আর্জেন্টিনার তরুণ তুর্কি মাস্তানতুয়োনো
আর্জেন্টিনার তরুণ তুর্কি মাস্তানতুয়োনো

আর্জেন্টিনার নতুন ‘মাস্তানের’ শরীর রিয়ালে, চোখ ২০২৬ বিশ্বকাপে

সম্প্রতি রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন আর্জেন্টিনার তরুণ তুর্কি মাস্তানতুয়োনো। রিয়ালে ভালো খেলে তিনি জায়গা পেতে চান ২০২৬ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা দলে।

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বিশ্ব ফুটবলে আলোড়ন তুলেছেন আর্জেন্টিনার নতুন বিস্ময়, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। রিভার প্লেট থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর তাঁর প্রতি আগ্রহ যেন কয়েক গুণ বেড়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেকও হয়ে গেছে তাঁর। আর সেটাও কীভাবে? রেকর্ড গড়ে!

গত ৫ জুন চিলির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে থিয়াগো আলমাদার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মাস্তানতুয়োনো। বয়স তখন ১৭ বছর ২৯৬ দিন। এর মাধ্যমে তিনিই হয়ে গেলেন আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অফিশিয়াল ম্যাচ খেলা ফুটবলার।

তবে কেবল বয়সে রেকর্ড গড়ে থেমে থাকার মানুষ নন মাস্তানতুয়োনো। জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করতে চান, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিততে চান একের পর এক শিরোপা। সম্প্রতি আর্জেন্টাইন টিভি চ্যানেল টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের স্বপ্ন আর লক্ষ্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এই উঠতি তারকা।

কয়েক দিন আগে ব্রাজিলিয়ান তরুণ এস্তেভাও বলেছিলেন, ভবিষ্যতে ব্যালন ডি’অরের জন্য লড়াই হবে তাঁর, লামিনে ইয়ামাল আর মাস্তানতুয়োনোর মধ্যে। এই মন্তব্য শুনে মাস্তানতুয়োনো একটু হেসে উত্তর দেন, ‘এস্তেভাও অসাধারণ এক ফুটবলার, সেটা তো সবাই জানে। সে দক্ষিণ আমেরিকায় দারুণ খেলেছে। তবে ব্যালন ডি’অরের মতো বিষয় এখন আমার মাথায় নেই। আমি আপাতত রিয়াল মাদ্রিদে নিজেকে মানিয়ে নিতে চাই, নিয়মিত খেলতে চাই এবং দলের হয়ে জিততে চাই। কারণ, ক্লাবের জন্য সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রিয়ালের হয়ে আমি অনেক কিছু জিততে চাই।’

মেসির সঙ্গে মাস্তানতুয়োনো

রিয়ালে নিজের লক্ষ্য নিয়েও দারুণ স্পষ্ট তিনি, ‘আপনি যদি আমার লক্ষ্য জানতে চান, বলব—চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা, লা লিগা জেতা। কিন্তু প্রথম কাজ হলো রিয়ালে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া, নিজের জায়গা বানানো। ব্যালন ডি’অরের মতো ব্যক্তিগত পুরস্কার নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না।’

ক্লাব ফুটবলের পাশাপাশি জাতীয় দলেও উচ্চাকাঙ্ক্ষী মাস্তানতুয়োনো। ২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন তিনি। বলেন, ‘বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য স্বপ্নের মতো। জাতীয় দলের হয়ে খেলাটাও ছিল একসময় স্বপ্ন। রিভার প্লেটে থাকতেই সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। তাই রিভারের হয়ে আমি সব সময় নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলেছি।’

এখন সেই একই মানসিকতা নিয়ে রিয়ালে লড়াই চালিয়ে যেতে চান মাস্তানতুয়োনো। ভবিষ্যতে আবার জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে কী করতে হবে, তা–ও জানেন ভালো করেই। বলেন, ‘যদি আমি নিয়মিত খেলতে পারি, নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারি, তাহলে জাতীয় দলে ডাক আসবে—আমি বিশ্বাস করি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে খেলাটা স্বপ্নের মতোই হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে আমার পরিশ্রম আর কোচদের সিদ্ধান্তের ওপর।’

আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা আর পরিশ্রমের ইঙ্গিত স্পষ্ট। মাস্তানতুয়োনো শুধু আরেক তরুণ প্রতিভা নন, তিনি হতে পারেন আর্জেন্টিনার ভবিষ্যতের এক উজ্জ্বল নাম।