকে। দারুণ ফিল্ডিংয়ে বল হাতে নিয়ে দ্রুত থ্রো করেছেন নন স্ট্র্রাইকে। কারণ, অনেকখানি বেরিয়ে এসেছিলেন অভিষেক।
স্টাম্পের কাছে থাকা মোস্তাফিজ বল হাতে নিয়ে যখন স্টাম্প ভাঙেন, তখনও অভিষেকও বেশ খানিকটা দূরে। আম্পায়ার তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠালেও অভিষেক আগেভাগেই হাঁটা দিয়েছেন।
রানআউটে থামল অভিষেকের ঝোড়ো ইনিংসের। ৩৭ বল খেলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৫ রান করেছেন তিনি। ১১২ রানে ভারত হারিয়েছে তৃতীয় উইকেট।
ভারত: ১২ ওভারে ১১৪/৪।
১২তম ওভারে দুটি উইকেট হারিয়েছে ভারত। প্রথম বলে রানআউট হয়েছেন অভিষেক শর্মা। শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। ভারত অধিনায়ক মোস্তাফিজের শর্ট বলে লেগ সাইডে খেলতে গেল বল ব্যাটের কানায় লেগে যায় জাকেরের হাতে।
আম্পায়ার অবশ্য আউট দেননি। ক্যাচ নেওয়া জাকের ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। নেন রিভিউ। তাতেই মাঠের আম্পায়ারকে বদলাতে হয়েছে সিদ্ধান্ত। ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার ফিরেছেন ১১ বলে ৫ রান করে।
ব্যাটিংয়ে আছেন হার্দিক পান্ডিয়া ও তিলক বর্মা।
ভারত: ১৫ ওভারে ১৩২/৫।
দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে ফিরেই তানজিম পেলেন তিলকের উইকেট। তাঁর স্লোয়ার ডেলিভারিতে স্লগ করতে চেয়েছিলেন তিলক, স্কয়ার লেগে ক্যাচ নিয়েছেন সাইফ হাসান। ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ভারত হারাল পঞ্চম উইকেট। রান ১২৯।
নতুন ব্যাটসম্যান অক্ষর প্যাটেল। অন্য প্রান্তে হার্দিক পান্ডিয়া।
উইকেট পাওয়া ওভারটিতে তানজিম দিয়েছেন ৫ রান। সব মিলিয়ে তিন ওভারে তাঁর খরচ ১৫।
ভারত: ১৭ ওভারে ১৪১/৫।
পরপর বেশ কয়েকটি উইকেট হারানোর পর ভারতের ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক প্রবণতা কমেছে। আর সেটিরই ফলে বাউন্ডারি হয়নি টানা ২২ বল।
১৩তম ওভারের শেষ বলে রিশাদকে ছক্কা মেরেছিলেন পান্ডিয়া। এরপর ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে মোস্তাফিজের বলে চার মেরেছেন সেই পান্ডিয়াই।
২০তম ওভারের শেষ বলে লং অফ বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। বোলার ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। উইকেটটা তাঁর পাওনা–ই ছিল।
শেষ ওভারে বোলিং করে মাত্র ৪ রান দিয়েছন সাইফউদ্দিন। তাতেই ভারতের রান আটকে থেকেছে ১৭০–এর কমে। ২০ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৬৮ রান।
বাংলাদেশ ঠিক আগের ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ১৬৮ রানে আটকে দিয়ে তাড়া করে জিতেছিল। এবার ভারতকেও ১৬৮ রানে আটকে রাখলেন বোলাররা। বিশেষ কৃতিত্ব পাবেন রিশাদ হোসেন। ২৩ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার দুটি উইকেট নিয়েছেন। তবে বড় অবদান রেখেছেন ফিল্ডিংয়েও। তাঁর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়েই রানআউট হয়েছেন অভিষেক শর্মা।
এই অভিষেক যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, ভারতের রান ছুটছিল দুই শর দিকে। ৭ রানে জাকের আলীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া অভিষেক ৬ চার আর ৫ ছক্কায় করেছেন ৩৭ বলে ৭৫ রান। ১২তম ওভারে অভিষেক আউট হওয়ার পর ভারত আর ঝোড়ো ব্যাটিং করতে পারেনি। অভিষেক–পরবর্তী ইনিংসের শেষ ৫৩ বলে ভারত করতে পেরেছে ৫৬ রান। যেখানে মূল ভূমিকা হার্দিক পান্ডিয়ার ২৯ বলে ৩৮ রানের।
এর আগে রিশাদই ভেঙেছিলেন ভারতের ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। আউট করেছেন তিনে নামা শিবম দুবেকেও। বাংলাদেশের পক্ষে রিশাদের দুই উইকেট বাদে একটি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও সাইফউদ্দিন। উইকেট না পেলেও দুই ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৭ রান দিয়েছেন সাইফ হাসান।
এখন দেখার বিষয় ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ কেমন করে।
ভারত: ২০ ওভারে ১৬৮/৬ (অভিষেক ৭৫, পান্ডিয়া ৩৮, গিল ২৯, অক্ষর ১০; রিশাদ ২/২৭, তানজিম ১/২৯, মোস্তাফিজ ১/৩৩, সাইফউদ্দিন ১/৩৭)।
বাংলাদেশ: ২ ওভারে ৯/১।
রান তাড়ার শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। হার্দিক পান্ডিয়ার প্রথম ওভার থেকে উঠেছে ৪ রান। দ্বিতীয় ওভারে যশপ্রীত বুমরার দ্বিতীয় বলেই ফিরলেন তানজিদ হাসান।
ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন তানজিদ, বল লিডিং এজ্ড হয়ে ওপরে উঠেছে। সহজ ক্যাচ নিয়েছেন শিবম দুবে (৩ বলে ১ রান)।
৪ রানে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। নতুন ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন। বুমরার পরের চার বলে কোনো রান নিতে পারেননি তিনি। তবে ওয়াইড+বাউন্ডারি থেকে জমা হয়েছে ৫ রান।
বাংলাদেশ: ৩ ওভারে ১৯/১।
পান্ডিয়ার দ্বিতীয় ওভারে ছয় বলই খেলেছেন সাইফ হাসান। প্রথম ও শেষ বলে মেরেছেন চার। দ্বিতীয় বলে নিয়েছেন ডাবলসও। সব মিলিয়ে পান্ডিয়ার ওভার থেকে সাইফ নিয়েছেন ১০ রান।
বাংলাদেশ: ৫ ওভারে ৩৫/১।
পঞ্চম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি মেরেছে বাংলাদেশ। দুটি মেরেছেন পারভেজ হোসেন, একটি সাইফ হাসান। সব মিলিয়ে বরুণ চক্রবর্তীর করা ওভারটি থেকে এসেছে ১৩ রান।
বাংলাদেশ: ৬ ওভারে ৪৪/১।
বুমরার বলে ছক্কা—বিরল দৃশ্যগুলোর একটি।
ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে লং অনের ওপর দিয়ে বুমরাকে ছক্কা মেরেছেন পারভেজ হোসেন। দূরত্ব ৮৫ মিটার।
পারভেজের ছক্কাটির আরেকটি বিশেষত্ব আছে। বুমরার আগের দুই ওভারে আটটি বল খেলেছেন পারভেজ। প্রতিবারই হিমশিম খেয়েছেন। কোনোমতে অষ্টম বলটিতে এক রান নিতে পেরেছিলেন। এবার সেই বোলারকেই মেরেছেন ছক্কা।
বাংলাদেশ: ৭ ওভারে ৪৯/২।
বুমরাকে ছক্কা মারার পর পারভেজ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন মনে হচ্ছিল। কিন্তু পরের ওভারেই তিনি আউট।
কুলদীপ যাদবকে সুইপ শট খেলে ক্যাচ দিয়েছেন স্কয়ার লেগে অভিষেক শর্মার হাতে। ফিরেছেন ১৯ বলে ২১ রান করে। ৪৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
নতুন ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়। সঙ্গে আছেন সাইফ হাসান।
বাংলাদেশ: ৮ ওভারে ৫৩/২।
অষ্টম ওভারের প্রথম বলে ৫০ রানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। অক্ষর প্যাটেলের ওভারটিতে প্রথম বলে এক রান হলেও মোট ৬ বলে উঠেছে ৪ রান। সাইফ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিংয়ে আপাতত ঝুঁকি না নেওয়ার ছাপ।
বাংলাদেশ: ১০ ওভারে ৬৫/৩।
রান রেটের চাপ বাড়ছিল বলে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়। অক্ষর প্যাটেলের করা দশম ওভারের চতুর্থ বলটিতে তাঁর শট ওপরেই উঠল, বাউন্ডারি পার হল না। অভিষেক শর্মার ক্যাচ হয়ে হৃদয় আউট হলেন ১০ বলে ৭ রান করে।
৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ। নতুন ব্যাটসম্যান শামীম হোসেন।
বাংলাদেশ: ১১ ওভারে ৭৫/৩।
বড় শট নয়, জায়গা বানিয়ে গ্যাপে খেলতে চেয়েছেন। তাতে স্টাম্প হয়ে গেল উন্মুক্ত। বল মিস করে গেল ব্যাট। বোল্ড।
বরুণ চক্রবর্তীর স্পিনে এভাবেই আউট হয়েছেন শামীম হোসেন। পরপর দুই ওভারে উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ১০.৪ ওভারে বাংলাদেশের ৪ উইকেট নেই। নতুন ব্যাটসম্যান জাকের আলী।
বাংলাদেশ: ১৩ ওভারে ৮৭/৫।
একপ্রান্তে রান করছেন সাইফ হাসান। আরেক প্রান্তে উইকেটের পর উইকেট পড়ছে। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হলেন জাকের আলী। রানআউট।
সাইফ শর্ট কাভারে খেলেই রানের জন্য ছুটেছেন। দৌড়েছেন জাকেরও। কিন্তু সূর্যকুমার যাদবের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভেঙে দিলে রানআউট হয়ে যান বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। ৮৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ: ১৪ ওভারে ১০২/৫।
অক্ষর প্যাটেলকে লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন সাইফ হাসান। এটি তাঁর টানা দ্বিতীয় ফিফটি।
এখানেই শেষ নয়। এক বল পর আবারও অক্ষরকে ছক্কা মেরেছেন সাইফ। ম্যাচে এটি তাঁর পঞ্চম ছক্কা। পরের বলে সিঙ্গেল নিলে বাংলাদেশ দলের রান ১০০ স্পর্শ করেছে।
১৬তম ওভারের প্রথম দুই বলই ঘটনাবহুল।
বরুণ চক্রবর্তীর প্রথম বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ তোলেন সাইফ হাসান। হার্দিক পান্ডিয়া আর অভিষেক শর্মার ভুল বোঝাবুঝিতে ক্যাচ মিস। বেঁচেছেন সাইফ।
তবে পরের বলে লং অনে ক্যাচ তুলেছেন সাইফউদ্দিন। ধরতে সমস্যা হয়নি তিলক বর্মার।
একই ওভারের চতুর্থ বলে আবার ক্যাচ দিয়েছেন সাইফ। এবার মিস করেছেন উইকেটকিপার সঞ্জু স্যামসন।
বাংলাদেশ: ১৭ ওভারে ১১৫/৮।
১৭তম ওভারে কুলদীপ যাদব তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। টানা দুই বলে। রিশাদ ক্যাচ দিয়েছেন মিড উইকেট বাউন্ডারিতে, তানজিম সরাসরি বোল্ড।
পঞ্চম বলে আউট হতে পারতেন সাইফও। এবার তাঁর ক্যাচ মিস করেছেন অভিষেক শর্মা। এ নিয়ে চারবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন সাইফ। প্রথমবার বেঁচেছিলেন ৪০ রানে।
১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট সাইফ হাসান।
যশপ্রীত বুমরাকে তুলে মেরেছিলেন, বলে গেছে বাউন্ডারিতে। সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল হাতে নিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল, যদিও দ্বিতীয় চেষ্টায়।
সাইফ ফিরছেন ৫১ বলে ৬৯ রান করে। যে ইনিংসে ৩টি চারের সঙ্গে আছে ৫টি ছক্কা। ওপেনিংয়ে নামা সাইফ আউট হয়েছেন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে।
তিলক বর্মার করা ইনিংসের ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে লং অফে অক্ষর প্যাটেলকে ক্যাচ দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। আউট।
মোস্তাফিজের আউটে থামল বাংলাদেশের ইনিংস। ভারতের ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ১৯.৩ ওভারে অলআউট ১২৭ রানে। ভারত ম্যাচ জিতল ৪১ রানে।
রান তাড়ার শুরুতে তানজিদ হাসানকে হারালেও বাংলাদেশের পাওয়ার প্লে খারাপ যায়নি। প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ১ উইকেটে ৪৪। এরপর ভারতের তিন স্পিনার কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল আর বরুণ চক্রবর্তীরা আক্রমণে এলে বাংলাদেশের রানের গতি কমে আসে। একপ্রান্ত থেকে সাইফ হাসান রান করে গেলেও অপর প্রান্তে লাগাতার উইকেট–পতনে বাংলাদেশ স্বস্তিতে ছিল না।
৪০ রানে প্রথমবার জীবন পাওয়া সাইফ আউট হওয়ার আগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন আরও তিনবার। ১৮তম ওভারে বুমরার বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে সাইফ করেছেন ৫১ বলে ৬৯ রান, যে ইনিংসে ছিল ৫টি ছক্কা। সাইফের আউটের সময় অবশ্য রান রেট এমন পর্যায়ে ছিল যে, বাংলাদেশের হারই অবশ্যম্ভাবী।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১২৭ রানে অলআউট করে ভারত জিতেছে ৪১ রানে। সুপার ফোরে টানা দুই জয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সূর্যকুমার যাদবের দল। বাংলাদেশের সম্ভাবনা অবশ্য এখনো মিলিয়ে যায়নি। আগামীকাল দুবাইয়ের বাংলাদেশ–পাকিস্তান ম্যাচে জয়ী দলও উঠবে ফাইনালে। যার অর্থ, ভারতের ফাইনালে ওঠার মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আর বাংলাদেশ–পাকিস্তান ম্যাচ পরিণত হয়েছে এশিয়া কাপের অলিখিত সেমিফাইনালে।
ভারত: ২০ ওভারে ১৬৮/৬ (অভিষেক ৭৫, পান্ডিয়া ৩৮, গিল ২৯, অক্ষর ১০; রিশাদ ২/২৭, তানজিম ১/২৯, মোস্তাফিজ ১/৩৩, সাইফউদ্দিন ১/৩৭)। বাংলাদেশ: ১৯.৩ ওভারে ১২৭ (সাইফ ৬৯, পারভেজ ২১; কুলদীপ ৩/১৮, বুমরা ২/১৮)। ফল: ভারত ৪১ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অভিষেক শর্মা।