ব্রাদার্সকে উড়িয়ে এএফসি কাপের প্রস্তুতি সারল বসুন্ধরা কিংস
এএফসি কাপে মাঠে নামার আগে এর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি আর কীভাবেই–বা হতে পারত বসুন্ধরা কিংসের? ৯ মে এএফসি কাপে খেলতে মালদ্বীপ যাওয়ার কথা প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের। এর আগে লিগে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে আজ রাতে বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়নের।
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে তলানির দিকের ব্রাদার্সের লড়াইটা যে একপেশে হবে, তা একরকম অনুমিতই ছিল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত বসুন্ধরা কিংস ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে গোপীবাগের দলটিকে।
ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন তৌহিদুল আলম ও রবসন রবিনহো। একটি গোল করেছেন জোনাথন ফার্নান্দেজ। ব্রাদার্সের একমাত্র সান্ত্বনার গোলটি উজবেক ডিফেন্ডার ফুরকাত জনের।
এ জয়ে যথারীতি শীর্ষেই রইল বসুন্ধরা কিংস। ১৫ ম্যাচে ১৪ জয় ও ১ ড্রয়ে ৪৩ পয়েন্ট তাদের। আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডির পয়েন্ট সমান ৩২। বসুন্ধরা কিংসের পেছনে রয়েছে আবাহনী ও শেখ জামাল। দুই দলই তাদের থেকে পিছিয়ে ১১ পয়েন্টের ব্যবধানে।
প্রিমিয়ার লিগে উড়তে থাকা বসুন্ধরা কিংস ২২ মিনিটে এগিয়ে গেছে জোনাথান ফার্নান্দেজের গোলে। ডান প্রান্ত থেকে মাহবুবুর রহমানের বাড়িয়ে দেওয়া বলটি এসে পড়ে বক্সে দাঁড়ানো জোনাথনের সামনে। অরক্ষিত জোনাথন সহজেই প্লেসিংয়ে করেন ১-০। অবশ্য এ অগ্রগামিতা খুব বেশি সময় ধরে রাখতে পারেনি বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ব্রাদার্সকে সমতায় ফেরান ফুরকাত জন। বক্সের মধ্যে জটলায় পাওয়া বলটি মোমুদা বা বাড়িয়ে দেন জনকে। জোরালো শটে গোলরক্ষক আনিসুর রহমানকে ফাঁকি দিয়ে বল ঢোকে জালে।
কিন্তু এ গোল দিয়ে যেন মৌচাকে ঢিল ছুড়ল ব্রাদার্স! এরপর একে একে আরও এক হালি গোল দিয়ে তবেই থেমেছে বসুন্ধরা কিংস।
বিরতির ঠিক আগে রবসনের গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। দ্বিতীয় লেগে টানা তিন ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাওয়া তারিক কাজীর এ গোলে ছিল ভালো অবদান। তারিক কাজির পাস থেকে রবসন প্রথমে বাঁ পা দিয়ে বল রিসিভ করেন, এরপর ডান পা দিয়ে ঠান্ডা মাথায় প্লেসিংয়ে করেন ২-১। অথচ রবসনের সামনে তখনো তিন ডিফেন্ডার দাঁড়িয়ে!
ম্যাচের ৫৯ মিনিটে তৌহিদুল আলম করেন ৩-১। মাহবুবুর রহমান মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ঢোকেন বক্সে। এরপর রবসনের সঙ্গে একবার দেওয়া নেওয়া করে বলটি বাড়িয়ে দেন তৌহিদুলকে। প্রথম চেষ্টায় না পারলেও দ্বিতীয়বারে ঠিকই বলটা বানিয়ে নিয়ে গোল করেছেন তিনি। তৌহিদুল এরপর ৭৪ মিনিটে বসুন্ধরার চতুর্থ ও নিজের জোড়া গোল করেন। এ বলের জোগানদাতা ছিলেন ফার্নান্দেজ। লিগে এটা তৌহিদুলের ষষ্ঠ গোল।
ব্রাদার্সের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেছেন রবসন। ৮০ মিনিটে ফ্রি–কিক থেকে মানবদেয়ালের ওপর দিয়ে শূন্যে ভাসিয়ে বল জালে ঢোকান এই ব্রাজিলিয়ান। ম্যাচের পঞ্চম গোলটি করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার (১৬টি) জায়গাটাও ধরে রাখলেন রবসন। অবশ্য ৮১ মিনিটে ব্রাদার্স প্রধান গোলরক্ষক জাফর সর্দারকে তুলে মাঠে নামায় মহিউদ্দিন রানুকে। কিন্তু ততক্ষণে যা সর্বনাশ হওয়ার তো হয়েই গেছে। আরও একটা হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্রাদার্স। ১৫ ম্যাচে ১ জয়, ২ ড্র ও ১২ হারে ৫ পয়েন্ট পাওয়া ব্রাদার্সের এখন থেকেই যেন অবনমন চোখ রাঙাচ্ছে!