একজন গোল করেছেন, আরেকজন বাঁচিয়েছেন। আজকের রাতটা দেম্বেলে (বাঁয়ে) আর দোন্নারুম্মার
একজন গোল করেছেন, আরেকজন বাঁচিয়েছেন। আজকের রাতটা দেম্বেলে (বাঁয়ে) আর দোন্নারুম্মার

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ

দেম্বেলের গোলের পর দোন্নারুম্মার বীরত্ব, আর্সেনালকে হারিয়ে এগিয়ে গেল পিএসজি

আর্সেনাল ০–১ পিএসজি

লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামের ৬০ হাজার দর্শকের আসন হয়তো তখনো সেভাবে গরম হয়নি। হয়তো তাঁরা কোনো কিছু বুঝেও উঠতে পারেননি। এর মধ্যেই আচমকা এক আক্রমণ থেকে গোল!

এই গোল দেখতে নিশ্চয় প্রস্তুত ছিলেন না আর্সেনাল সমর্থকেরা। কারণ, জালটা যে কেঁপেছে আর্সেনালেরই। কাঁপিয়েছেন উসমান দেম্বেলে।

সেমিফাইনালের প্রথম লেগের চতুর্থ মিনিটে দেম্বেলের গোলের পর গোলপোস্টের নিচে বীরত্ব দেখিয়েছেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। আর্সেনালের পাঁচ–পাঁচটি গোলের সুযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন তিনি।

দোন্নারুম্মার অবিশ্বাস্য সেভগুলোর একটি

শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপজয়ী দেম্বেলের গোল আর ইউরোজয়ী দোন্নারুম্মার অসাধারণ সেভগুলোই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। তাতে আর্সেনালকে তাদেরই মাঠে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পথে এগিয়ে গেছে পিএসজি।  

আগামী বুধবার নিজেদের মাঠ প্যারিসের পার্ক দে প্রিন্সেসে ফিরতি লেগে হার এড়ালেই পাঁচ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠে যাবে পিএসজি। 

রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনাল যে দাপট দেখিয়েছিল, এর ছিটেফোঁটাও আজ দেখা যায়নি। বলের দখল, শট নেওয়া, পাস বাড়ানোর সংখ্যা, নিখুঁতভাবে বল বাড়ানো—সবকিছুতেই গানারদের চেয়ে এগিয়ে ছিল প্যারিসিয়ানরা। জমাট রক্ষণভাগ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, মিকেল আরতেতার দলকে রুখতে সব রকম ‘হোম ওয়ার্ক’ করে এসেছে লুইস এনরিকের দল।

রিয়ালের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে লক্ষ্যে ১১টি শট নিয়েছিল আর্সেনাল, আজ নিতে পেরেছে অর্ধেকেরও কম; ৫টি। সবই বৃথা গেছে দোন্নারুম্মা দেয়াল তুলে দাঁড়ানোয়।

দেম্বেলের জয়সূচক গোলের কৃতিত্বটা ‘জর্জিয়ান ম্যারাডোনা’ খিচা কাভারাস্কেইয়ার। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে বক্সে ঢুকে পড়েন কাভারাস্কেইয়া। এরপর আর্সেনালের দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে খুঁজে নেন দেম্বেলেকে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ড বল রিসিভ না করেই বাঁ পায়ে শট নেন। সেটাই আর্সেনাল গোলকিপার দাভিদ রায়াকে ফাঁকি দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। ১–০ স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লাইমলাইটে ডেকলান রাইস। এবার অবশ্য ফ্রি কিক থেকে সরাসরি গোল করে নয়; গোল করিয়ে অবদান রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন। রাইসের সেট পিস থেকে হেডে পিএসজির জালে বল পাঠিয়েছিলেন মিকেল মেরিনো। দল সমতা ফিরিয়েছে ভেবে এমিরেটস স্টেডিয়ামে তখন আনন্দের জোয়াড়।

কিন্তু সেমি–অটোমেটেড প্রযুক্তি যাচাই করে জানিয়ে দেয়, বলে হেড করার আগে মেরিনো অফসাইডে ছিলেন। ব্যস, গোল বাতিল।

সমতায় ফিরতে এরপরও কয়েকটি জোরালো আক্রমণ শানিয়েছেন লিয়ান্দ্রো ত্রোসার, বুকায়ো সাকা, গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিরা। কিন্তু দোন্নারুম্মা একাই একশ হয়ে গেলে কিছুই করা থাকে না।

আর্সেনালের বরং কপাল ভালো যে আরও গোল খায়নি। দেম্বেলের বদলি নামা ব্রাডলি বারকোলা ৮৩ মিনিটে রায়াকে একা পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন। মিনিট দুয়েক বাদে আরেক বদলি গনসালো রামোস শট নেন বার বরাবর।

আর্সেনাল কোচ মিকেল আরতেতার এই অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছে ম্যাচের ফল

এই সুযোগ দুটির অন্তত একটি কাজে লাগাতে পারলে ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে যেত পিএসজি। তবে লন্ডনে পাওয়া জয়ের স্বাদ নিয়ে প্যারিসে ফিরতে পারাই বা কম কী!