ফ্লোরে নিকিতা নাগোরনি
ফ্লোরে নিকিতা নাগোরনি

টোকিও অলিম্পিক

রাশিয়ান ‘টাইফুন’ বয়ে গেল টোকিওতে

টোকিও অলিম্পিককে ঝামেলায় ফেলে দিচ্ছে আবহাওয়া। ঝড়ের পূর্বাভাস দেখে আগামীকালের আর্চারির ইভেন্ট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওদিকে আগামী পরশু সার্ফিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকবে, এই চিন্তা থেকে সার্ফিংয়ের দুটি ইভেন্টই আগামীকাল এগিয়ে আনা হয়েছে।

যদিও নিকিতা নাগোরনির দাবি, ঝড় নিয়ে আর দুশ্চিন্তা না করলেও চলবে। যে টাইফুন আসার কথা ছিল, সেটা আজই চলে এসেছে টোকিওতে। রাশিয়া জিমন্যাস্টিকের রূপ নিয়ে অলিম্পিকের ফ্লোরে বয়ে গেছে সে ঝড়।

সতীর্থরা তখনই বুঝে গিয়েছিলেন নাগোরনি কী এনে দিচ্ছেন তাঁদের

রাশিয়া আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকসে সর্বশেষ দলগত সোনা জিতেছিল ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকে। এরপর আর এই ইভেন্টে সোনা জেতা হয়নি তাদের। আজও সে পথেই এগোচ্ছিল রাশিয়া। প্রথম দিকে ভালোই পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছিল রিও অলিম্পিকের সোনাজয়ী জাপানের সঙ্গে। পঞ্চম রাউন্ড শেষেও এগিয়ে ছিল রাশিয়া। দুইয়ে ছিল চীন। কিন্তু শেষ রাউন্ডে হরাইজন্টাল বারে জাপানের দাইকি হাশিমোতো ১৫.১০০ পয়েন্ট তুলে ঝামেলা বাধিয়ে দেন।

ষষ্ঠ রাউন্ডে এসেই যেন নিজেদের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্সটা দেখান ডেনিস আবলিয়াজিন ও আর্তুর দালালোয়ান। ফ্লোর ইভেন্টে আবলিয়াজিন মাত্র ১৩.৯০০ তুলেছেন। দালায়লোয়ানও তুলেছেন ১৪.০৬৬ পয়েন্ট। শেষ রাউন্ডে ডেভিড বেলিয়াভস্কি ছিলেন অসহায় দর্শক। হাসিমোতোর বারের পারফরম্যান্সের পর জাপানের পয়েন্ট হয়ে যায় ২৬২.৩৯৭। আর চীনের পয়েন্ট তখন ২৬১.৮৯৪।

স্কোরের জন্য অপেক্ষা

সোনা জিততে হলে ফ্লোর ইভেন্টে নাগোরনিকে দিনের সেরা স্কোরের কাছাকাছি করতে হতো। একদম প্রথম রোটেশনে জাপান ও চীনের প্রতিযোগীদের পাওয়া সেই ১৪.৬০০ পয়েন্টের কাছাকাছি আর কেউ যেতে পারেননি। এমন চাপের মুখে ঠিকই ১৪.৬৬৬ পয়েন্ট পেয়েছেন নাগোরনি। পর্দায় স্কোরটা দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়ে রাশিয়া দল।

একটু স্বাভাবিক হতেই রসিকতায় মাতলেন নাগোরনি, ‘আজ সকালে টাইফুনের খবর দেওয়া হয়েছিল, খেয়াল আছে? সে টাইফুন মাত্র হয়ে গেল। আমরা পদকটা নিয়ে নিয়েছি, সুতরাং টাইফুন নিয়ে আর ভেবো না।’

ফ্লোরে দুর্দান্ত করেছেন নাগোরনি

বিশ্ব অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন নাগোরনি বলছিলেন স্কোর জানার জন্য কতটা অস্থির হয়ে উঠেছিলেন, ‘আমি চাইছিলাম যত দ্রুত সম্ভব স্কোরটা জানাক। চিন্তায় ছিলাম বিচারকেরা হয়তো স্বাগতিক দলকে পদক দিতে চাইবেন। আমি তিনটি কম্বিনেশন ভেবে রেখেছিলাম। একটা খুব সহজ প্রোগ্রাম এবং একটা আমার নিজের। আমি সহজটাই বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু একটা ভুল হওয়ায় শেষ দিকে একটু বদল এনেছি।’

ওদিকে দলকে বিপদে ফেলে দেওয়া আবলিয়াজিন জানিয়েছেন কতটা ভয়ে ছিলেন তিনি, ‘আমরা জানতাম ফ্লোরে ভালো করলেই হবে। জানতাম ভালো করলে একটা পদক জুটবে কিন্তু সেটা কোনটা (সোনা, রুপা না ব্রোঞ্জ) সেটা বুঝতে পারছিলাম না। যখন দাগের বাইরে পড়লাম, খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কারণ, ফ্লোর এক্সারসাইজই এখানে সবকিছু। আমরা এক-দশমাংশ পয়েন্টের ব্যবধানে জিতেছি, সেটা তো আসলে কিছুই না।’