এ মাসের মাঝামাঝি দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় কি এমন কিছু ভেবেছিল বাংলাদেশ দল! মনে হয় না। বরং নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে টি–টোয়েন্টিতে নতুন যাত্রা শুরুর একটা আশা ছিল। অথচ আজ লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে মাঠে নামার সময় বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে ধবলধোলাই করার শঙ্কা। পেছনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের দুঃস্বপ্ন তো আছেই।
ধবলধোলাই এড়ানোর কাজটা অবশ্য মোটেই সহজ হওয়ার কথা নয়। কোনো বিভাগেই যে বাংলাদেশের ধারাবাহিকতার ছিটেফোঁটাও নেই। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। ওপেনারদের কেউ না কেউ ঝোড়ো শুরু এনে দিলেও বাকি ব্যাটসম্যানরা সেটি কাজে লাগাতে পারছেন না।
বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছে মিডল অর্ডার ব্যাটিং। সর্বশেষ তিন ইনিংসে ০, ১৭ ও ৫ রানে আউট হয়ে যাওয়া তাওহিদ হৃদয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন বড় এক দুশ্চিন্তার নাম। বাকি ব্যাটসম্যানরাও যে খুব সুবিধা করতে পারছেন, তা নয়।
মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যে মৌলিক কাজটাই ঠিকঠাক করতে পারছেন না, সেটি বলেছেন অধিনায়ক লিটন দাসও। লাহোরে দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজ পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর কথাগুলো ছিল এমন, ‘ক্রিকেটে আপনার বেসিক জিনিসগুলো করতে হবে। এ মুহূর্তে আমরা মৌলিক কাজগুলো করছি না।’ তার একটা ছাপ অবশ্য গত ম্যাচেও দেখা গেছে। কথাটা লিটন বলেছেন তাঁর সঙ্গে রান নিতে গিয়ে হৃদয়ের ভুল–বোঝাবুঝি নিয়ে। যার পরের বলেই তিনি আউট হয়েছেন বাজে এক শট খেলে।
খেলোয়াড়দের মধ্যে রান নেওয়ার সমন্বয়টুকু যেমন নেই, তেমনি নেই ছাপ রাখতে চাওয়ার চেষ্টাও। শরীরী ভাষায় প্রতিপক্ষের জন্য নেই তেমন কোনো বার্তাও। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে কি একটু অন্য চেহারায় দেখা দিতে পারবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা?
দ্বিতীয় ম্যাচের পর দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা তানজিম হাসান অবশ্য আশাবাদের কথাই বলেছেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়েরা ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। তাঁরা হয়তো ছন্দের বাইরে আছেন। কিন্তু আমি আমার সতীর্থদের ওপর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস রাখি। আশা করি, তাঁরা পরের ম্যাচে ফিরে আসবেন।’
নয় নম্বরে নেমে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলা তানজিম হাসান যতই আশাবাদী হন, তাঁদের সামনে অপেক্ষায় কঠিন এক পরীক্ষাই। প্রথম দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ রান তাড়া করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় হয়তো ব্যাটিংয়ের কথাটা আগে আসছে। তবে বোলিংয়ে শুরুতে উইকেট তুলে নিলেও বোলাররাও পরে আর পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখতে পারছেন না। এর মধ্যে দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়েছে শরীফুল ইসলামের চোট। যেটির কারণে আজ তাঁর খেলাটা অনিশ্চিত।