জী ব বি জ্ঞা ন ১ ম প ত্র

অধ্যায়-১ পরিচ্ছেদ-৬
শিক্ষার্থীরা, আজ রয়েছে জীববিজ্ঞান ১ম পত্রের ১ নম্বর অধ্যায়ের ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর।
প্রশ্ন:
ক. জনুক্রম কাকে বলে?
খ. Cycas-কে কেন জীবন্ত জীবাশ্ব বলা হয়?
গ. চিত্র-P থ্যালাসের প্রস্থচ্ছেদের বর্ণনা দাও।
ঘ. চিত্র-P এবং Q-এর মধ্যে কোনটি উন্নত? তুলনামূলক আলোচনা করে মতামত দাও।
উত্তর: ক. কোনো জীবের জীবনচক্রে গ্যামেটোফাইটিক দশা ও স্পোরোফাইটিক দশার পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে জনুক্রম বলে।
উত্তর: খ. বর্তমানকালের কোনো জীবিত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অতীতকালের কোনো জীবাশ্ম উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিললে তাকে জীবন্ত জীবাশ্ম বলে।
Cycas উদ্ভিদ cycadates বর্গের অন্তর্গত। প্রাথমিক মেসোজোয়িক যুগে cycadetes বর্গের অনেক উদ্ভিদ পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত ছিল। এদের অনেকই এখন বিলুপ্ত। এদের পাওয়া যায় জীবাশ্ব হিসেবে। এই বর্গের cycas-সহ নয়টি গনের প্রায় ১০০টি প্রজাতি এখনো পৃথিবীর বুকে টিকে আছে। এদের অনেক বৈশিষ্ট্য সেই আদিকালের বিলুপ্ত জীবাশ্বে সাইকাডস-এর বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ এবং আদি প্রকৃতির। এ জন্যই cycas-সহ বর্তমানকালের সব সাইকাডসকে জীবন্ত জীবাশ্ম বলা হয়।
উত্তর: গ. চিত্র-P হলো riccia থ্যালাস। প্রস্থচ্ছেদে riccia থ্যালাস দুটি পৃথক অঞ্চলে বিভক্ত। যথা: (i) ফটোসিনথেটিক বা আত্তীকরণ অঞ্চল এবং (ii) সঞ্চয়ী অঞ্চল।
(i) ফটোসিনথেটিক বা আত্তীকরণ অঞ্চল: থ্যালাসের পৃষ্ঠদেশে ক্লোরোপ্লাস্টযুক্ত খাড়া কোষের সারি নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত। ক্লোরোপ্লাস্টযুক্ত এ সারিগুলোকে আত্তীকরণ সূত্র বলে। এসব আত্তীকরণ সূত্রের মধ্যবর্তী সরু ও লম্বা নালির ন্যায় বায়ুপূর্ণ স্থানকে বায়ু প্রকোষ্ঠ বলে। প্রতিটি বায়ু প্রকোষ্ঠ বায়ুরন্ধ্রের মাধ্যমে বাইরের সঙ্গে উন্মুক্ত থাকে। আত্তীকরণ সূত্রের বাইরের কোষগুলো কিছুটা বড় ও ক্লোরোপ্লাস্টবিহীন থাকে। বর্ণহীন এ কোষগুলো থ্যালাসের উপরিভাগে একটি অসম্পূর্ণ ঊর্ধ্বত্বক গঠন করে।
(ii) সঞ্চয়ী অঞ্চল: থ্যালাসের নিম্নাংশ অর্থাৎ ফটোসিনথেটিক অঞ্চলের নিচে এ অঞ্চল অবস্থিত। এ অঞ্চলটি বর্ণহীন প্যারেনকাইমা কোষে গঠিত এবং সাধারণত আন্তকোষীয় ফাঁক-বিবর্জিত। এ সকল কোষে প্রচুর শ্বেতসার কণা থাকে। নিম্নত্বক সুগঠিত। এ থেকে এককোষী রাইজয়েড ও বহুকোষী স্কেল নির্গত হয়।
উত্তর: ঘ. চিত্র-P হলো riccia থ্যালাস এবং Q হলো marchantia থ্যালাস। riccia ও marchantia থ্যালাস পর্যবেক্ষণ করলে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ করা যায়:
(i) Riccia থ্যালাস ছোট ও সরু কিন্তু marchantia থ্যালাস অপেক্ষাকৃত বড় ও চওড়া। (ii) Riccia থ্যালাসে আত্তীকরণ অঞ্চলে বায়ু রন্ধ্রগুলো সাধারণ পক্ষান্তরে marchantia থ্যালাসে বায়ুরন্ধ্রগুলো বিশেষ গঠনসম্পন্ন।
(iii) Riccia থ্যালাসে আত্তীকরণ সূত্র শাখাবিহীন আর marchantia থ্যালাসে আত্তীকরণ সূত্র শাখাযুক্ত এবং বায়ু প্রকোষ্ঠের মেঝে থেকে খাড়াভাবে সৃষ্টি হয়। (iv) Riccia-এর স্পোরোফাইট ক্যাপসুলে সীমাবদ্ধ। পক্ষান্তরে marchantia-এর স্পোরোফাইট ক্যাপসুল, ছোট সিটা ও পদ দ্বারা গঠিত। (v) Riccia-এর স্পোরোফাইট থ্যালাস টিস্যুর মধ্যে অবস্থান করে। কিন্তু marchantia-এর স্পোরোফাইট থ্যালাসের টিস্যু হতে বের হয়ে ঝুলতে থাকে।
উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে riccia-এর তুলনায় marchantia-এর বৈশিষ্ট্যগুলো জটিল। সুতরাং জটিলতার দিক দিয়ে বিবেচনা করলে Q (marchantia) চিত্রটি P (riccia) অপেক্ষা উন্নত।

প্রভাষক, রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা