কিছুদিন ধরেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল, আগামী জানুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় দক্ষিণ এশিয়ান গেমস (এসএ গেমস) হচ্ছে না। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ( বিওএ) যোগাযোগ করেও গেমস আয়োজনের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পায়নি এত দিন। পাকিস্তানের নীরবতা দেখে অনুমান করা যাচ্ছিল, গেমস আরও পিছিয়ে যাবে।
শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। বাহরাইনে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এশিয়ান যুব গেমসের সময় দক্ষিণ এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের সভায় পাকিস্তান জানায়, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে গেমস আয়োজন করতে পারবে না তারা। পাকিস্তান বিষয়টি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব সদস্যদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।
১৪তম এসএ গেমস কবে হবে, সেটাও অনিশ্চিত। ওই সভায় পাকিস্তান ২০২৭ সালের নভেম্বরে গেমস আয়োজন করতে চায় বলে জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সৌদি আরবে অবস্থানরত বিওএর মহাপরিচালক ব্রি. জেনারেল এ বি এম শেফাউল কবীর (অব.) প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাকিস্তানের দেওয়া তথ্যটি আমরা ফেডারেশনগুলোকে জানিয়ে দিয়েছি। আয়োজক কমিটি ৩০ নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর আমরা আবার সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনগুলোকে জানিয়ে দেব।’
এসএ গেমস সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এবার গেমসে বাংলাদেশ ২৬টি খেলায় অংশ নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছিল। কিন্তু অনিশ্চয়তা ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে প্রস্তুতির খরচ না পাওয়ায় কাবাডি, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, উশু, কুস্তিসহ কয়েকটি ফেডারেশন তাদের ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্য ফেডারেশনগুলোও ক্যাম্প গুটিয়ে নেবে দ্রুতই। খেলোয়াড়েরা এতে হতাশ। বাংলাদেশের সাবেক দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘দুই বছরের মধ্যে অনেক ক্রীড়াবিদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। অনেকের বয়স হয়েছে, ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফিটনেস না–ও থাকতে পারে। যারা বর্তমান অ্যাথলেট, তারা এই গেমসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এখন সেই আশা ভঙ্গ হলো।’
ইমরানুরকে নিয়ে এবার বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস দলের লক্ষ্য ছিল রিলেতে ভালো করা। সেটা জানিয়ে ইসমাইল যোগ করেন, ‘গেমস দুই বছর পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা খুব হতাশ। এখন উচিত হবে, পাকিস্তান থেকে অন্য কোনো দেশে গেমস সরিয়ে নেওয়া। অ্যাথলেটদের জন্য এটি মঙ্গল।’
গত জাতীয় সাঁতারে নারী বিভাগে সেরা রোমানা আক্তারও হতাশ। কারণ, সাঁতারুরাও তাকিয়ে ছিলেন এসএ গেমসের দিকে। রোমানা বলেন, ‘এসএ গেমসের দিকে তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদেরা। এখন এটি না হলে খেলোয়াড়দের জন্য বিরাট ক্ষতি। তবে আমাদের ক্যাম্প এখনো বন্ধ হয়নি, এখনো চলছে। ক্যাম্প বন্ধ হলে সবাই নিজের সংস্থায় ফিরে যাবে।’