
ফ্লাডলাইটের আলোর ঝলকানি থেকে বাঁচার পথটা তাহলে বের করে ফেলেছেন স্টিভেন স্মিথ! বুঝে গেছেন, তাঁকে শিবনারায়ণ চন্দরপল হতে হবে। দিবারাত্রির ম্যাচে তীব্র আলোর ঝলকানি থেকে বাঁচতে সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান প্রায় পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই চোখের নিচে ‘কালো স্ট্রিপ’ বা টেপ লাগিয়ে ব্যাট করে গেছেন।
ব্রিসবেনে আগামীকাল থেকে শুরু অ্যাশেজের দিবারাত্রির টেস্টে স্মিথও হাঁটবেন সেই পথে। ফ্লাডলাইটের চোখধাঁধানো আলো থেকে বাঁচতে তিনিও ব্যবহার করবেন কালো স্ট্রিপ। এরই মধ্যে সেগুলো লাগিয়ে অনুশীলনও করেছেন। এবার ম্যাচে স্মিথের এই কৌশল কাজে লাগলেই হয়!
শুধু চন্দরপলই নন, যুক্তরাষ্ট্রের এনএফএল বা বেসবল খেলোয়াড়রা প্রায়ই আলোর ঝলমলানি থেকে চোখকে রেহাই দিতে এ রকম ‘কালো স্ট্রিপ’ ব্যবহার করেন। স্মিথ তো আজকাল যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন, সেখানকার ছোঁয়া লাগাটাই স্বাভাবিক।
ফ্লাডলাইটের আলোতে অবশ্য সব ক্রিকেটারের এমন সমস্যা হয় না। স্মিথের হচ্ছে, কারণ তাঁর চোখ আলো সংবেদনশীল। এমনকি আজ ব্রিসবেনে সংবাদ সম্মেলনেও সম্প্রচারকর্মীদেরও অনুরোধ করেছেন, ক্যামেরার আলোর তীব্রতা যেন একটু কমানো হয়।
৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান সংবাদ সম্মেলনেই বলছেন, চোখের নিচের এই স্ট্রিপ গ্যাবার ফ্লাডলাইটের তীব্রতা ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেবে। দিবারাত্রির ম্যাচে গোলাপি বলটা দেখতেও সুবিধা হবে এতে। তবে শর্ত হচ্ছে, জিনিসটা ঠিকঠাকমতো পরতে হবে।
এ নিয়ে মজার ঘটনাটা স্মিথ নিজেই বললেন। কালো স্ট্রিপ নিয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি নাকি খোদ চন্দরপলকেই মেসেজ করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনি কি চোখে চক ব্যবহার করতেন, নাকি স্ট্রিপ?’ চন্দরপল জানান, তিনি স্ট্রিপই ব্যবহার করতেন। আর এতে আসলেই ৬৫ শতাংশ আলো আটকে যায়। তবে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ভুল ধরিয়ে দিতেও ছাড়েননি। স্মিথকে বলেছেন, ‘তোমার ছবি দেখেছি। তুমি কিন্তু ওটা উল্টোভাবে পরছ!’
স্মিথ গুরুর কথা শুনেছেন মন দিয়ে। বললেন, ‘গতকাল আমি ঠিকভাবে পরেছিলাম এবং চন্দরপলের কথাই ঠিক। এতে আসলেই আলো কম লাগে। তাই ম্যাচেও আমি এটা পরেই নামব।’
স্মিথ এখন পর্যন্ত ১৩টি দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছেন।
স্মিথের চেয়ে বেশি গোলাপি বলে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে শুধু তাঁরই সতীর্থ মিচেল স্টার্কের। স্মিথের সমান ১৩টি দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছেন নাথান লায়নও।
ভিন্ন ধরনের এই কন্ডিশনে কীভাবে খেলতে হয়, সেই অভিজ্ঞতাও তাঁর অনেকের চেয়ে বেশি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বললেন, ‘লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলের আচরণ আলাদা। এটা হুট করেই বদলে যেতে পারে। কখনো কখনো বেশ এলোমেলো নড়াচড়া করে। তখনই নতুন পরিকল্পনা করতে হয়।’
দিবারাত্রির টেস্টে স্মিথের রেকর্ডটা খুব একটা ভালো নয়, ৩৭.০৪। সেঞ্চুরি আছে মাত্র একটি, সেটিও ২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। দেখা যাক চন্দরপলের টোটকা আর নিজের সতর্কতায় দিবারাত্রির টেস্টে রেকর্ডটা ভালো করতে পারেন কি না!