ভারতের জার্সিতে মোহাম্মদ শামির অধ্যায় কি শেষ? ৩৫ বছর বয়সী এই পেসার অনেক দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে। অস্ট্রেলিয়া সফরের স্কোয়াডেও তাঁকে রাখেননি ভারতীয় নির্বাচকেরা।
ঠিক কী কারণে শামিকে দলে নেওয়া হচ্ছে না, এর জুতসই ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার। শামি চোটে ভুগছেন কি না, এ নিয়েও ‘কোনো আপডেট নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন আগারকার। এরপর আগারকারকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন শামি।
চোট শামিকে লম্বা সময় ভুগিয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এক বছরের বেশি সময় ভারতের হয়ে খেলতে পারেননি। বিশ্বকাপের পর অ্যাঙ্কেলের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। ভুগেছেন হাঁটুর সমস্যাতেও।
শামি দলে ফিরেছিলেন এ বছরের জানুয়ারিতে, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজে। এরপর ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও ছিলেন। সেখানে ৫ ম্যাচে নেন ৯ উইকেট, যা যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর পর থেকে শামিকে আর বিবেচনা করছেন না নির্বাচকেরা।
তাহলে কি শামি আবারও চোটে ভুগছেন? না, সেটাও না। শামি এরপর আইপিএল খেলেছেন। আগস্টে দুলীপ ট্রফিতে চার দিনের ম্যাচে খেলেছেন। এখন খেলছেন রঞ্জি ট্রফিতেও।
খেলার মধ্যে থাকলেও অস্ট্রেলিয়া সফরের স্কোয়াড ঘোষণার সময় আগারকার বলেছেন, শামির ফিটনেস নিয়ে তাঁর কাছে আপডেট নেই। শামি মূলত এই কথাতেই খেপেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপডেট দেওয়া বা জিজ্ঞেস করা শুধু আমার দায়িত্ব নয়। আমার কাজ ফিটনেস নিয়ে রিপোর্ট দেওয়া নয়। আমার কাজ হলো এনসিএতে (জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি) যাওয়া, প্রস্তুতি নেওয়া আর ম্যাচ খেলা। উনি কার কাছ থেকে আপডেট নিচ্ছেন বা নিচ্ছেন না, সেটা ওনার ব্যাপার। এটা আমার দায়িত্ব নয়।’
প্রধান নির্বাচক আগারকারের মন্তব্যে শামি যে বিরক্ত হয়েছেন, সেটা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে জায়গা না পেয়ে তিনি যে খুশি নন, সেটাও বলেছেন শামি। এই পেসারের ভাষ্য, ‘আমি আগেও বলেছি, দল নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আমার হাতে নেই। যদি আমার ফিটনেসে সমস্যা থাকত, তাহলে আমি এখানে (রঞ্জি ট্রফি) খেলতাম না। যদি চার দিনের ম্যাচ খেলতে পারি, তাহলে ওয়ানডেও খেলতে পারব।’
শামি আরও বলেছেন, ‘অ্যাঙ্কেল আর হাঁটুর চোটের পর আমি কিছু ম্যাচ খেলতে পেরেছি। এটা আমার জন্য ভালো ছিল। অনেক দিন না খেলা প্রসঙ্গে বলতে চাই, আমি তো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, আইপিএল আর দুলীপ ট্রফিতে খেলেছি। তারপর নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছি। তাই বলা ঠিক হবে না যে আমি ফর্মে নেই। সুযোগ এলে ম্যাচ খেলব।’
২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতকে ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন শামি। নিয়েছিলেন সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট। এমন পারফরম্যান্স সব টুর্নামেন্টেই করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন শামি, ‘ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে প্রতিদিন একই রকম পারফর্ম করা যায় না। ২০২৩ বিশ্বকাপে আমার পারফরম্যান্স অন্য পর্যায়ের ছিল। কিন্তু তারপর চোট পাই। ব্যথা নিয়ে খেলতে চাইনি। কারণ, দল তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তবে আমি চেয়েছি অস্ত্রোপচারের পর ফিরে এসে আগের মতো পারফর্ম করতে। এখনো সেই চেষ্টাই করছি। নির্বাচকেরা যেভাবে চাইছেন, সেভাবে করার চেষ্টা করছি।’
শামি আরও বলেছেন, ‘আমার কাজ হলো লড়াই চালিয়ে যাওয়া, ম্যাচ খেলা। ভালো পারফর্ম করলে তার সুফল মিলবেই। সহজ কথা। দল নির্বাচন আমার হাতে নেই, আমি শুধু অনুশীলন করতে পারি, ম্যাচ খেলতে পারি। আর হ্যাঁ, আমাকে না ডাকলে কোনো আপত্তি নেই, আমি বাংলার (রাজ্য দল) হয়েই খেলব।’