ছবির ক্যাপশনেও গল্পটা লুকিয়ে আছে। যে ক্যাপশনে লেখা: ‘যখন লিওনেলের সঙ্গে লিওনেলের দেখা। ওর মা আমার নামে ওর নাম রেখেছিলেন... আর আজ আমাদের দেখা হলো। এত বছর পর দেখা হয়ে ভালো লাগল।’
ছবিটা ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন এক ‘লিওনেল’, যাঁকে পৃথিবী চেয়ে লিওনেল রিচি নামে। আর ছবিতে তাঁর সঙ্গে দেখা যাচ্ছে আরেক ‘লিওনেল’কে, যিনি এ পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিচিত লিওনেল মেসি নামে।
একজন সংগীতের রাজা। অন্যজন ফুটবলের রাজপুত্র। একজন আশি ও নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় গায়ক-গীতিকার, অন্যজন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। একজন সুরের জাদুকর, অন্যজন ফুটবলের।
ফ্লোরিডার সময় গত বুধবার সন্ধ্যায়, ইন্টার মায়ামির চেজ স্টেডিয়ামে সেদিন কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে মেসির দলের প্রতিপক্ষ ছিল এলএএফসি। যে ম্যাচে এলএএফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ইন্টার মায়ামি। জোড়া গোল করে দলের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল মেসির। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের টানেলে ইন্টার মায়ামির নায়কের সঙ্গে দেখা হয় ‘দ্য কমোডোরস’ ব্যান্ডের একসময়ের নেতার। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের সঙ্গে হাত মেলান ‘হ্যালো’, ‘এন্ডলেস লাভ’ ও ‘অল নাইট লং’–এর মতো বিখ্যাত সব গানের গায়ক।
মেসির লিওনেল নামটা যে লিওনেল রিচির নাম থেকে অনুপ্রাণিত, সেই গল্পটা প্রথম বলেছিলেন মেসির মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি। ২০১০ সালে প্রথম তাঁর মুখে শোনা যায় সেই গল্প। সে সময় আর্জেন্টিনার টেলিভিশন চ্যানেল তেলেফেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মারিয়া কুচ্চিত্তিনি বলেছিলেন মেসির জন্মের সময়ের কথা, ‘ওর জন্ম সহজ ছিল না। আমার ডেলিভারির নির্ধারিত সময় পার হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার বললেন, “আর ঝুঁকি নেব না, লেবার ইন্ডিউস করব।” সকাল ৬টায় হাসপাতালে গিয়েছিলাম, আর লিও জন্ম নেয় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। কিন্তু বিপত্তি বাধে নাম রাখায়। ছেলের জন্য নাম তো ঠিক করা হয়নি! আমি সব সময় “Leonel” নামটা পছন্দ করতাম। কিন্তু হোর্হে ওর নাম রাখে “Lionel”। তখন আমি বলি, “এটা তুমি কী করলে!” সে আমাকে বলল, “আমরা দুজনই তো লিওনেল রিচিকে খুব পছন্দ করি, তাই ওই বানানে রেখেছি।”’
এই গল্পটা পৌঁছায় লিওনেল রিচির কানেও। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, এটা বোধ হয় কারও বানানো মজার গল্প। কিন্তু পরে যখন নিশ্চিত হন, মেসির মা নিজেই বলছেন, তখন তিনি বেশ খুশি হন। পরে রিচি নিজেই বলেছিলেন, ‘আমি জানি ও গান গাইতে পারে না। কিন্তু আমিও তো ফুটবল খেলতে পারি না। আমরা বন্ধু হতেই পারি।’
অবশেষে সেই বন্ধুর দেখা পেয়েছেন রিচি। দুজনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, সেটা অবশ্য রিচি তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কিছু লেখেননি।