দেশের নারী ফুটবলাররা
দেশের নারী ফুটবলাররা

নারী ফুটবল ও এক টেলিভিশনের গল্প, রিমোট যখন সোনার কাঠি

একটা সময় ছিল, যখন গ্রামে এক বাড়িতে ১২-১৩টা ঘরের এক দুটিতে টেলিভিশন থাকত। বাড়ির অনেকে শেষ বিকেল কিংবা সন্ধ্যার পর ছুটে যেতেন সেই টিভি দেখতে। এখন আর তেমনটা হয় না। বরং শহরে একই বাসায় একাধিক টেলিভিশনের দেখাও মেলে।

তবে মোটের ওপর এখনো বাসাপ্রতি একটা টিভির প্রচলনই বেশি। আর যেখানে একটা, সেখানে রিমোটের দখল নিয়ে কাড়াকাড়ি তো একেবারে নৈমিত্তিক ঘটনা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) চারতলার নারী ফুটবলারদের ডেরায়ও একই গল্প! রিমোট যেন এক সোনার কাঠি, সবাই সেটার মালিক হতে চায়! ফলে টানাটানি চলে প্রতিনিয়ত।

বছরের বেশির ভাগ সময় বাফুফে ভবনের চারতলার আবাসিক ক্যাম্পে থাকেন নারী ফুটবলাররা। একসঙ্গে ৪০ থেকে ৪৫, কখনো আরও বেশি ফুটবলার নিয়ে চলে ক্যাম্প। যাঁদের বিনোদনের জন্য টেলিভিশনের ব্যবস্থা রেখেছে ফেডারেশন।

বাফুফে ভবন

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ফুটবলাররা দিনের একটা অংশ অনুশীলন-জিমে কাটানোর পর অবসর সময়ে কয়েকজন একসঙ্গে টিভি দেখেন। ৪২-৪৫ জনের জন্য ক্যাম্পের ডাইনিং রুমে একটি টিভি। রিমোট নিয়ে টানাটানি হবে না তো কী!  

কারও মন চায় বাংলা সিনেমা, কারও সিরিয়াল, আবার কেউ চান হিন্দি গানের ঝংকার! এই ভিন্ন ভিন্ন বায়নার চোটে রিমোট হাতে রাখা নিয়ে চলতে থাকে লড়াই। তবে যা হয় আর কী, শেষ হাসিটা হাসেন সেই সিনিয়র আপুরাই। তাদের ইচ্ছাই শেষ কথা!

ক্যাম্পে থাকা এক নারী ফুটবলার এই গল্পটা শুনিয়েছেন প্রথম আলোকে, ‘বেশির ভাগ সময় সকালে আমাদের অনুশীলন থাকে। আবার জিমে যেতে হয়। এর মধ্যে দিনে ঘুমানোর জন্যও একটা সময় থাকে। যা একটু সময় পাই, সেটা রাতে। তখন ডাইনিংয়ে একটা হই হুল্লোড় শুরু হয়। টিভি একটা, মানুষ যদি ২০ জন থাকে তাহলে কে কী দেখবে বলেন? সিনিয়র আপুরা মাঝেমধ্যে অনুষ্ঠান ঠিক করে দেন। এরপর কারও ভালো লাগলে দেখে, না হয় মন খারাপ করে রুমে চলে যায়।’

নিজেদের প্রস্তুত করছেন ফুটবলাররা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে ২৭ মে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলতে জর্ডান যাবে বাংলাদেশ নারী দল। সেখানে ৩১ মে থেকে ৩ জুনের মধ্যে জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নেবেন আফঈদারা। বর্তমানে চলছে সেই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৭ থেকে ১৮ মে ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করতে পারে বাফুফে। আপাতত সবার ভাবনা জর্ডান সফর নিয়ে। যেমনটা বললেন এই নারী ফুটবলার, ‘আমরা অনুশীলন করে যাচ্ছি। আগের চেয়ে প্রস্তুতি ভালো। দলে জায়গা পাওয়ার জন্য নিজের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা চলছে।’