খুদে জিমন্যাস্টদের উৎসাহ দিতে গিয়েছিলেন মামুনুল ইসলাম
খুদে জিমন্যাস্টদের উৎসাহ দিতে গিয়েছিলেন মামুনুল ইসলাম

ফুটবলার মামুনুল খুদে জিমন্যাস্টদের মেলায়

পল্টন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো অডিটরিয়ামে এমন দৃশ্য আগে দেখা যায়নি। স্কুলের খুদে ছেলেমেয়েরা জিমন্যাস্টিকসের নানা কসরত দেখাচ্ছে। অডিটরিয়াম রীতিমতো গমগম করছে। অভিভাবকেরা একপাশে বসে, আরেক পাশে বিচারকেরা।

কিশোর-কিশোরীদের এই সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন। দুই দিনের পঞ্চম জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকসের শেষ দিনে আজ নবীন জিমন্যাস্টদের অনুপ্রেরণা হয়ে এসেছিলেন মামুনুল ইসলাম।

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল সাবেক জিমন্যাস্টও। ১৯৯৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন জিমন্যাস্টিকসেই। তিন বছর পর ফুটবলে চলে যান। দুবার ঢাকায় জাতীয় জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছিলেন। ফ্লোর ইভেন্টে একটি পদকও জিতেছিলেন।

জিমনেসিয়ামে আজ খুদে জিমন্যাস্টদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন মামুনুল। তাদের হাতে পুরস্কারও তুলে দিয়েছেন। এক ফাঁকে বললেন, ‘জিমন্যাস্টিকস করলে যেকোনো খেলাতেই ভালো করা যায়। আমার ফুটবলার হওয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছে জিমন্যাস্টিকস। দেখে ভালো লাগছে যে জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকসে প্রচুর ছেলেমেয়ে এসেছে। পরিচর্যা করলে এখান থেকে ভালো জিমন্যাস্ট বেরিয়ে আসতে পারে।’

মামুনুলের বিশ্বাস, এখান থেকে ভালো জিমন্যাস্ট বেরিয়ে আসবে

৪৮টি স্কুল ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে এবারের প্রতিযোগিতায়। ঢাকার স্কুলগুলো তো ছিলই, এর বাইরে বান্দরবানের লামার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিকেএসপি, দিনাজপুর, নারায়ণঞ্জের পুবেরগাঁও, পটুয়াখালী, যশোরের আরও কয়েকটি অঞ্চল থেকে এসেছে ছেলেমেয়েরা।

৭-৮, ৯-১০, ১২-১৪ ও ১২-১৫ বছর বিভাগে প্রতিযোগিতা হয়েছে। পদকের জন্য খুব প্রতিযোগিতা হয়েছে, তা অবশ্য বলা যাচ্ছে না। বান্দরবানের কোয়ান্টাম স্কুল অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিকসে রাজত্ব করছে। এবার তো ৬টি বিভাগে ৩৪টি ইভেন্টের সবকটি সোনাই জিতেছে বান্দরবানের এই স্কুল।

ছেলেদের বিভাগে ৫টি ব্যক্তিগতসহ সর্বোচ্চ ৬টি সোনা জিতেছে ওয়ে ওয়ে সাই মারমা। মেয়েদের মধ্যে সিং মেনু মারমা জিতেছে সর্বোচ্চ ৩টি সোনা। ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়নও হয়েছে এই দুজন।

প্রতিযোগিতায় ঢাকার শিশু পরিবারের ৩০ জনসহ মোট ৫০ জন এসেছে। নারায়ণগঞ্জের পুবেরগাঁও অঞ্চলের ৬টি স্কুলের ৪৫ জন। দিনাজপুরের বিভিন্ন স্কুল থেকে এসেছে ২৯ জন। পটুয়াখালী থেকে ১৬ জন। সব মিলিয়ে প্রতিযোগীর সংখ্যা ২৩৫। বাংলাদেশে কোনো জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় যা সর্বোচ্চ। এ বছর মার্চে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন প্রথমবারের মতো যে স্কুল জিমন্যাস্টিকস আয়োজন করেছিল, তাতে প্রতিযোগীর সংখ্যা ছিল ১৯৫।

পঞ্চম জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকসে পারফর্ম করছেন এক প্রতিযোগী

বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানও এত প্রতিযোগী দেখে স্বপ্ন দেখার সাহস পাচ্ছেন। নবীন শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে পারলে আগামী দিনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করা খুবই সম্ভব বলে মনে হচ্ছে তাঁর।

খুদে জিমন্যাস্টদের উৎসাহ দিতেই মামুনুলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাবিবুর, ‘বিকেএসপিতে মামুনুল আমাদের জুনিয়র ব্যাচের। এই প্রথম জিমন্যাস্টিকসের কোনো প্রতিযোগিতায় এসেছে সে। নবীনদের নিজের জিমন্যাস্ট পরিচয়ের কথা বলেছে। ওরা অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছে।’