কী হয়েছে ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মার?
প্রশ্নটা মুম্বাই ইন্ডিয়ানস সমর্থক থেকে আরও অনেকের। ১৫ ম্যাচে মাত্র ২১ গড়ে ৩২৪ রান, যেকোনো ওপেনারের জন্যই খুব একটা ভালো নয়। আর নামটা যদি হয় রোহিত শর্মা, সে ক্ষেত্রে দায়টা আরও বেশি।
জিও সিনেমাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাম্প্রতিক সময়ে নিজের ব্যাটিং–ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন মুম্বাই অধিনায়ক। সেখানে উঠে এসেছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন কৌশলে তাঁর মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টার প্রসঙ্গ।
Also Read: রোহিত আউট হয়েছেন, রোহিত আউট হননি
অধিনায়ক হলেও দলে রোহিতের প্রথম দায়িত্ব তো ব্যাট হাতে মুম্বাইকে ভালো শুরু এনে দেওয়া। যে কাজটাই ভালোভাবে করতে পারছেন না রোহিত। সাক্ষাৎকারে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটিং–ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে রোহিত অন্য প্রসঙ্গও টেনেছেন। কথা বলেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধরে খেলা নিয়ে, অর্থাৎ ‘অ্যাঙ্করিং’ করা নিয়ে।
রোহিতের মতে, ‘এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধরে খেলার কোনো জায়গা নেই। ২০ রানে ২–৩ উইকেট পড়ে না গেলে আপনার ধরে খেলার দরকার নেই, আর এমনটা তো প্রতিদিন হয় না। মাঝেমধ্যে আপনি এমন পরিস্থিতিতে পড়বেন, যখন আপনাকে ধরে খেলে দলকে ভালো সংগ্রহ দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে আসলে ধরে খেলার জায়গা নেই, ক্রিকেটাররা ভিন্নভাবে খেলছে।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধরে খেলা নিয়ে বিতর্কটা এত দ্রুত শেষ হওয়ার নয়। বিতর্ক চলছে অনেক দিন ধরেই। টি-টোয়েন্টিতে এই ধাঁচের ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে এসে শুরুতে কিছুটা সময় নিয়ে, সিঙ্গেলস–ডাবলসে ইনিংসটা বড় করেন। নিশ্চিত না হয়ে একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে চান না। তবে কোনো কারণে ইনিংসটা বড় করতে না পারলে তখনই বাধে বিপত্তি। শুরুতে অনেক বল খেলে ফেলায় আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁরা রান পেলেও একটা কিন্তু থেকে যায়।
Also Read: ‘০০৭’ রোহিত শর্মা যেন ‘জেমস বন্ড’
তবে রোহিত যতই সোজাসাপটা বলুন না কেন, এরপরও বিতর্কটা চলবে। কারণ, প্রথম বল থেকেই চড়াও হওয়ার জন্য দলে অতি–আক্রমণাত্মক ক্রিকেটারের দরকার, যা এই মুহূর্তে বেশির ভাগ দলের কাছেই নেই। তাই রোহিতের দলের জন্য যে কথাটা সত্য, সেটা অন্য সবার জন্য না–ও হতে পারে।
রোহিত সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছেন ৪২২টি, রান করেছেন ১১ হাজারেরও বেশি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা খেলতে চান ভিন্নভাবে, ‘এই সংস্করণটা একইভাবে আমি অনেক বছর ধরে খেলছি। আমি এখন ভিন্ন কৌশলে খেলতে চাই। এটা করতে গিয়ে যদি আউট হয়ে যাই, তা আমাকে খুব বেশি বিরক্ত করে না। যদি লক্ষ্য করেন, চেন্নাই আর মোহালিতে আমি শূন্য করেছি, পরের ম্যাচে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে আমি প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলেছি। ভেবেছি, টানা তিনবার ব্যর্থ হয়েছি, ঠিক আছে, এরপরও এভাবেই আমি খেলতে চাই। আপনি যদি বড় কোনো স্কোর করেন, সেটা তো অবশ্যই ভালো। কিন্তু ১০-১৫-২০ বলে ৩০-৪০ রানও কিন্তু খুব ভালো।’
রোহিতের ভিন্নভাবে খেলতে চাওয়ার ছাপ আছে তাঁর এবারের আইপিএলের স্ট্রাইক রেটেও। এই মৌসুমে রোহিত ব্যাট করছেন ১৩৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে—যা ২০১৫ আইপিএল মৌসুমের পর সর্বোচ্চ।