Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্বকাপ শুরুর গল্পটা জানেন?

প্রথম বিশ্বকাপজয়ী উরুগুয়ে দল। ফাইল ছবি
>

বিশ্বকাপ, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের পর্দা ওঠার আর মাত্র ৩০ দিন বাকি। দুরু দুরু বুকে ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছেন নিশ্চয়ই। শুরু হয়েছে প্রথম আলো অনলাইনেরও ‘কাউন্টডাউন’। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে ক্ষণগণনা নিয়ে একটি বিশেষ রচনা থাকছে। আজ থাকছে ‘৩০’ সংখ্যাটি নিয়ে। ১৯৩০ বিশ্বকাপেই শুরু হয়েছিল এই মহাযজ্ঞ। কে ভেবেছিল, একদিন এটাই...

প্রতি চার বছর পর পুরো বিশ্বই মেতে ওঠে এক মহাযজ্ঞে। পুরো বিশ্বের আনাচকানাচে ছড়িয়ে পড়ে ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা। এই সবকিছুর শুরুটা হয়েছিল ১৯৩০ সালে। উরুগুয়েতে বসেছিল প্রথম বিশ্বকাপের আসর।

১৯৩০ সালের আগে অলিম্পিকই ছিল ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু ১৯৩২ সালের অলিম্পিকে ফুটবল আর থাকবে না বলে ঘোষণা আসে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির পক্ষ থেকে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েই ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিল ফিফা।

১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল উরুগুয়েকে। কারণ, তারাই ছিল সে সময়ের ফুটবল-বিশ্বের সবচেয়ে সফল দল। ১৯২৪ ও ১৯২৮ সালের দুটি অলিম্পিকেই সোনা জিতেছিল উরুগুয়ে। তবে ফিফার এ সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেনি ইউরোপের দেশগুলো। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে লাতিন আমেরিকায় গিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিতে রাজি হয়নি ইংল্যান্ড, ইতালি, জার্মানি ও স্পেনের মতো দেশগুলো। জাহাজে করে আটলান্টিক সাগর পাড়ি দিয়ে কেউ খেলতে যেতে রাজি হচ্ছিল না।

ফিফার তখনকার সভাপতি জুলে রিমে অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছিলেন বেলজিয়াম, ফ্রান্স, রোমানিয়া ও যুগোস্লাভিয়াকে। কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অংশ নিয়েছিল সাতটি দেশ, আর কোনো বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এতগুলো দল কখনো খেলেনি। এ ছাড়া উত্তর আমেরিকা থেকে ছিল মেক্সিকো আর যুক্তরাষ্ট্র।

১৩টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করে শুরু হয়েছিল প্রথম পর্বের লড়াই। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন চারটি দল খেলেছিল সেমিফাইনালে। ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল উরুগুয়ে।

দুই অর্ধে খেলা হয়েছে দুই দলের বল দিয়ে। ফাইল ছবি


ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম গোলটি করেছিলেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ত। নিজের প্রথম গোলটি সম্পর্কে পরে তিনি বলেছিলেন, ‘মেক্সিকোর সঙ্গে ম্যাচ ছিল আমাদের। দক্ষিণ গোলার্ধে তখন শীত চলছিল বলে তুষার পড়ছিল। আমার এক সতীর্থ সেন্টার করল। আমি সতর্কতার সঙ্গে বলটার পথ অনুসরণ করলাম। ডান পায়ে ভলি করলাম। গোলটা হয়ে সবাই বেশ খুশি হয়েছিল, তবে আমরা তেমন একটা উদ্‌যাপন করিনি। কেউ বুঝতে পারেনি, ইতিহাস গড়া হয়ে গেল। দ্রুত কিছু করমর্দন করে আবার খেলায় নেমে পড়লাম সবাই। কোনো বোনাসও ছিল না। আমরা আসলে সবাই তখন অপেশাদার ফুটবলার ছিলাম, ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত।’

তখনকার বিশ্বকাপ কেমন ছিল, তা বোঝা যাবে এই তথ্যেও। ফাইনালে কোন দলের বল নিয়ে খেলা হবে, এ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিবাদ। আর্জেন্টিনা আর উরুগুয়ে প্রতিবেশী দুই দেশ। ফুটবলে তাদের সম্পর্ক তখন থেকেই সাপে-নেউলে। আর্জেন্টিনা রাজি নয় উরুগুয়ের দেওয়া বল দিয়ে খেলার জন্য। পরে আপস হলো। দুই অর্ধে খেলা হবে দুই দলের বল দিয়ে।
প্রথম অর্ধে খেলা হয়েছিল আর্জেন্টিনার বল দিয়ে। প্রথমার্ধ শেষে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে এগিয়েও ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তিনটা গোল হজম করে বসে তারা।

একনজরে প্রথম বিশ্বকাপ
স্বাগতিক : উরুগুয়ে
তারিখ : ১৩-৩০ জুলাই (১৮ দিন)
দল : ১৩টি
ভেন্যু : এক শহরের তিনটি মাঠে
মোট ম্যাচ : ১৮টি
গোল : ৭০ (প্রতি ম্যাচে গড়ে ৩.৮৯)
সর্বোচ্চ গোলদাতা : গিলের্মো স্তাবিল (আর্জেন্টিনা, ৮টি)
চ্যাম্পিয়ন : উরুগুয়ে