একি কাণ্ড ইকার্দির...

.

ঝামেলা এত ভালো লাগে মাউরো ইকার্দির!
ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ডের জীবনে এমনিতেই ঝামেলার অভাব ছিল না। সতীর্থের বউকে পটিয়ে বিয়ে করেছেন। এর পর থেকেই আর্জেন্টাইনদের চোখে তিনি রীতিমতো খলনায়ক। ডিয়েগো ম্যারাডোনার চোখে ইকার্দি তো একজন ‘মৃত মানুষ’, ‘বিশ্বাসঘাতক’! গুজব রটেছে এ কারণেই নাকি আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে তাঁর সুযোগ হচ্ছে না। যাঁর বউকে পটিয়েছেন সেই ম্যাক্সি লোপেজ যে দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির বন্ধু।
কিন্তু ইকার্দির বোধ হয় এতেও চলছিল না। ২০১৫ সালে সাসসুয়োলো ম্যাচের শেষে আবার সমর্থকদের এক অংশ ‘আলট্রা’র সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়েছিল ইকার্দি। সেটা এত দিনে ভুলেও গিয়েছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু সেটাই আবার নিজের আত্মজীবনীতে খুঁচিয়ে বের করে আনলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই কেন আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছা হলো সে প্রসঙ্গ নাহয় দূরেই সরিয়ে রাখা যাক আপাতত। কিন্তু নিজের আত্মজীবনী সেম্প্রে অ্যাভান্তি বা ‘সব সময় এগিয়ে’তে সেদিনের ঘটনা এমনভাবেই বর্ণনা করেছেন, এখন অধিনায়কত্বই যেতে বসেছে তাঁর!
সাসসুয়োলোতে ম্যাচের পর সমর্থকদের জার্সি উপহার দিচ্ছিলেন ইকার্দিরা। কিন্তু ক্ষিপ্ত সমর্থকেরা সেটা উল্টো ছুড়ে মারছিলেন গ্যালারি থেকে। ইকার্দি তখন খেপে শাসান সমর্থকদের এক নেতাকে, ‘তুমি ফালতু লোক, একটা বাচ্চাকে ব্যবহার করে নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করতে চাইছ। তোমার লজ্জা পাওয়া উচিত।’
বইয়ে ইকার্দি দাবি করেছেন, এ ঘটনা ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের কাছে তাঁকে নায়ক বানিয়ে দিয়েছে। ক্লাবের এক পরিচালক উগ্র সমর্থকদের ব্যাপারে সাবধান করায় ইকার্দি উল্টো দাবি করেন, ‘আমি ওদের সামনে দাঁড়াতে প্রস্তুত। আমি এমন এক জায়গা থেকে উঠে এসেছি, যেখানে রাস্তায় মানুষকে মেরে ফেলে রাখা হতো। ওরা কজন আসবে, পঞ্চাশ? এক শ? আমিও আর্জেন্টিনা থেকে এক শ গুন্ডা আনব যারা এদের (উগ্র সমর্থক) শেষ করে দেেব!’
আত্মজীবনীতে এমন উগ্র ভাষায় অপমান করায় খেপেছেন ইন্টার সমর্থকেরা। পরশু ক্যালিয়ারির ম্যাচে ইকার্দির বিরুদ্ধে তাঁরা তো ব্যানার নিয়ে উপস্থিত। ‘ওর মতো লোক অধিনায়ক হতে পারে না। আর্মব্যান্ড খুলে ফেলো, ভাঁড়!’ তবে সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ ছিল ‘আলট্রা’রাই, ‘ইকার্দি একজন মিথ্যুক। আমাদের অধিনায়ক এতটা অহংকারী হবে এবং এমন গালগল্প বানাবে, সেটা আশা করিনি। ইকার্দি জানেই না সম্মান কী জিনিস!’
বিপদে ক্লাবকেও সঙ্গী পাচ্ছেন না ইকার্দি। ক্লাবের আর্জেন্টাইন সহসভাপতি হাভিয়ের জানেত্তি এ ঘটনায় সমর্থকদেরই পক্ষ নিচ্ছেন, ‘আমরা কি কোনো ব্যবস্থা নেব? দুর্ভাগ্যজনকভাবে, হ্যাঁ। ক্লাবের জন্য সমর্থকেরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাবের কারও কাছ থেকেই এ রকম আচরণ আমরা মেনে নিতে পারি না।’
পরশু দিনটি ক্লাবের জন্যও ভালো যায়নি, ক্যালিয়ারির কাছে ২-১ গোলে হেরেছে ইন্টার। ক্ষতে জ্বলুনি বাড়িয়ে দিতেই যেন এ ম্যাচে পেনাল্টি নষ্ট করেছেন ইকার্দি! সূত্র: গার্ডিয়ান, রয়টার্স।