ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্যারিয়ার যতই শেষের দিকে এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে কৌতূহল। রোনালদো কি শেষ পর্যন্ত এক হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারবেন? এর আগে রোনালদো অবশ্য বলেছিলেন, ‘এক হাজার গোল হলে ভালো, না হলে সমস্যা নেই।’ কিন্তু এবার বললেন ভিন্ন কথা। রোনালদোর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে থামতে বললেও তিনি নিজে হাজারতম গোলের মাইলফলক না ছুঁয়ে থামতে চান না।
আল নাসর ফরোয়ার্ড রোনালদো পর্তুগালের হয়ে ২২৩ ম্যাচে ১৪১ গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন সর্বোচ্চ গোলদাতা। আর সব মিলিয়ে তাঁর গোল এখন ৯৪৬। চলতি মৌসুমেও আল নাসরের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ছয় ম্যাচে করেছেন ৫ গোল।
সম্প্রতি হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচে ৩৯তম গোল করে তিনি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায়ও যৌথভাবে শীর্ষে উঠেছেন।দুর্দান্ত ছন্দে থাকা রোনালদো এখন হাজারতম গোলের স্বপ্ন দেখতেই পারেন।
মাইলফলক থেকে ৫৪ গোল দূরে দাঁড়ানো রোনালদো বলেছেন, মানুষ, বিশেষ করে আমার পরিবার বলে, “তোমার এখন থেমে যাওয়ার সময় হয়েছে। তুমি সবকিছু অর্জন করেছ। এখন কেন আবার হাজার গোল করতে চাও?” কিন্তু আমি তা মনে করি না। আমি এখনো ভালো খেলছি, আমার ক্লাব ও জাতীয় দলকে সাহায্য করছি। তাহলে কেন থামব?’
রোনালদো আরও যোগ করে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, যখন আমি খেলা থেকে বিদায় নেব, তখন সম্পূর্ণ তৃপ্তি অনুভব করব। কারণ, আমি আমার সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি। আমি জানি, আমার সামনে আর খুব বেশি বছর নেই, কিন্তু যতটুকু আছে, সেগুলো আমি পুরোপুরি উপভোগ করতে চাই।’
পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী রোনালদো মঙ্গলবার তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে আরেকটি ব্যক্তিগত সম্মান যোগ করেছেন। পর্তুগাল ফুটবল গ্লোবস অনুষ্ঠানে তিনি পেয়েছেন প্রেস্টিজ অ্যাওয়ার্ড। পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রোনালদো বলেছেন, ‘এটা আমার ক্যারিয়ার শেষের পুরস্কার নয়। আমি একে দেখি বছরের পর বছর ধরে আমার পরিশ্রম, নিবেদন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার স্বীকৃতি হিসেবে। আমি জিততে ভালোবাসি, তরুণ প্রজন্মকে সাহায্য করতে পছন্দ করি। আর তারাও আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়, যাতে আমি আমার স্তর বজায় রাখতে পারি এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারি। তরুণদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করাটাই আমাকে রোমাঞ্চিত করে। আমি এখনো এই খেলাটির প্রতি গভীর আবেগ অনুভব করি।’
আন্তর্জাতিক বিরতিতে রোনালদোর পর্তুগাল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুটি ম্যাচ খেলবে। ১১ অক্টোবর পর্তুগাল খেলবে আয়ারল্যান্ডের মাঠে। এরপর ১৪ অক্টোবর পর্তুগাল আতিথ্য দেবে হাঙ্গেরিকে।
জাতীয় দলের প্রতি নিজের আবেগকে রোনালদো প্রকাশ করেন এভাবে, ‘আমি প্রায়ই বলি যদি পারতাম, আমি শুধু জাতীয় দলের জন্যই ফুটবল খেলতাম। অন্য কোনো ক্লাবের হয়ে খেলতাম না। কারণ, জাতীয় দল হলো একজন ফুটবলারের সর্বোচ্চ শিখর ও সম্মানের প্রতীক। জাতীয় দলের জার্সি পরে খেলা আমার জন্য এক বিশাল সম্মান।’
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ হবে রোনালদোর জন্য বিশ্বকাপ জেতার শেষ সুযোগ। রোনালদো বলেছেন, তাঁরা এখন ধাপে ধাপে এগোনোর ওপর জোর দিচ্ছেন, ‘আমি নিশ্চিত, পরবর্তী ম্যাচগুলো ভালো যাবে এবং আমরা বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করব। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট—বিশ্বকাপে যাওয়া এবং জেতা, কিন্তু সবকিছু ধাপে ধাপে করতে হবে।’