মেসি-রোনালদো-নেইমার আছেন, শুধু সুয়ারেজ নেই

ফ্রান্স ফুটবলেরবর্ষসেরা একাদশে আছেন তিন ​তারকাই। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্রান্স ফুটবলেরবর্ষসেরা একাদশে আছেন তিন ​তারকাই। ছবি: সংগৃহীত।

হরিহর আত্মা— কথাটা তাঁদের তিনজনের সঙ্গে খুব যায়। মাঠে তাঁদের সম্পর্কের রসায়নের সুফলটা বার্সেলোনার সাফল্যের রেকর্ডেই প্রমাণিত। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের সম্পর্কটা মাঠের বাইরেও বন্ধুর মতো। এমনই গলায়-গলায় ভাব তাঁদের যে ম্যাচে কোনো একজন গোল না পেলে নাকি অন্য দুজনের মন খারাপ হয়ে যায়।
একজন গোল না পেলে অন্য দুজনের খারাপ লাগার এই ব্যাপারটা যদি অন্য সব ক্ষেত্রেও কাজ করে, তাহলে এখন একটু মন খারাপ হবে লিওনেল মেসি ও নেইমারের। বিশ্বখ্যাত ফুটবল ম্যাগাজিন ফ্রান্স ফুটবল ২০১৫ সালের সেরা একাদশ নির্বাচন করেছে। তাতে মেসি-নেইমার দুজনই নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু বাদ পড়ে গেছেন সুয়ারেজ। মন তো খারাপই হওয়ার কথা ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দুই মহাতারকার।
বছর শেষ হয়ে এসেছে। এ সময়ে অনেক সংবাদমাধ্যমই নিজেদের মতো করে সেরা একাদশ, সেরা খেলোয়াড়— এমন অনেক কিছু নির্বাচন করে। তবে এর মধ্যেও ইউরোপিয়ান ফুটবলের এমন যেকোনো ‘নির্বাচনে’ ফ্রান্স ফুটবলের রায়কে আলাদা গুরুত্ব দিতেই হবে। ২০১০ সালে ফিফার সঙ্গে মিলে “ফিফা ব্যালন ডি’অর” নামকরণের আগে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘ব্যালন ডি’অর’ ঘোষণা করত এই ম্যাগাজিনটিই। তাই তাদের নির্বাচিত একাদশকে অন্য যেকোনো বর্ষসেরা একাদশের মানদণ্ড হিসেবে মেনে নিতে পারেন।
৪-৩-৩ ফর্মেশনে আক্রমণভাগের দুজন খেলোয়াড়ের নাম তো জানলেন। বাকি খেলোয়াড়টি কে, তা অনুমান করতেও নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হচ্ছে না— ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অবশ্য সুয়ারেজ-লেভানডফস্কিদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান রেখেই বলা যায়, এই তিনজনেরই তো এই একাদশে থাকার কথা। এ বছরে শিরোপা-পঞ্চক জয়ের নেপথ্যে ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর সবারই অবদান অনেক, তবে এর মধ্যেও নেইমার আর মেসিই ছিলেন মূল চালকের ভূমিকায়। আর রোনালদো তো গত মৌসুমে করেছেন ৬০ গোল। এই মৌসুমেও শুরুটা খুব বেশি ভালো না হলেও ধীরে ধীরে নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। আগামী ১১ জানুয়ারি জুরিখের মঞ্চে ফিফা ব্যালন ডি’অরের জন্য তো আর এমনি এমনি নির্বাচিত হননি মেসি-রোনালদো-নেইমার।
এই তিনজনকে নিয়ে একাদশে স্প্যানিশ লিগের খেলোয়াড়ই আছেন সাতজন। তাতে ৪ জনই বার্সেলোনার, রিয়াল মাদ্রিদ থেকে শুধু রোনালদো, আর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও সেভিয়ার ১ জন করে। বাকি চারজন খেলোয়াড়ের মধ্যে বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ১ জন করে, আর দুজন ইতালির সিরি আ' চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের খেলোয়াড়।
মেসি-নেইমারের পাশাপাশি বার্সেলোনা থেকে বাকি যে দুজন খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা হলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও দানি আলভেজ। বর্ষসেরা একাদশে মিডফিল্ডে ইনিয়েস্তা সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন গত মৌসুমে ইউরোপা লিগ জয়ী সেভিয়ার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গ্রেজেগর্জ ক্রিখোবিয়াক ও এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়া বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনকে। ভাবুন তো, একদিকে ক্রিখোবিয়াক প্রতিপক্ষের আক্রমণ নষ্ট করে দিচ্ছেন, আর সামনে বার্সেলোনার ‘ইঞ্জিন’ ইনিয়েস্তা ও গত মৌসুমে ইউরোপের সেরা লিগগুলো মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করা খেলোয়াড় ডি ব্রুইন সৃষ্টিশীলতার ফুল ফোটাচ্ছেন।
এ তো গেল মিডফিল্ড। ডিফেন্ডার কারা হচ্ছেন। রাইট ব্যাক হিসেবে আলভেজ থাকছেন সেটি তো জেনেই গেলেন। ডিফেন্সে তাঁর সঙ্গী বাকি ৩ জন হচ্ছেন - জুভেন্টাসের জর্জিও কিয়েল্লিনি, অ্যাটলেটিকোর ডিয়েগো গোদিন ও বায়ার্ন মিউনিখের ডেভিড আলাবা।
গোলরক্ষক হিসেবে কে থাকছেন অনুমান করতে পারছেন? চ্যাম্পিয়নস লিগে রানার্সআপ এবং ইতালিয়ান লিগ ও কাপ জয়ী জুভেন্টাস কিংবদন্তি জিয়ানলুইজি বুফন।

একাদশ:
গোলরক্ষক: বুফন
ডিফেন্স: আলভেজ, কিয়েল্লিনি, গোদিন ও আলাবা
মিডফিল্ড: ক্রিখোবিয়াক, ডি ব্রুইন, ইনিয়েস্তা।
ফরোয়ার্ড: রোনালদো, নেইমার, মেসি।