প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।

নুরুল-সাইফ কেন দলে, নাঈম কেন বাদ—ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান নির্বাচক

নুরুল হাসান জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন প্রায় তিন বছর আগে। সাইফ হাসানও ২০২৩ এশিয়ান গেমসের পর আর জায়গা পাননি। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই দুই ক্রিকেটারকে ফেরানো হয়েছে আসন্ন নেদারল্যান্ডস সিরিজ ও এশিয়া কাপের দলে। তবে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি দলে থাকা মোহাম্মদ নাঈম বাদ পড়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় ঘোষিত এশিয়া কাপের দল নিয়ে আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন। দিয়েছেন নুরুল-সাইফের দলে রাখা আর নাঈমকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যা।

নুরুল ও সাইফ দুজনই এখন টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে খেলতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সফরে আছেন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে ৬ ইনিংসে ১১৩.৮৬ স্ট্রাইক রেটে ১১৫ রান করেছেন নুরুল। এর আগে সর্বশেষ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ১৩৮.৯৩ স্ট্রাইক রেটে ১৮২ আর জুলাইয়ে একই দলের হয়ে গ্লোবাল সুপার লিগে ৫ ম্যাচে ৬৫ রান করেন।

আবারও জাতীয় দলে ঢুকেছেন নুরুল হাসান

টি–টোয়েন্টিতে খুব বেশি ছন্দে না থাকা নুরুলকে এশিয়া কাপে দলে রাখার ব্যাখ্যায় গাজী আশরাফ বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের লাইক টু লাইক বদলির জায়গায় অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ, কিংবা পারফরমার নাই। আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং আস্থার জায়গাটা হলো তাঁর খেলার অ্যাপ্রোচ এবং প্যাটার্ন- বিশেষত পাঁচ-ছয়ে আমরা মনে করি খুব ভালো পছন্দ, জাকের আলীর ব্যাক আপের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে তাঁকে সেরা মনে করছি।’

গত বিপিএলে নুরুলের সঙ্গে একই দলে খেলেছিলেন সাইফ হাসানও। ১৩ ম্যাচ খেলে ৩০৬ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। এরপর গ্লোবাল সুপার লিগে ৪ ম্যাচে করেন ৮৪ রান। এবার টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে সাইফ ৬ ম্যাচে ১২১.১০ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৩২ রান।

২০২৩ সালের পর জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন সাইফ হাসান

নুরুলের মতো তাঁকেও বিকল্প হিসেবেই দলে রাখা হয়েছে বলে জানান গাজী আশরাফ, ‘এক ওভার-দুই ওভার তিনি করে দিতে পারবেন। তিন-চার নম্বরে এবং যদি ওপেনার দরকার হয়, সে আলোকে সাইফের দিকে চোখ ছিল। এবার তাঁকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা এ রকম বিভিন্ন জায়গায় অবদান রাখতে পারে এমন খেলোয়াড় খুঁজছি।’

এখন পর্যন্ত ৭৫টি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অফ স্পিনে ১১ উইকেট আছে সাইফের। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ও লিস্ট ‘এ’তেও বোলিং করতে দেখা যায় তাঁকে।

এ বছর জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে স্কোয়াডে ফেরানো হয় ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে। ওই সিরিজে একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ২৯ বলে ৩২ রান করেন। পরে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৮ বলে ৩ ও ১৯ বল খেলে ১০ রান করেন নাঈম। এশিয়া কাপ ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তাঁর।

কেন তাঁকে বাদ দেওয়া? প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘কাউকে দল থেকে বাদ দেওয়ার আগে অনেক কিছুই চিন্তা করতে হয়- তিনি সামর্থ্যের কতটুকু করতে পারলেন বা তাঁকে যতটুকু সুযোগটুকু দেওয়া হলো, সেটা যথেষ্ট কি না। আমাদের কাছে মনে হয়েছে নাঈম কঠোর পরিশ্রম করেছে, তিনি যে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছেন, আমরা অনেক আশাবাদী ছিলাম তিনি তাঁর জায়গাটা ধরে রাখতে পারবেন।’

গত মাসে জাতীয় দলে ফিরে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মোহাম্মদ নাঈম

নাঈম তা না পারায় নির্বাচকদেরও যে হতাশা আছে, তাও স্পষ্ট গাজী আশরাফের কথায়, ‘সেটা (জায়গা ধরে রাখতে পারলে) তাঁর ও দলের জন্য ভালো হতো। দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয়নি। আরেকটু কম চ্যালেঞ্জে টপ এন্ড ক্রিকেটে সেখানেও তিনি ভালো করতে পারেননি। আমার বিশ্বাস নাঈম শেখ এখন জানে তাঁকে এই জায়গাটা পুনরুদ্ধার করতে হলে আরও উন্নতি করতে হবে।’

৯ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকংয়ের বিপক্ষে। এশিয়া কাপের আগে ৩০ আগস্ট সিলেটে শুরু হবে বাংলাদেশ–নেদারল্যান্ডস তিন টি–টোয়েন্টির সিরিজ।